সাপ্তাহিক ধারাবাহিক উপন্যাসে প্রদীপ গুপ্ত (পর্ব – ৩২)

স্ট্যাটাস হইতে সাবধান

— বলি কোথায় গেলো তোমার কেষ্ট ঠাকুরটি? তোমার পিরিতের নাগর? তোমাকে আমার থেকেও বেশী কথায় আদর করনেওয়ালা? কেটে পড়েছে তো? এই হয়। অথচ দেখো আমার সুইটি ডার্লিং কী সুন্দর আমার সাথে সেঁটে রয়েছে? তোমার কথা বলতেই কেমন ছুটে এসেছে তোমাকে দেখবে বলে?
— অ মা, তুমি কি দেখে এই মেয়েমানুষটাকে বিয়ে করলে গো সোনাদা! কটামার্কা চোখ, বোঁচা নাক, নাটা, যেন একটা জয়ঢাক, একে কেউ বিয়ে করে?

ফুলটুসি এতক্ষণে প্রাথমিক জড়তা ভেঙে বেদীর ওপর নড়েচড়ে বসলো, কটমট করে একটা লুক দিলো হিড়িম্বার দিকে।
— রাগ কোরোনা ভাই, ভয় নেই আমি তোমার গ্যাটের থেকে আমি তোমার এই বৈধুর্যমণিকে ছিনিয়ে নেবো না। তোমাদের সাজানো সংসার মোটেই ভাঙবো না গো সই।
— সই? এই শোনো – তোমার সইটা কে? আমি? আমি কোন দুঃখে তোমার সই হবো? ওরকম হিড়িম্বা সুন্দরীর সই হতে যাবোই বা কেন? আয়নায় নিজের চেহারা দেখেছো কখনও?
— এই শোনো আমার সামনে তুমি কিন্তু আমার গার্লফ্রেন্ডকে মুখ সামলে কথা বলবে। লজ্জা করেনা, ঘরের খেয়ে এখানে এসে ধিঙ্গিপনা করতে? গলা জড়িয়ে ধরে সোনাবৌদিভাই শুনতে খুউউব ভালো লাগে তাইনা? বদ চরিত্রের মেয়েমানুষ কোথাকার। এই শোনো, এখান থেকে চলোতো দেখি, এখুনি কালিঘাট গিয়ে কপালে সিঁদুর পড়িয়ে দিই, তারপর দেখি তুমি হিড়িম্বা নাকি ওই মেয়েছেলেটা পুতানা। আর শোনো, এখন থেকে আমার ঘরের দরজা তোমার জন্য চিরকালের মতো বন্ধ থাকবে।

ঘটনাটা এতো দ্রুত গতিতে ঘটে গেলো যে ফুলটুসি বোকার মতো ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো। তারপর হঠাৎ ভ্যাঁ করে কেঁদে উঠলো।
— কি হয়েছে গো সোনাবৌদিভাই? কান্নার কি হয়েছে? তোমার এই দেবর ঠাকুর বেঁচে থাকতে তোমার কোনোরকম অনিষ্ট হতে দেবে না। দেখি কী করে খোরপোষ না দিয়ে ওই হতচ্ছাড়া হাতি কীকরে তোমায় ঘরছাড়া করে। আমি এখুনি যাচ্ছি আমাদের ওই সুদন্যদার কাছে ওরকম দুঁদে উকিলের সামনে কতো জজ পর্যন্ত ভিড়মি খেয়ে উলটে গেছে তার ইয়ত্তা নেই।
কথাটা বলেই মানুষটা বেড়িয়ে এলো গাছের পেছন থেকে।

ক্রমশ

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।