কবিতায় গীতশ্রী সিনহা

প্রকৃতির অলঙ্কার

গভীর অরণ্যে আচ্ছাদিত মিহিন ফুলে আটকে গেছে রুক্ষ হাওয়া আর ঘন কন্ঠস্বর…
যেন পরিত্যক্ত প্রাচীন বাঁশিখানি।
মাথার ওপরে আকাশের ঘুলঘুলি থেকে
নেমে আসে ধূসর আলো… খসখসে পাতায়
যেন থমকে গেলো অবসানটুকু।
ভারী গাছপালা তার গুমোট এখানে আসেনা, তবে
এক গোঁয়ার লালবর্ণের মেঘ মস্ত পথ জুড়ে।
আর, সেই রুদ্ধ পথের পাশে একদল পাতা
পতাকার মতো উড়ছে। দিনের খোলস ঝরছে কতো।
শুরু হলো সেই বিকেল শেষের চির পুরাতন খেলা।
এই খসে যাওয়া খোলসের সাথে
বেরিয়ে গেল
দু-তিন রকম পাখি-পতঙ্গের ডাক। মেঠো ইঁদুর
তার খলবল ত্রস্ত পায়ের শব্দে পার হলো গভীর মাঠ।
সামনের কুটির থেকে একদল মাটিমাখা ছেলেমেয়ে,
ঘাসফুলের রেণু, আর সর্বগ্রাসী সবুজ গন্ধে
জড়িয়ে যাচ্ছে হাওয়া… নড়ে ওঠে নরম শাখার শীর্ণ কতো শুঁড়…
পায়ে চলা পথটুকু ঠিকরে পড়ছে শাখাহীন মন্দিরের দিকে।
বাঁশবনের নীচে পথটা যেন উন্মনা খোলস।
লতার পথিক স্বভাবে নত হয় সরল প্রণয়…তন্তু জাল।
যাবার বেলায় তার চিকন হাতের কাছে স্নিগ্ধ ভাষাবীথি…
মাথার ওপরে ডাঁটো চাঁদ… নিশ্বাসে পলাশ ঝড়… নশ্বরতা!

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।