|| পিয়ের কুরি || জন্মদিনে স্মরণলেখায় মৃদুল শ্রীমানী

পিয়ের কুরি ( ১৮৫৯ -১৯০৬): জন্মদিনে স্মরণলেখ

অষ্টাদশ শতাব্দী থেকেই মানুষ জানত কোনো কোনো খনিজের কেলাস বা ক্রিস্টালকে উত্তপ্ত করলে তা এক রকম তড়িৎগ্রস্ত বা তড়িতাহিত হয়ে ওঠে। ওকে বলে পাইরো ইলেকট্রিসিটি। আর আখের চিনি, টোপাজ বা পোখরাজ মণি, কোয়ার্ৎজ, টোরমালিন এবং রোচেল সল্টের মতো কিছু কিছু জিনিসের উপর বাইরে থেকে চাপ প্রয়োগ করলে তা বৈদ্যুতিক পোলারাইজেশন হয়ে বিদ্যুৎ তৈরি হয়। এই চাপ দেওয়ার গ্রীক প্রতিশব্দ পিয়েজিয়েঁ থেকে এর নাম হল পিজো ইলেকট্রিসিটি।
আশ্চর্যের বিষয় এই পিজো ইলেকট্রিসিটির বিষয়টা দেখা গেল এমনকি তেজস্ক্রিয় মৌলিক পদার্থ পোলোনিয়ম ও রেডিয়মের সনাক্তকরণেও।
কুরি ইলেকট্রোমিটার, এই সরঞ্জাম দিয়ে রেডিও অ্যাকটিভিটি বা তেজস্ক্রিয়তা পরিমাপ করা গেল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় জলের তলায় আল্ট্রাসোনিক সাবমেরিন ডিটেক্টর তৈরি হল। সেটা ১৯১৭ সাল। এ জিনিস তৈরিতে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করেছিলেন পল ল‍্যাঙ্গেভিন।
দুটি ইস্পাতের পাতের মধ‍্যে আঠা দিয়ে পাতলা কোয়ার্ৎজ ক্রিস্টাল সেঁটে দিলে তা আল্ট্রাসোনিক তরঙ্গের ধাক্কায় উচ্চ কম্পাঙ্ক বিশিষ্ট শব্দতরঙ্গ নির্গত করতে পারে। আল্ট্রাসোনিক তরঙ্গের অভিঘাতে সমুদ্র মধ‍্যস্থ কোনো বস্তু থেকে কতক্ষণে শব্দতরঙ্গ প্রতিফলিত হচ্ছে, তা হিসাব করে সাবমেরিন কোথায়, কত গভীরে আছে, তা জানা যেত। এছাড়া ক্রিস্টাল সিমেট্রি নামে একটি তত্ত্ব রয়েছে। জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী ফ্রানৎস আর্নস্ট নিউম‍্যান (১৭৯৮ – ১৮৯৫) এ বিষয়ে আলোকপাত করেছিলেন। এথেকে বাস্তব জাগতিক ঘটনায় সিমেট্রি বা সৌষম‍্য ও অ্যাসিমেট্রি বা সৌষম‍্যের অভাবের ভূমিকা ও তাৎপর্য কী, তা নিয়ে সিমেট্রি প্রিন্সিপল গড়ে উঠল। চৌম্বকত্ব নিয়েও ভাবতে হয়।
লোহা, নিকেল, কোবাল্টের মতো কিছু কিছু জিনিস আছে যা চুম্বকের প্রভাবে চৌম্বকত্ব লাভ করে ও চুম্বকের দ্বারা চৌম্বকধর্ম লাভ করে। এদের ফেরোম‍্যাগনেটিক পদার্থ হিসাবে চেনানো হয়। মূল চুম্বক সরিয়ে নিলেও এদের মধ্যে চৌম্বক ধর্ম থেকে যায়। কিন্তু নির্দিষ্ট তাপমাত্রার বেশি উত্তপ্ত করলে এই পদার্থগুলি ওই প্রাপ্ত চৌম্বকগুণ হারিয়ে ফেলে। পদার্থ ভেদে ভিন্ন ভিন্ন ওই নির্দিষ্ট তাপমাত্রাকে কুরি টেমপারেচার বা কুরি তাপমাত্রা বলে।
এইসব বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলির মধ‍্যে একটি সাধারণ ঐক্য রয়েছে। এগুলির সব কয়টির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে পিয়ের কুরি-র নাম। আজ, ১৪ মে তাঁর জন্মদিন। ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে ১৪ মে তারিখে এই নোবেলজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী জন্মেছিলেন।
এই ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী কেলাসতত্ত্ব বা ক্রিস্টালোগ্রাফি, চৌম্বকধর্ম, এবং পিজো ইলেকট্রিসিটি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গিয়েছেন। কুরি তাপমাত্রা নামে তাপমাত্রায় ফেরোম‍্যাগনেটিক পদার্থ তাদের চৌম্বকধর্ম হারায়, তাও পিয়ের কুরির নাম বহন করছে। তাঁর পিতা ইউজিন কুরি ছিলেন চিকিৎসক। মা সোফি ক্লেয়ার। বাবা ইউজিনের কাছেই পিয়ের পড়াশুনা শুরু করেন। চৌদ্দ বৎসর বয়সেই তিনি গণিতে তীব্র আকর্ষণ বোধ করেন, এবং জ‍্যামিতি ও পরিমিতিতে যথেষ্ট পরিমাণে দক্ষতা অর্জন করেন। এই দক্ষতাই তাঁকে ক্রিস্টালোগ্রাফি নিয়ে কাজ শিখতে উদ্বুদ্ধ করে। ষোলো বৎসর বয়সে ম‍্যাট্রিকুলেট হয়ে আঠারো বৎসর বয়সে তিনি সায়েন্সে লাইসেন্স পেয়েছিলেন। ফ্রান্সের তদানীন্তন শিক্ষাক্রমে এই ডিগ্রিটি আমেরিকার মাস্টার্স ডিগ্রির সমতুল। পরিবারের অর্থনৈতিক অভাব প্রকটিত হ‌ওয়ায় তিনি তখন ডক্টরেট করতে পারেন নি। কাজের খোঁজে প‍্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ে ল‍্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট‍্যান্ট হিসাবে কাজে নিযুক্ত হন। ল‍্যাবরেটরিতে কাজ করতে করতেই তিনি তাপীয় তরঙ্গের তরঙ্গ দৈর্ঘ্য মাপতে হাত পাকান। এতে ক্রিস্টালোগ্রাফি চর্চায় তাঁর সুবিধা হয়।
চার বছরের বড় দাদা জ‍্যাকস তাঁকে এই চর্চায় সহযোগিতা করেছিলেন।
দুজনে মিলে এই চর্চা করতে করতে ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে পিজো ইলেকট্রিসিটি আবিষ্কার করেন এবং এখান থেকেই তিনি প্রিন্সিপলস অফ সিমেট্রি তত্ত্ব উদ্ভাবন করেছেন। ব‍্যাখ‍্যা করেছিলেন কি করে অল্প সৌষম‍্যযুক্ত একটি ক্রিস্টাল বাইরের যান্ত্রিক চাপের ফলে বৈদ্যুতিক ভাবে পোলারাইজড বা মেরুকরণ হয়ে যায়। ১৮৮২ সালে তেইশ বছর বয়সে প‍্যারিসের ফিজিক্স ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিস্ট্রি স্কুলে তিনি সুপারভাইজার পদে নিযুক্ত হন।
ফিরে আসি পিজো ইলেকট্রিসিটির কথায়। দাদা জ‍্যাকসের সঙ্গে মিলে পিয়ের কুরির সঙ্গে মিলে এটি আবিষ্কার করেছেন। আজকের দিনে এই পিজো ইলেকট্রিসিটি শব্দতরঙ্গের উৎস অনুসন্ধান, ইঙ্কজেট প্রিন্টিং, উচ্চ ভোল্টেজের বিদ্যুৎ এবং অতি উচ্চস্তরের অণুবীক্ষণ যন্ত্র তৈরি করতে কাজে লাগে।এমনকি সিগারেট লাইটারের মতো দৈনন্দিন ব‍্যবহারের জিনিসেও পিজো ইলেকট্রিসিটির ভূমিকা রয়েছে। কুরি ভাইয়েরা ১৮৮০ তে পিজো ইলেকট্রিসিটি আবিষ্কার করলেও ওর যে একটি উলটো নিয়ম আছে, তা আন্দাজ করে উঠতে পারেননি। পিজো ইলোকট্রিসিটির কনভার্স এফেক্টটি গাণিতিক ভাবে ধরে ফেললেন বিজ্ঞানী গ‍্যাব্রিয়েল লিপম‍্যান ( ১৮৪৫ – ১৯২১)। লিপম‍্যান এই বিষয়টা বললেন ১৮৮১তে। কুরিরা সেই শুনে আরো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিশ্চিত ভাবে জানালেন, সত‍্যি সত‍্যিই বাস্তব জগতে ওই উলটো প্রক্রিয়া আছে।
উলটো প্রক্রিয়াটি এভাবে বোঝা যেতে পারে: ধরা যাক কোনো ক্রিস্টাল, মনে করা যাক, তা হল লেড জারকোনেট টাইটানেট এর ক্রিস্টাল, তাকে চাপ দিয়ে তার আদত চেহারার হাজার করা একভাগ তফাত ঘটিয়ে দিলে পরিমাপযোগ‍্য কিছুটা বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়। তাহলে ঠিক ওই ক্রিস্টালকে তড়িৎ ক্ষেত্রের মধ‍্যে রাখলে তা ওর স্থির গঠনের হাজার করা একভাগ পরিবর্তন ঘটিয়ে দেবে। এই উলটো প্রক্রিয়াতে আল্ট্রাসোনিক তরঙ্গ তৈরি করা যায়। সমুদ্রের নিচে ডুবোজাহাজ বা সাবমেরিন খুঁজতে এই কায়দা কাজে লাগালেন পল ল‍্যাঙ্গেভিন ( ১৮৭২ – ১৯৪৬)। ইনি ছিলেন পিয়ের কুরির ছাত্র।
পিয়ের কুরির জীবনে বিশ্ববন্দিত বিজ্ঞানী মেরি
স্ক্লোডাউসকা এলেন ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে। মেরি ছিলেন পোল‍্যাণ্ডের গুণী মেয়ে। ১৮৯১ সালে তেইশ চব্বিশ বছরের মেয়ে মেরি জীবনের ঝড় ঝাপটা মোকাবিলা করতে করতে, গরিবানার সঙ্গে দাঁতে নখে লড়তে লড়তে ফ্রান্সে এসে পৌঁছে ছিলেন। উচ্চশিক্ষার দরজাটা পোল‍্যাণ্ডে মেয়েদের জন‍্য যথেষ্ট পরিমাণে দরাজ ছিল না। উচ্চশিক্ষার সুযোগ নিতেই মাতৃভূমি পোল‍্যাণ্ড ছেড়ে ফ্রান্সে এলেন মেরি স্ক্লোডাউসকা।
ফ্রান্সে এসে ১৮৯৩ সালে মেরি স্ক্লোডাউসকা ফিজিক্সে একটি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ওই পুঁজি নিয়ে বিজ্ঞানী গ‍্যাব্রিয়েল লিপম‍্যানের ল‍্যাবরেটরিতে কাজ নেন। ওর‌ই সঙ্গে সঙ্গে মেরি প‍্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর দ্বিতীয় ডিগ্রিটি অর্জন করেন।
গরিব মেয়ে মেরি নিজের গবেষণার জন‍্য একটু জায়গা খুঁজছেন, এই সময় পিয়ের কুরি প‍্যারিসে ইএসপিসিআই নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইনস্ট্রাকটর হিসাবে কাজ করতেন। একজন পোলিশ পদার্থবিজ্ঞানী ও কূটনীতিক জোসেফ উ‌ইরুশ কোয়ালস্কির মধ‍্যস্থতায় পিয়ের কুরি ও মেরি স্ক্লোডাউসকার মধ‍্যে যোগসূত্র তৈরি হয়। কোয়ালস্কির মনে হয়েছিল, মেরির গবেষণার করার জন‍্য একটু জায়গা পিয়ের কুরি যোগাড় করে দিতে পারবেন। মেরি সে সময় বিভিন্ন ধরনের ইস্পাতের চৌম্বকধর্ম নিয়ে অনুসন্ধান ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন। তাঁর কাজের পদ্ধতি, নিষ্ঠা, তীব্র একমুখী ইচ্ছা, এবং দারিদ্র্যকে যুঝে যাবার ক্ষমতা পিয়েরকে তাঁর প্রতি আকৃষ্ট করে। তিনি মেরিকে মনে মনে ভালবেসে ফেলেন। তার পর বিয়ের প্রস্তাব দেন। পোল‍্যাণ্ডের মেয়ে মেরির মন পড়েছিল নিজের মাতৃভূমিতে। তিনি প্রথমটা পিয়েরের প্রস্তাবে রাজি হননি। কিন্তু পিয়ের মেরির ব‍্যক্তিত্বে, ও বুদ্ধির প্রাখর্যে এতটাই অভিভূত হয়ে পড়েছিলেন, যে তিনি মেরিকে শুনিয়ে দিলেন, তুমি যদি পোল‍্যাণ্ডে ফিরে যাও, তাহলে, আমিও এখানকার সবকিছু ছেড়েছুড়ে তোমার পিছু পিছু পোল‍্যাণ্ডে যাব। সেখানে বিজ্ঞানের কাজ যদি নাও করতে পাই, তো ফরাসি ভাষা শিখিয়েই দুটি অন্নের সংস্থান করব। মেরি তাঁকে সেভাবে কিছু প্রতিশ্রুতি না দিয়েই পোল‍্যাণ্ডে নিজের দেশে ফিরে গেলেন। মেরি স্ক্লোডাউসকার মনে হয়েছিল, বৈজ্ঞানিক ডিগ্রির সার্টিফিকেটের দৌলতে ক্রাকাও বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি পড়ানোর সুযোগ পাবেন। কিন্তু পোল‍্যাণ্ডের অধ‍্যাপক মহল ছিলেন চরম নারীবিদ্বেষী। কোনো মহিলা অধ‍্যাপকের পদে আসীন হবেন, এটা তাঁরা ভাবতে পারতেন না। বঞ্চিত, প্রত‍্যাখ‍্যাত মেরি নিজের দেশে যখন পায়ের তলায় কোনো মাটি খুঁজে পাচ্ছেন না, তখন পিয়ের পত্রযোগে জানালেন, চৌম্বকত্ব নিয়ে তিনি যে গবেষণা করেছিলেন, তার সূত্রে তাঁর ডক্টরেট ডিগ্রি জুটেছে। আর তার‌ই দৌলতে তিনি ওই ইএসপিসিআই স্কুলে অধ‍্যাপকের পদে প্রমোশন পেয়েছেন। সেটা ১৮৯৫ এর মার্চ মাস। এরপর মেরি আর অপেক্ষা করেন নি। চারহাত এক হল ছাব্বিশ জুলাই ১৮৯৫ খ্রিস্টাব্দে। যদিও তাঁরা কোনো প্রথাগত ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান মেনে বিয়ে করেন নি।
১৮৯৫ সাল বিজ্ঞানের ইতিহাসে একটা চমকপ্রদ বৎসর। এই বৎসরেই জার্মান ইঞ্জিনিয়ার উ‌ইলহেল্ম র‍্যন্টজেন আবিষ্কার করলেন এক্স রে। আর এক্স রে আবিষ্কার চিকিৎসা বিজ্ঞান সহ অন‍্যান‍্য বহু গুরুত্বপূর্ণ শিল্পক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কৌশল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেল। র‍্যন্টজেনের কাজে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন হেনরি বেকারেল। তিনি ভেবেছিলেন ইউরেনিয়ামের লবণ থেকে যে বিকিরণ বেরিয়ে আসে, তা বুঝি একস রে-র মতো কোনো একটা অজানা রশ্মি। কিন্তু বেশ টের পাওয়া গেল বায়ুশূন‍্য কাচনলে বিদ‍্যুতের তীব্রতা থেকে যেভাবে এক্স রে উৎপন্ন হয়, ইউরেনিয়ামের বিকিরণ আদপেই সেই ধাঁচের নয়। ১৮৯৫ তে এক্স রে আবিষ্কার এবং ১৮৯৬ তে ইউরেনিয়ামের বিকিরণ; এদুটি আবিষ্কার কুরি দম্পতিকে ভীষণ ভাবে প্রভাবিত করে। তাঁরা ইউরেনিয়াম, বিশেষ করে এর আকরিক পিচব্লেণ্ড নিয়ে আরো ব‍্যাপক গবেষণা করতে থাকেন। বলা দরকার, এই দম্পতির গবেষণায় মেরি কুরির অবদান‌ই ছিল সমধিক।
১৮৯৭ সালে জন্মালেন তাঁদের বড় মেয়ে আইরিন কুরি। কিন্তু মেরি কুরি নিজের গবেষণায় গভীরভাবে মগ্ন ছিলেন। ১৮৯৮তে তিনি দেখালেন, থোরিয়ম নামে মৌলিক পদার্থটিও তেজস্ক্রিয়। স্ত্রীর কাজ দেখে পিয়ের কুরি এতটাই আপ্লুত হয়েছিলেন, যে ক্রিস্টাল নিয়ে তিনি যে কাজ করছিলেন, তা ছেড়েছুড়ে মেরি কুরির সঙ্গে কাজ করতে লাগলেন।
১৮৯৮ এর জুলাইতে তাঁরা পোলোনিয়ম আবিষ্কার করলেন। এই ধাতুর নামের মধ‍্যে মাতৃভূমির প্রতি মেরি কুরি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
ছাব্বিশ ডিসেম্বর, ১৮৯৮ সালে আবিষ্কার হল রেডিয়ম। ১৯০৩ সালে জুন মাসে গ‍্যাব্রিয়েল লিপম‍্যানের অধীনে প‍্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেরি কুরি ডক্টরেট উপাধি পেলেন‌। ওই বছরেই জুটল নোবেল পুরস্কার। পিয়ের কুরিকে সুইডিশ গণিতবিদ ম‍্যাগনাস গস্টা মিততাগ লেফলার বুঝিয়েছিলেন, তেজস্ক্রিয়তার গবেষণায় মেরির অবদান অনেকটাই বেশি। তাই নোবেল পুরস্কারে মেরিকে যাতে বঞ্চিত না হতে হয়। তার জন‍্য পিয়ের যেন নোবেল কমিটির কাছে প্রকৃত তথ্য উত্থাপন করেন। পিয়ের সে কথায় মান‍্যতা দিয়েছিলেন। ১৯০৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেলেন তিনজন। হেনরি বেকারেল আর কুরি দম্পতি।
১৯০৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ছয় তারিখে দ্বিতীয় কন‍্যা ইভ কুরি জন্মালেন। আর তার দেড় বছর গেল না ১৯ এপ্রিল, ১৯০৬ সালে প‍্যারিসের রাস্তায় একটি পথদুর্ঘটনায় ঘোড়ার গাড়ি চাপা পড়ে পিয়ের কুরি মারা পড়লেন।
আজ গভীরভাবে তাঁর স্মৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।