গুচ্ছ কবিতায় নবনীতা চট্টোপাধ্যায়

কক্ষান্তর
আজ চলে যাওয়ার দিন… |
যাচ্ছি… বলেও দরজা ধরে দাঁড়িয়ে পড়া|
ব্যালকনিতে রোদ্দুর মেখে প্রতীক্ষার চেয়ার,
প্রভাতী রবীন্দ্রসংগীত প্রতিবেশীর রেডিওতে|
মেরুণ রঙের শূন্যতা নিয়ে প্রেসক্রিপশন,ওষুধ, রিপোর্ট|
বহুদিনের সাথী বিষণ্ণ ছাতাটি লুকিয়েছে মুখ|
আজ উদ্দাম হাওয়ার সাথে বারবার
ছুটে আসছে ঝরাপাতার অতীত|
জীবন.. . শুধু একফোঁটা জীবন…
আঠালো চটচটে রসমাখা টান… |
আজ চলে যাওয়ার দিন|
কাতর দৃষ্টির সামনে ফেলে আসা শিকড়…
ঘন জামবন… পুকুরের জল… |
হারানো হলুদ অক্ষরেরা
শহরের লাল ডাকবাক্সের গায়ে
আটকানো শেষ চিঠির নোটিস|
পালক ঝেড়ে ফেলে হলুদ চিঠিরা
পেরিয়ে যাচ্ছে ছায়াপথের পর ছায়াপথ
অন্য এক পাখি হয়ে অন্য এক দেশে|
এইমাত্র তুমুল বৃষ্টি হলো…
প্রাবৃট মাখা প্রলম্বিত প্রতীক্ষার
অশরীরি অক্ষরেরা ঘুরছে দিগভ্রান্ত|
বিলুপ্ত প্রজাতির ছাড়পত্র নিয়ে
বৃষ্টির শহরে লাল ডাকবাক্স|
জলছবি
এভাবেই সরে সরে যায় স্থিরবিন্দু থেকে
অনিমিখ ভাবনার ঢেউয়েরা সব|
শান্ত জলের বুকে হাওয়া এসে
এঁকে যায় সম্পাদ্য উপপাদ্যের রেখা|
হাওয়ারাও জেনে গেছে এইসব কারিকুরী
যেন এক দৃশ্যকল্প বাহির নিসর্গের|
ভিতরে প্রোথিত বল্লমের সাথে
জেগে আছে নিহত শব্দের কঙ্কাল, গভীর কালশিটে|
অতলে হিমজল থেকে যাক স্থির__
উপরে ভেসে যাক নৌকা…
কলমির ডগায় বসে থাকা পাখি… পদ্মবন…|
ডুবজলে মেঘরস মেখে নিশ্চুপ
শুয়ে থাক প্রোথিত বল্লম… |