• Uncategorized
  • 0

সাপ্তাহিক ধারাসম্পাতে মৃদুল শ্রীমানী (পর্ব – ১৭)

আমার কথা

৬৫|
গান্ধীজিকে মহাত্মা বলে সম্মান দিয়েছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সাধারণ মানুষের উপর শাসকের অত্যাচার প্রতিরোধ করতে দক্ষিণ আফ্রিকায় তরুণ ব্যারিস্টার মোহনদাস কর্মচন্দ গান্ধী এক নতুন ধরণের আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। সে আন্দোলনের বার্তা সারা পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের বোধের দুয়ারে পৌঁছেছিল।ভারতেও নানা প্রকার আন্দোলন চলছিল। 1885 সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কংগ্রেস। স্কট সিভিলিয়ান এলান অক্টাভিয়ান হিউম ছিলেন তার উদগাতা। আর উমেশচন্দ্র বনার্জি ছিলেন প্রথম সভাপতি। আবেদন নিবেদনের সুরে হলেও সারা ভারতে নির্মম শোষণ শাসনের বিরুদ্ধে কিছু কথা তুলে ধরত কংগ্রেস। এমন সভায় যাঁরা নেতৃত্ব দিতেন, তাঁদের শ্রেণীগত একটা অবস্থান ছিল। সংগত কারণেই ভারতীয় মানুষের মধ্যে আর্থিক সমৃদ্ধির প্রশ্নে স্তর বিন্যাস ছিল। আর যিনি যে স্তরে ছিলেন, তিনি কংগ্রেসের গতিমুখ সেদিকে টানতে চাইতেন। রবীন্দ্রনাথ জাতীয় কংগ্রেসের সভায় গিয়েছিলেন যৌবনেই। সেখানে ভারতীয়দের সমৃদ্ধিশালী অংশের স্বাধীনতা চাইবার রকম সকম তাঁকে মনোবেদনা দিয়েছিল।কংগ্রেসের মধ্যে দুটি স্পষ্ট ধারা ছিল। নরম পন্থী ও চরম পন্থী। দুই দলে যথেষ্ট দড়ি টানাটানি ছিল। স্বাধীনতার মাত্রা নিয়ে মৌলিক মতভেদ ছিল। মাঝেমধ্যে কংগ্রেসি আন্দোলনে ভাঁটার টান পড়ত। তখন হতাশ মধ্যবিত্ত মানুষের ঘর থেকে উগ্রপন্থী মতবাদ মাথা চাড়া দিত।উগ্রপন্থীরা স্বপ্ন দেখতেন বোমা মেরে, রাতের অন্ধকারে ব্যাংক ও ডাকঘর লুঠ করে আর গুলি চালিয়ে ব্যক্তি হত্যার পথে ভারত স্বাধীন হবে। এঁদের নানা গ্রূপ ছিল। গ্রূপ গুলিতে অন্তঃকলহ ছিল। বিশ্বাসঘাতকতাও ছিল। এলোমেলো অসংযত ভাবে আবেগের বহিঃ প্রকাশ ছিল।কিন্তু নরম পন্থী, চরম পন্থী বা উগ্রপন্থী, কেউই কিন্তু একেবারে নিচের তলার মানুষকে ভারতের স্বাধীনতার কাজে সামিল করতে পারেন নি। তাঁদের সেই প্রতিভাটাই ছিল না।গান্ধী ছিলেন সেই মানুষ, যিনি স্বাধীনতাকে অতি সাধারণের কাছে বোধগম্য করে তুললেন। তাঁর জীবনধারায় অতি সাধারণ ভারতীয় আস্থা বোধ করতো।সত্যাগ্রহ, অহিংস অসহযোগকে অস্ত্র বানিয়ে গান্ধী যে আন্দোলন গড়লেন, সেটা সারা ভারতে জন জাগরণ ঘটিয়ে দিল।লোক খেপানো নয়, লোককে জাগানোর এই গান্ধী চর্চিত পথ রবীন্দ্রনাথের নজর কেড়েছিল। নিজের নানা রচনায় মানুষকে সাথে নিয়ে অহিংস পথে আন্দোলন গড়ে তোলায় রবীন্দ্রনাথ আগ্রহ দেখিয়েছেন। ব্যক্তি হত্যা, ব্যক্তি সন্ত্রাস নয়, মানুষের সচেতন সংঘ শক্তিকে প্রতিরোধের ঢাল বানাতে চেয়েছেন রবীন্দ্রনাথ। সত্যাগ্রহ আর অহিংস অসহযোগের রাস্তা কবির শ্রদ্ধা কুড়িয়ে নিয়েছে। রক্তকরবীর নন্দিনী, ফাল্গুনী নাটকের ধনঞ্জয় বৈরাগী, অচলায়তন নাটকের পঞ্চক, মুক্তধারার অভিজিৎ, সকলেই যেন নির্ভীক ভাবে প্রতিবাদ করেছে কিন্তু সন্ত্রাসের পথকে প্রশ্রয় দেয় নি। রাশিয়ার চিঠিতে রাশিয়ান বিপ্লবীদের বিস্তর গুণ লক্ষ্য করেও কিছু মৌলিক ত্রুটি উল্লেখ করেছেন কবি। সে জিনিস পরে সত্য প্রতিভাত হয়েছে। মহাত্মারও কিছু কিছু ভুলকে স্পষ্ট ভাবে সমালোচনা করলেও, অন্তরে অন্তরে কবি ছিলেন মহাত্মার মত ও পথের একান্ত অনুরাগী।

৬৬|
ধর্ম নিরপেক্ষতা আর অসাম্প্রদায়িকতা , দুটো শব্দ দেখতেও আলাদা, অর্থ ও ব্যঞ্জনাতেও আলাদা। আমাদের ভারতীয় সংবিধানে সেক্যুলার শব্দটা ব্যবহার করা হয়েছে। সেক্যুলার কথাটার ভেতরকার একটা মানে আছে।
পদার্থবিদ্যা পড়তে গিয়ে দেখেছি “ধর্ম” শব্দটা সেখানে ব্যবহার হয়। “জলের ধর্ম” , “আলোর ধর্ম” ইত্যাদি। পদার্থবিদ জানেন বিশুদ্ধ জল বর্ণহীন , গন্ধহীন আর স্বাদহীন। সমুদ্রতলের প্রমাণ বায়ুচাপে বিশুদ্ধ জল সেলসিয়াস স্কেলের ১০০ ডিগ্রিতে ফোটে, শূন্য ডিগ্রিতে বরফ হয়। একে বলে “জলের ধর্ম “।
তেমনি করেই “মানুষের ধর্ম” বলে একটা জিনিস আমাদের বড় মানুষেরা বলে গিয়েছেন। সে হল যুক্তির পথ, বিজ্ঞানের পথ , হৃদয়বত্তার পথ।

৬৭|
রবীন্দ্রনাথের “তাসের দেশ’ নাটকটি মনে পড়ছে। তাসের দেশ তিনি উৎসর্গ করেছিলেন জাতীয় বীর সুভাষচন্দ্র বসুকে। এই নাটকের বিষয়বস্তুতে ইচ্ছাশক্তির উদ্বোধনের কথা রয়েছে। স্বাধীনতা অর্জন করতে গেলে মর্যাদাবোধ অর্জন করা চাই আগে। নিজের ইচ্ছাকে বাস্তবায়িত করার স্পর্ধা, ব্যক্তিত্বের বিকাশ সেই মর্যাদাবোধ এর অঙ্গ। বয়সে সুভাষ রবীন্দ্রনাথের থেকে প্রায় পঁয়ত্রিশ বছরের ছোটো। তাই সুভাষ বয়সে কবির পুত্রতুল্য বললে অসংগত হবে না। সুভাষের সব কাজ যে তিনি সর্বদা সমর্থন করেছেন, তা কিন্তু নয়। তবে সুভাষের প্রবল চারিত্রিক দৃঢ়তা, আর প্রগাঢ় অগ্নিসম্ভব দেশপ্রেমকে কবি মনে মনে অকুণ্ঠ সমর্থন করতেন। কালান্তরে তিনি সুভাষকে দেশনায়ক বলে সম্ভাষণ করেছেন। যে কবি “নায়কিয়ানা” বরদাস্ত করতেন না, তিনি যাঁকে দেশনায়ক আখ্যা দেন, তখন বুঝে নিতে হয়, কতদূর সদর্থক ও গঠনমূলক প্রভাব সুভাষ অন্তরে বহন করতেন।
রবীন্দ্রনাথ পুত্রতুল্য এই দেশনেতাকে তাঁর স্বপ্নের শান্তিনিকেতনে চেয়েছিলেন। কিন্তু সুভাষের পক্ষে সেখানে আটকে যাওয়া সম্ভব ছিল না। নিজের ভিতরে আসমুদ্র হিমাচল কাঁপানো একটা শক্তি ও স্পর্ধার অস্তিত্ব সুভাষ জানতেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁর সেই আত্ম সচেতনতাকে সম্মান জানিয়েই তাঁকে তাসের দেশ উৎসর্গ করেন। প্রাণের ধাক্কায় দেশের যৌবনকে জাগিয়ে দিয়েছিলেন সুভাষ। সুভাষকে তাসের দেশ উৎসর্গ তারই স্বীকৃতি।
ইচ্ছাশক্তির আর এক অসামান্য উদাহরণ স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেই কবে ছোট বেলায় দাদা বৌদিদের উৎসাহে প্রশ্রয়ে বালক রবি লিখেছিলেন “গ্রহগণ জীবের বাসভূমি” । তার পর? এই স্কুল, সেই স্কুল, স্কুলই মনে ধরে না। মাস্টাররাও তথৈবচ । রবির পড়াই হল না। বিলেতে গিয়েও ব্যারিস্টারি পাশ হল না।
এহেন রবি বয়সকালে লিখলেন “বিশ্ব পরিচয়”। হ্যাঁ , রবি তখন প্রবীণ। বিশ্বের অন্যতম সেরা ইনটেলেকচুয়াল। তাঁর সময়ের একেবারে আধুনিক কণা পদার্থবিদ্যা, জ্যোতিঃপদার্থবিদ্যা, অ্যাস্ট্রোফিজিক্স, কসমোলজি নিয়ে লিখেছেন। ফাঁকি দেন নি। আর বইটি উৎসর্গ করেছেন সত্যেন বোস কে। যাঁহারা “সে” বইটি পড়বেন, তাঁরাও টের পাবেন বিজ্ঞানচর্চা নিয়ে রবীন্দ্রনাথ কত সিরিয়াস ছিলেন। আর পুনশ্চ , সেঁজুতি এ রকম শেষবেলার কাব্যগ্রন্থেও কবির বিজ্ঞানভিক্ষু মেজাজটা বেশ ধরা পড়েছে।
শুধু পদার্থবিদ্যার নানা শাখায় কেন, আধুনিক ভাষাতত্ত্বেও তিনি আগ্রহী ছিলেন। “শব্দতত্ত্ব” বইতে তা দেখতে পাই। ইতিহাস আর অর্থনীতির আধুনিক পাঠ আর গ্রহিষ্ণু মন তাঁর ছিল। প্রতাপাদিত্য সম্পর্কে ধারণা আর “ঘরে বাইরে” তে বিদেশি কাপড় পোড়ানো ও কালান্তরে চরকা নিয়ে মতামতে তা বেশ বোঝা যায়।
নিজেকে এত ভাবে বিকশিত করে তোলা, ইচ্ছাশক্তি ছাড়া একে আর কি বলবো?
ইচ্ছাশক্তির সূত্রে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়কে মনে পড়ে। তিনি সংস্কৃত ব্যাকরণ অলঙ্কার ইত্যাদিতে পণ্ডিত। পুঁথি পোড়ো না হয়ে জীবনের বৃহৎ ক্ষেত্রে পদচারণা করলেন। পুরোনো ব্যবস্থার খোলনলচে বদলে বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থায় এনে দিলেন আধুনিকতা। পাঠক্রমের নব বিন্যাসে, ছুটির দিনের নতুন আঙ্গিকে, নতুন নতুন পাঠ্য বই লিখে তিনি নবযুগের সূচনা করলেন।
কিন্তু তাঁর ইচ্ছাশক্তির প্রকৃষ্ট প্রয়োগ “সীতার বনবাস” আর “শকুন্তলা” রচনায় । সংস্কৃতজ্ঞ পণ্ডিত কি সহজ সাবলীল আর স্বচ্ছন্দ হয়ে উঠেছেন বাংলায়। আর “ভ্রান্তিবিলাস”। মায়ের বিয়েতে পাওয়া ওই বই বিদ্যাসাগরের রচনা। ক্লাস থ্রিতে আমি কি শেক্সপীয়রের নাম শুনেছি? মনে হয় না। শেক্সপীয়রের “কমেডি অফ এররস” অনুবাদ করে নাম দিলেন ভ্রান্তিবিলাস। চিরঞ্জীব আর কিঙ্কর আমার কতো ছোটবেলা থেকে পরিচিত মানুষ । বিদ্যাসাগর নিজের অসামান্য ইচ্ছাশক্তিতে ওদের জন্ম দিয়েছেন।
ইচ্ছাশক্তি নিয়ে কথা বলতে ইচ্ছে করে। হেলেন কেলার যেন ওই ইচ্ছাশক্তির মূর্তিমতী নিদর্শন । উনিশ মাস বয়স থেকে সে মেয়ে যকৃৎ এর সংক্রমণে রীতিমত কাবু হয়ে চোখে দেখে না, কানে শোনে না, আর কথা বলতে পারে না। অত অল্প বয়স বলেই ভাষা বোধটুকু পর্যন্ত তৈরি হয় নি। এমন কি মানুষের সাথে কি করে ব্যবহার করতে হয়, তাও তো ঊনিশ মাস বয়সে গড়ে ওঠার কথা নয়।
তবু সে মেয়ে অত কঠিন ও দুস্তর প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও মানুষ হল, লেখা পড়া শিখল, শুধু সেটুকুই নয়, তার মত অসহায় অভাগাদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা করল।
ইচ্ছাশক্তি ছাড়া এ সব হয়?
সেই সূত্রেই মাইকেল সাহিত্য মনের মধ্যে উঁকি মেরে যাচ্ছে । লব্ধ প্রতিষ্ঠ আইন ব্যবসায়ী, সম্পন্ন পিতার বখে যাওয়া , বয়ে যাওয়া ছেলে হয়ে যাবার সমস্ত উপাদান হাজির থাকা সত্ত্বেও কপোতাক্ষ তীরের সাগরদাঁড়ির জাহ্নবী ও রাজনারায়ণ দত্তের চার ছেলের একটি মধু স্রেফ ইচ্ছাশক্তির বলে দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন হয়ে উঠলেন । প্রবল ইচ্ছাশক্তিতে প্রায় ভুলে যাওয়া , ভুলে যেতে চাওয়া বাংলা ভাষা তিনি নতুন করে শিখলেন, কৃত্তিবাসী রামায়ণ ধরে ধরে অধ্যয়ন করলেন। বাংলা রামায়ণ এর নব নির্মাণ করলেন। ভেতরে থাকল শৈশবে বাড়ির মহিলাদের কাছে শোনা রামায়ণ কথা আর শিরায় শিরায় থাকল পাশ্চাত্য পুরাণকথার নিবিড় পাঠ । মেজাজে রইল বদলে দেবার ইচ্ছাশক্তি ।
১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি জন্মেছিলেন আমাদের মধুকবি। মাইকেল মধুসূদন দত্ত। আমাদের বাংলা সাহিত্যে আধুনিক যুগে একমাত্র মহাকবি। ১৮৬১ তে প্রকাশিত তাঁর মেঘনাদ বধ কাব্য। ওই মেঘনাদ বধ কবে থেকে পড়ছি । এখনো বিস্ময় আর আকুলতা কমে নি। ওজস্বিতায়, উপমার অসামান্য ব্যবহারে, রূপকে , অলঙ্কারে তো বটেই; কবিতার আসল যে প্রাণসত্ত্বা, সেই মন্ময় গভীরতায় মেঘনাদ বধ আজো আমাকে নিবিড় তৃপ্তি দেয়। আমি মনে মনে বেশ কিছু পংক্তি অক্লেশে আউড়ে যেতে পারি।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত নিরালা নিরুপদ্রব সুখী জীবনের হাতছানি এড়িয়ে নিজের হাতে গড়লেন নিজের কবিজীবন। ইংরেজি ভাষায় লিখবেন, ইংরেজিতে ভাববেন, ইংরেজিতে স্বপ্ন দেখবেন, এসব উলটে পাল্টে গেল। খুঁজে পেলেন নিজের কবিভাষা। লিখলেন মেঘনাদবধ কাব্য। রামায়ণ নিয়ে সাধারণের বিশ্বাসকে অন্য রকম করে দেখলেন। রামকে দেখালেন পরদেশে আক্রমণকারীর বেশে। রাবণ ও ইন্দ্রজিৎকে স্বদেশপ্রেমী বীর করে। এই যে নতুন করে দেখানোর চেষ্টা ওঁকে বাংলা ভাষার মহাকবি করে দিল।

৬৮|
১৮৯৮ সালে ঠিক ২৮ জানুয়ারি তারিখে ভারতের মাটিতে পা রাখেন মিস মার্গারেট নোবেল। স্বামী বিবেকানন্দের সংস্পর্শে যিনি ভগিনী নিবেদিতা হয়ে ওঠেন।মার্গারেট ছিলেন আয়ারল্যান্ডের মেয়ে। পেশায় ছিলেন শিক্ষক। অত্যন্ত দৃঢ় চরিত্রের প্রখর ব্যক্তিত্বের অধিকারিণী। অথচ হৃদয় ছিল দয়ায় ভরপুর। কলকাতার বাগবাজারের একটি গলিতে একটি সামান্য বাড়িতে তাঁর থাকার ব্যবস্থা হয়। নিচু ছাদের ছোটো ঘরে ভ্যাপসা গরমে শীতের দেশের মেয়ের প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে পড়ত। তবু তিনি প্রাণ পণে মেয়েদের শিক্ষাদানের কাজ চালিয়ে যেতেন।বিবেকানন্দের কাছে ভারতাত্মার আহ্বান শুনেছিলেন। তিনি দায়িত্ব নিলেন মেয়েদের শিক্ষিত ও মর্যাদাবোধ সম্পন্ন করে গড়ে তুলতে।নিজের দেশকে ভালবাসা, নিজের ভাষাকে সম্মান করা, নিজের দেশের শিল্প কলার প্ৰতি আগ্রহী হযে ওঠা ইত্যাদি অতি প্রয়োজনীয় কাজে তিনি বাঙালিকে উৎসাহ দিতেন। পরাধীনতার যুগে বিদ্বেষপূৰ্ণ সরকারি নীতিতে দিশাহারা মানুষের মধ্যে ব্যক্তিত্বের সঞ্চার করা ছিল তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। দেশের সেরা বিজ্ঞানী, সেরা কবি, সেরা শিল্পীকে তিনি সাথীত্ব দিয়ে, উৎসাহ দিয়ে প্রাণিত রাখতেন। জগদীশচন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ও অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন তাঁর প্রীতি ধন্য। দূর সাগরপারের দেশ থেকে ভারতে এসে তিনি ভারতের ভাষা সংস্কৃতি ঐতিহ্য ও মর্মবস্তু আয়ত্ব করতে পেরেছিলেন। আর নিজের চরিত্রের জোরে ভারতীয়দের স্বাজাত্যবোধে দীক্ষিত করতে পেরেছিলেন। প্রবল ইচ্ছাশক্তি ছাড়া এটা সম্ভব ছিল না।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।