আঙুলগুলো আমার চোখের সামনে এক একসময় রেখা হয়ে ওঠে। মাটি থেকে ক্রমশ যেন তারা ওপরের দিকে উঠছে। আমি তাদের উৎস খুঁজি। ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটিয়ে ফেলি। কিন্তু কোথায় তাদের শুরু?
আঙুলগুলো আমি কতটুকু চিনি? তারা কি আমার স্বজন? দশ আঙুল দিয়ে যখন বুক চেপে ধরি তখন কেন সবসময় তারা আমাকে স্বস্তি দেয় না। তাহলে কি তারা আমার খুব কাছে থেকে আমাকে চিনে নিয়েছে? আমার দেহের প্রতিটি রক্তবিন্দুর বর্তমান কলুষতা কি তাদের স্পর্শ করেছে?
আঙুলগুলোকে মাঝে মাঝেই আমি চিনতে পারি না। আমার চোখের সামনেই তারা আস্তে আস্তে রেখা হয়ে যায়। সকাল, দুপুর তারা আমার কাছ থেকে রঙ চায়। আমি দিতে না পারলে তারা আঙুলে আঙুলে অচেনা হয়ে যায়। সাদা পাতা পেলেই তারা পাতাজুড়ে রেখায় রেখায় ভাগ হয়ে যায়। আমি অবাক হয়ে দেখি আমার দেহেরই কিছু অংশ আমাকে অস্বীকার করার তীব্র ইচ্ছায় কী ভীষণ গতিতে পাতায় পাতায় বদলে ফেলছে তাদের গতিপথ। বুঝতে পারি শাসন বদলে গেছে।
আমি রঙ চিনি। আমি আঙুলে আঙুল ধরি। বলি, এসো আমিও তোমার সাথে রেখা হয়ে ছুটবো। সে একবারের জন্যও পিছন ফিরে তাকায় না। অসংখ্য বিমূর্ত রেখায় সে তার আগামীর কথা বলে। রঙ রেখার থেকে অনেক দূরে থাকা আমি চারপাশ দেখে নিয়ে অতি সন্তর্পণে দীর্ঘশ্বাস ফেলি।