কবিতায় স্বর্ণযুগে পিনাকী বসু (গুচ্ছ কবিতা)

১| সৈনিকের ঋণ

আমার দেহটা যেখানে পড়ে,
সেখানে, অসংখ্য মিশাইলের দাগ।
দেউলিয়া বুলেটগুলো, ইচ্ছেমাটিতে কবর খুৃঁড়েছে।

পাতা ঝরানোর তাড়া নেই বসন্তের,
আমি তাই এখনও হারিনি।

ভারী বুটের শব্দে ছন্দ হারিয়েছে দেহপট।
আকাশটাও এখন মৃত্যুর উৎস।
যুদ্ধবিমানগুলো, সহবাসের বারুদ বিছিয়েছে।
মাটির নীচের অজ্ঞাতবাস,
একমুঠো ত্রাণ আর সূর্য চাইছে একান্তে।
কফিনের পাশের, প্রার্থনা-জপ,
আর ঝোলানো ধাতু-পাত্রে সুগন্ধি,
কান্নায় ভিজে একাকার।

আমার পথ চলা এখানেই শেষ।
এই দু-পায়ে,ওদের ঔদ্ধত্য মেপেছি অনেক,
তাই এই শহীদ জন্ম পেয়েছি।
এবার মৃত্যুর হৃদয়ে ঘর বাঁধব আমি।

শুধু, দুই মায়ের কাছেই ঋণ রয়ে গেল।।

 

২| সহ্যগুণ

আমার বর্ণও মাটির মতন,
পলি-জমা।
দুঃখ এবং অ-চিহ্ন ছাড়া,
কোন চুমু ছোঁয়নি আমার কপাল-ঠোঁট।
নেই-শব্দের নৈঃশব্দ্য, ভাঙিনি আমি নিজেও।

অথচ এই না-আমিরও একটা আমি ছিল।
একপেশে জন্মের পাশে পাশেই,
রঙিন অন্ধকার ছিল।
সবুজ পাতারা বাদামি হত চুপিসারেই।

বেয়াদব হাওয়াটা ভেবেছিল,
বসন্ত বুঝি বৃষ্টির ঋতু।
আসলে,শীতকে হারিয়ে জিতে গেছি আমি।

এখন প্রতিটা পাইকারি শব্দে,
আমার জলধোয়া ভাগ্যরেখাগুলো,
ছাই মেখে থেমে যায়-
আমি, না-পাওয়ার প্রেমে পড়ি বারবার।।

৩| করণীয়

সাদা-কালো পেরিয়ে,
যেটুকু অসমান ওপর নীচ,
সেটুকুই শুধু অনিয়মিত অন্ধকার।
বাকিটুকু সমুদ্রের অহংকার।
টুকরো প্রেমের মত সেখানেই ঝাঁপ দাও।
আকাশ হারিয়ে যেখানে,
ঘুমিয়ে থাকে ভিজে মাটি,
ডানাহীন সুখে সেখানেই বসো।
“ভালোবাসি” বলার দিনে ,
একমুঠো শুকনো রোদ কুড়িয়ে,
ফুসফুসে আগুন দাও।
শিশুর নির্জনতায় শব্দ খোঁজো।
তোমার অক্ষরই তোমার সুখ হোক।
কিছু আদর নয় চুরিই যাবে।।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।