প্রবাসী ছন্দে নাসিমা রুবি (বাংলাদেশ)

পল্লীবালার জীবন স্মৃতি

পাকা আমের ঘ্রাণে ম ম করছিলো বাড়িটা।

হঠাত এসেছিলেন মা,
যাবার সময় বলে গেছেন
আবার আসবেন সপ্তাহখানেক পর।
চালের উপর ঝোলা আমগুলো
চোখে চোখে রেখেছিলো পল্লীবধু,
যেমন সুন্দর রং তেমন স্বাদ খেতেও।

ভেবে রেখেছিলো –
মা এলে ভাইটির জন্য ক’টি আম দেবে।

কিশোর ভাইটির বড্ড প্রিয় ফল আম
রোজ ভোরে উঠে আম কুড়োতো লাজুক বউটি,
ছয়টি আম জমিয়েছে সোনাভাইটির জন্য,
যে দিন সাতটি আম জমবে
সেদিন চাচাশ্বশুরের সামনেই পড়েছিলো আমটি
লাজ শরমের মাথা খেয়ে কুড়িয়ে নিয়েছিলো সেটিও।

মা এসেছিলেন –
মার যাবার সময় আম সাতটি
একটি কাগজের ঠোঙায় ভরে মায়ের হাতেও দিয়েছিলো,
বলেছিলো – আমগুলো খোকনকে দিয়েন মা।”

মা যাচ্ছিলেন
অমনি পিছু ডাক দিলেন শাশুড়ি
“হাতের পুটলিটা কীসের গো বেয়াইন?”
মা বেচারি হেসে বললেন –
“খোকনের জন্য ক’টা আম দিয়েছে খুকিটা।”

মুখ ঝামটা মেরে বলে ওঠেন শাশুড়ি
“আপনার মেয়ের -ই বা ক্যামন আক্কেল
গাছ ঝেড়ে ক’টা আম এসেছে,
তাও বাইরের লোকেদের দিলে নিজেরা খাবো কী?”

মলিন মুখে মা আমগুলো দিয়েই দিলেন শাশুড়িকে,
বললেন – “সে ছোটো মানুষ, বুঝেনি বোন অতো।”
আমের পুটলিটা চলে গেলো শাশুড়ির হাতে।

কী বিষাদময় স্মৃতির ক্ষত!
অবিরাম রক্ত ঝরে পল্লীবালার হৃদয় থেকে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।