মার্গে অনন্য সম্মান কুণাল রায় (এডমিন পোস্ট)

অনন্য সৃষ্টি সাহিত্য পরিবার

পাক্ষিক প্রতিযোগিতা পর্ব – ১৮
বিষয় – বিজয়া
তারিখ – ৩০/১০/২০২০

বীজমন্ত্র

এই সৃষ্টির প্রতিটি অনুপরমাণুতে অবস্থান করছে এক শক্তি। এই শক্তির বীজমন্ত্রে এই মনুষ্যজাতি মন্ত্রিত। এবং এই মন্ত্রে যে সুপ্ত বাসনা আবৃত আছে, তা হল মানুষের অদম্য ইচ্ছা, কৌতুহল এবং আপন বিজয়াগাঁথা লিপিবদ্ধ করা। “বিজয়” বা “বিজয়া”, আমরা যে শব্দে স্বচ্ছন্দ বোধকরি না কেন, সাফল্য তার সাথে নিবিড় রূপে আবদ্ধ! এই দুই শব্দ পরস্পরের পরিপূরক। জীবনের মূল অর্থ বহন করে এই দুয়ের নিখুঁত মিশ্রণ!
এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বিজয়ার এক ভিন্ন তাৎপর্য বর্তমান। বিজয়ার শিরোপা কেবল মাত্র তিনিই পেতে সক্ষম বা যোগ্য যাঁর পার্থিব প্রাচুর্য এক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে, বৈভব বা বিত্ত বিজয়া হয়ে ওঠার একটি নির্ভেজাল শর্ত মাত্র! সমাজের বুকে যে অংশ অর্থবান নয় বা বৈভবের ছটায় উদ্ভাসিত নয়, তারাও কিন্তু বিজয় রথে আরোহন করে আপন গন্তব্যে পৌঁছাতে সংক্ষম হয়েছেন। যে নারী আজ পুরুষের অতৃপ্ত কামনার শিকার হল, রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে বিসর্জন দেওয়া হল, তাঁর আত্মসন্মানের বিজয় রথ অব্যাহত রাখতে পারে একমাত্র তাঁর জননী। অপরাধীদের সঠিক শাস্তির ব্যবস্থা কেবল তিনিই করতে পারেন। এবং এই সংগ্রাম কেবল তারই, যেখানে তাঁর আত্মিক শক্তি এবং অগ্নিগর্ভ নয়ন দুটি তাঁকে বীরাঙ্গনা রূপে পরিচিতি দেবে এই সমাজের বুকে। অন্যদিকে বৈবাহিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়েও যে রাজনন্দিনী তাঁর স্বামীর গৃহে তাঁর যোগ্য সন্মান থেকে বঞ্চিত হয়ে, ফিরে আসেন আপন পিতৃগৃহে এবং গড়ে তোলেন এক নজিরবিহীন সাফল্যের কাহিনী, তাঁর বিজয়া হয়ে ওঠা কোন কাকতালীয় বা অকস্মাৎ বা অসম্ভব কোন ঘটনা নয়। তাঁর চেতনা, সংস্কার এবং শিক্ষা ভূষিত করেছে এক পর্বতসম সাফল্যে!
নারী যাকে প্রতিনিয়ত বিদ্ধ করা হয় নানা শব্দে, ভঙ্গিমায় এবং আচরণে, প্রকৃত অর্থে তিনিই এই বিজয় পতাকার যোগ্য প্রার্থী। আমরা বারংবার কেন বিস্মৃত হই যে যে- কোনো সফল পুরুষের পশ্চাতে সবসময় এক নারীর অবদান বর্তমান, যা অনস্বীকার্য! কিন্তু পুরুষের জাত্যাভিমান এবং মিথ্যে অহংবোধ তাঁকে সবসময় সত্যের থেকে দূরে রাখে। এ এক সামাজিক প্রথার সাথে সাথে এক প্রাকৃতিক নিয়মও বটে। যুগ যুগ ধরে নারী আপন শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে। এক অক্ষয় গৌরব প্রদান করেছে এই ব্রহ্মান্ডকে। প্রতিক্ষণে প্রচার করেছে তাঁর অখণ্ড শক্তির মহিমা। নিরুপন করেছে আপন ললাটলিপি। তাই “বিজয়ার” রাজ মুকুট কেবল তাঁরই শিরে শোভা পায়। এই অনন্ত সৃষ্টি ত্রিবেণী নারী শক্তিরই প্রতিবিম্ব: পরাক্রম, বৈভব এবং বিদ্যা!!

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।