সেদিনের নির্মল আকাশ,
রঙিন হয়েছিল আবীরের পবিত্র স্পর্শে,
যেন এক স্নিদ্ধ অনুভূতি,
বৈচিত্র্যের প্রাঙ্গণে এক নবীন আভাস!
কিন্তু রাধার মন আজ বড়ই ব্যাকুল!
পূর্বরাগের সূচনা বুঝি,
কৃষ্ণ প্রেমে পূর্ণ যা আজ।
বৃন্দাবনে লাল, নীল ,সবুজের সমারোহ,
গোপিনীরাও রয়েছে সাথে,
রং স্পর্শ করে শ্রী রাধিকার অঙ্গকে,
কৃষ্ণের বাঁশি বৃদ্ধি করে মাধুরী,
রাধা পেছনে , কৃষ্ণ আগে ,
রঙে রাঙিয়ে তুলতে রাজি নয় সে,
তবুও অঙ্গীকারবদ্ধ কৃষ্ণ প্রেমিকা!
যমুনার তটে মিলিত দুই তনু,
নীল সলিল বহন করে যার সাক্ষ্য সর্বক্ষণ!
পবিত্র রঙে রাঙিয়ে তুললো রাধা,
স্বার্থক কৃষ্ণ অবতার,
উল্লসিত বৃন্দাবনের পুণ্যভূমি!
বহু রজনী অতিবাহিত হয়েছে,
বহু দিবস নিস্তব্ধে কেটে গেছে,
সেই রঙিন দিনের স্মৃতি আজও বয়ে বেড়াচ্ছি-
আমরা সকলে!
অনুপ্রাণিত হই সর্বক্ষণ,
রং, আবিরের ছোঁয়ায়ে,
দিনটি হয়ে ওঠে মনোরম,
অন্যদিকে রাধাগোবিন্দের মন্দিরে,
বাজ্যে ঘন্টা,
উচ্চারিত হচ্ছে মন্ত্র,
জ্বলছে ধূপ-
প্রদীপের শিখায়ে উদ্ভাসিত গর্ভগৃহ!
রং যে লেগেছে মর্মে মর্মে,
বিস্মৃত হই কিরূপে তা!
পূর্ণিমার পূর্ণ প্রকাশে,
বসুন্ধরার মুছে গেছে সকল যন্ত্রণা,
সকল গ্লানি,
সকল উপেক্ষা!!
– কুণাল রায়।
২| যুধিষ্ঠির
হে পৃথা নন্দন,
তব এই ধরণীতে আবির্ভূত,
হয়েছিলে তুমি,
শত আলোকবর্ষ পূর্বে,
অধর্মের গ্লানি মুছে দিয়ে,
ধরিত্রীর বুকে স্থাপন করতে,
ধর্মের এক অনন্য গাঁথা।
অধর্মের সেই শাশ্বত গ্লানি,
গ্রাস করলো তোমার চিত্তকে,
এক উন্মাদনা,
এক বিরল অভিপ্রায়,
হস্তিনাপুরের রাজ সভায়,
শকুনির অনবদ্য চক্রান্তের শিকার হলে তুমি,
আপন জায়া কে লাঞ্ছিত করলে তুমি,
খন্ডিত হল তোমার অস্তিত্ব,
খন্ডিত হল ধর্মের চিহ্ন,
খন্ডিত হল তোমার আত্মপ্রত্যয়।
হে পৃথা নন্দন,
বিস্মৃত হয়েছ সেই চরম ক্ষণ!
কুরুক্ষেত্রের সেই পুণ্যভূমিতে,
আপন পরিচয়ের মর্যাদাকে,
পদদলিত করেছিলে তুমি।
শুধুমাত্র বিজয়ের অন্ধ কামনায়,
মিথ্যাচার করেছিলে তুমি।
তবুও কি তুমি ধর্মরাজ?
তবুও কি যুদ্ধে স্থির ছিলে তুমি?
তবুও কি তোমার অবতার কারণ সিদ্ধ,
করেছিলে তুমি?
ইতিহাসের প্রাঙ্গনে এক বিতর্ক তুমি!
মহাকাব্যের এক কলঙ্ক তুমি!
এক অনুপ্রাণহীন চরিত্র তুমি!
যুধিষ্ঠির তুমি,
পৃথানন্দন তুমি!