সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে মৌসুমী নন্দী (যাপন চিত্র পর্ব – ৯)

যাপন চিত্র

মহিলা বনাম পুরুষ

আজ আমরা ২০২১ দাঁড়িয়ে ৷ তবুও এইসময়ে বিশ্বায়নের যুগেও আমাদের মানসিকতার বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি সমাজে মেয়েদের নিয়ে , আর মেয়েটি যদি একা থাকে সমাজে আর তার উপরে ডিভোর্সী হয় তার সাথে যদি তার প্রতিবাদ করার মানসিকতা থাকে তাহলে সহজেই সে সমাজ থেকে চরিত্রের সার্টিফিকেট না চাইতেও পেয়ে যায় ৷ একই কাজ ছেলেটি করলে কোনো দোষের নয় কিন্তু মেয়েটা করলে তো তার কোনো বাঁচার অধিকারই নেই যত দোষ নন্দ ঘোষের মত সেই দোষী ৷ জানি সমাজের চোখে মেয়েরাই সব কিছুতেই সব সময় দোষী হয় ৷ কিন্তু যে ছেলেরা বাড়ীতে সুন্দরী বউ বাচ্চা থাকতেও অন্যের ইমোশন নিয়ে খেলে তাদের কি হবে ?? প্রেম নিবেদনের সময় বউ বাচ্চার কথা মনে থাকে না এবং তাদের এক কথা হয় বউ এর সঙ্গে মানসিক যোগাযোগে নেই বাচ্চাটার জন্য একসাথে থাকি ৷ মেয়ে ডিভোর্সী হয় তাহলে তো আরেক কাটি উপরে দোষ ৷ ভোলা ভালা ছেলেটাকে ফাঁসিয়েছে ৷ মেয়েটির কোনো মানসিক দুর্বলতা হতে পারে না এবং হলেও পরে তার পরিবারের লোকজন ও কিছু পরিচিত তখন উঠেপড়ে লেগে যায় অন্যদের বোঝাতে বাড়ীর ছেলেটি সাধুপুরুষ আর মেয়েটি ডাইনী ৷ আজ আপনাদের কাছেই জানতে যে ছেলেটি যে মেয়েটির সাথে এসব করেছে সেই মেয়েটি যখন পুরোপুরি মানসিক অসুস্হ ডিপ্রেশনের চরম শিখায় পৌঁছে যায় তখন কি তার নাম টা প্রকাশ্যে আনা উচিৎ না নীরবেই সুশান্ত সিং হওয়া উচিৎ এই প্রশ্নটার জবার আজ ২০২১সেও পাওয়া যাবে না , অন্যায় যেনেও আমি আমরা কেউ মেয়েটির পাশে দাঁড়াবো না বা মন্তব্যও করবো না বরং নিজের বিবেক জাগ্রত হলেও বিবেককে বোঝাবো মেয়েটি কেনো বিবাহিত জেনেও জড়ালো, মেয়েটা ডিভোর্সী হয়েও এত বড় আস্পর্ধা কি করে দেখালো ৷৷ উল্টে মেয়েটিকে বোঝাবো কত বদনাম হতে পারে তার ,আর তাকে এটাও বুঝাবো ছেলেটা বললো তুমি রাজী হয়ে গেলে তোমার কি চরিত্র বলে কিছুই নেই ৷ ছেলেটা যদি বলে পরিবার জেনে গেলো তাই তো সম্পর্কটা নষ্ট করলাম নইলে তো রাখতামই ৷ ব্যস সাতখুন মাফ ৷ অনেকেই বলবেন আগে ভুল করছিলো এখন তো ভুল বুঝেছে তাই সরে এসেছে ৷ তুমি মেয়ে মানুষ ক্ষমা করে দাও ওর তো একটা পরিবার আছে ৷ আমরা একবারো ভেবে দেখি না অপরদিকে মেয়েটির মানসিক পরিস্হিতি ৷ আমরা বিচার করি কে দোষী !কিন্তু বিচার নিরপেক্ষ হয় না ৷ আমাদের মধ্যে অনেকেই ভাবতে পারেন মেয়েটিরও দোষ আছে মানছি ডিভোর্সী হয়ে কেন সে রিলেশন জড়ালো তাই না ! তাদের মনের খিদা থাকা খুবই গুরুতর দোষ ! মেয়েটাকে যারা চেনেন তাদের কাছে হয়তো সে প্রিয়জন তারাতারাও হয়তো বেশীরভাগ লোকই মেয়েটিকেই নির্লজ্জ বেহায়া বলবেন হয়তো আমিও বলবো ৷ যার সাথে ঘটনাটি ঘটে যে মেয়েটি বিশ্বাস ভরসা করে ঠকে গিয়ে মানসিক শারীরিক ভাবে খুন হয় তাকেই আমরা কাঠগোড়ায় দাঁড় করাই ৷ আর আমরা মেয়েরাও হয়তো মেয়েটার পাশে দাঁড়াই না ৷ ছেলেটি যখন ইনিয়ে বিনিয়ে বউ আর বাড়ীর অন্যলোকেদের নিজেকে বাঁচাতে গল্প ফাঁদেন আর ওপরদিকে মেয়েটি উপযুক্ত প্রমাণ দেখালেও তারা সব বুঝতে পারলেও জেগে ঘুমিয়ে থাকতে ভালোবাসেন ৷ যদি বাড়ীর ছেলেটি বা ভাইটি বা বরটির বিরুদ্ধে মা , বোন ,দিদি,বউ মেয়েটিকে সার্পোট করেন তাহলে হয়ত ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা ঘটাতে গেলে ছেলেটি দশবার ভাববে ৷ ৷কিন্তু আমার এই লেখাটা দেবার উদ্দেশ্য ,প্রতিনিয়ত জীবনে আমরা এইরকমভাবে মেয়েদের মানসিকভাবে খুন হতে দেখি , মেয়েটা তো জিন্দালাস হয়েই যায় কিন্তু দুজন পুরুষও যদি এই রকম ইমোশন নিয়ে খেলতে গেলে ভাবে তবেই সার্থক হবে এই এই যাপনচিত্রের ৷ আর ডিভোর্সী মেয়ে মানেই সহজ লভ্য এটা মনে তাদের সাথে খেলা টা করা যায় যারা এমন ভাবেন তাদের মানসিকতা পাল্টানোর সময় এসেছে ৷ শরীরের ক্ষত ভরে যায় কিন্তু মনের ক্ষত কি ভরানো যায় ৷ ইমোশন নিয়ে খেলে বার বার হয়তো পার পেয়ে গিয়ে সাহস বেড়ে গেছে ৷ তাই আমার মনে হয় এরকম লোকেদের সামনে নিয়ে আসার ৷ তবে অকারণে কারোর নামে বদনাম দেবার উদ্দেশ্যে নয় আমার নয় যদি প্রতিটি কথার যথেষ্ট প্রমাণ থাকে তবে তাকে জনসমক্ষে উন্মোচিত করা উচিৎ কারণ ৷ মানসিকভাবে কাউকে খুন করাকেও চরম অপরাধ ৷ ডিভোর্সী মানেই তার সব দোষ তার আত্মসম্মান থাকতে পারে না মন থাকতে পারে না এটা কতটা যুক্তিসঙ্গত জানি না ! জানি যারা উন্নত মানসিকতার মানুষ তারা সবকিছু এমনিতেই বুঝে যাবেন তাদের জন্য বা যারা চেনেন তাদের জন্য নয় যারা নিয়ে অকারণে কুৎসা রটান বা তাদের অবগতির ৷ ভালোবাসা দোষের নয় কিন্তু ভালোবেসে অভিনয় করা চরম দোষের ৷ আর মেয়ে মানেই দোষী আর ছেলে মানেই ধোঁওয়া তুলসীপাতা নয় ৷ মেয়েটি তো সব হারিয়েছেই মান সম্মান মন সবই কিন্তু দুজন এই থেকে শিক্ষা নেয় সেটাই হবে পাওনা ৷ আজ এই পর্যন্ত সকলের জন্য রইল নতুন বছরের অনেক অনেক শুভেচ্ছা শুভকামনা ভালোবাসা ৷ চলুন বদলাই মানসিকতা ৷
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।