গদ্যের পোডিয়ামে পিয়াংকী – ধারাবাহিক – (নবম পর্ব)

ওরফে তারাখসা এবং তুমি বালক

আষাঢ় এখন। অথচ তোমাকে দেবার মতো কিছু নেই। ঘ্যানঘ্যানে রাত আর টুপটাপ পতনের মধ্যে জোরালো শব্দ পাই। সেই শব্দে কে যেন ঘুরে ঘুরে ফেরি করে বৃষ্টি ফোঁটা। মূল্য দাওনি বলে ভুগছ আজ, জোঁক খেয়ে নিচ্ছে, চামড়ার ভিতর থেকে পুষ্টিরস। অথচ তুমি নির্বিকার!

চারদিকে দুর্ঘটনা দেখো, কীভাবে মরে যাচ্ছে জ্যান্ত বিমান কীভাবে ইন্দ্রের আগুনে পুড়ে যাচ্ছে বাজারদোকান। শুধুই কি মানুষ? এই যে এত পোকামাকড় মাটির মধ্যেই মিশে গেল,আঘাত সহ্য করে মাটি ছেড়ে উড়তে পারল না কিংবা এত পাখি এত গাছ! মৃত্যু কি রহস্য লেখে? সম্যক ধারণা নেই তোমার আমার, তাও তো দু’জন বসে কথা বলি, লিখে রাখি যতটুকু সম্ভব। আষাঢ় গর্ভবতী মেয়ের মতো তুমিই বলেছ, খিদে পায় বারবার তাই। খিদে থেকে তুলে আনি বিরহের মুদ্রা। রেখে গেছ যেসব পোষা বেড়াল তারা আজও রাত জেগে বসে থাকে। শুঁয়োপোকা খায়। প্রজাপতি হয়ে বেরিয়ে আসে ভোররাতে। দিনের কথা দিন জানে, বরাত জানে আয়াত। অস্ত চলে যাচ্ছে, ছুঁতে চাইছি কিন্তু পারছি না কিছুতেই। সেইসব মৃত প্রাণ যেন আমাদেরই দেশ। এই থিরথির বালি, গালিব হয়ে যাওয়া ব্যর্থ অন্ধ আর পাপ পাপ পাপ! দোকানী ডাকলে ঘুরে দাঁড়াত যারা তারাই এখন ফেরি করে সম্পর্ক।

আষাঢ় এখন৷ ভরা ভরা ফসল মাঠ। পাতার গায়ে জল। মানুষের গায়েও। কে কখন ঝরে যাবে কেউ জানে না। বালক, তুমি ছৌ হও, মুখোশ খুলে নাচো তাধিন তাধিন। আমার পেখমে পৃথিবীর ভার রেখেছি। প্রদাহ ভুলতে জ্বালিয়ে রেখেছি সাদা মোম। তুমি দাগ মুছতে মুছতে যে কড়িকথা গেঁথেছ, সেখানে রেখে এসেছি এক কলস জল।

জল খাও। রাখো অনীহা। রাখো তোমার মানত। স্থির হও, প্রকৃতি নির্বাসিত করেছে তোমায়। সাহস রাখো। সমর্পণ আনো। এই পদাবলী তোমারই,এই পৃথিবী তোমার তুমিই বৃষ্টিপাত তুমিই কোজাগর…

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *