সাপ্তাহিক ধারাবাহিক কথা সাগরে গৌর হরি মান্না (ভ্রমণ কাহিনী পর্ব ৪)

জ্যোৎস্নায় মাখামাখি জামুয়ানি

পাখির ডাকে ঘুম যখন ভাঙলো,জামুয়ানি তখন রাতের কুয়াশার চাদর সরিয়ে আবার একটা নতুন দিনের প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত।ভোরের পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে ঝুলে রয়েছে অভিমানী মেঘ। আল্হলাদি অরণ্যের শরীর ছুঁয়ে নেমে আসছে রক্তিম আভা।আর গ্রামের আদিবাসী রমণী সারা বাড়ি গোবর জল দিয়ে লেপে দেওয়ালের গায়ে আলপনা দিতে ব্যস্ত।চারিদিকে পাখির কলতানে মুখরিত হয়ে উঠছে জামুয়ানির আকাশ বাতাস।দেরী না করে মুখ হাত-পা ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে পড়লাম গ্রাম পরিক্রমায়। পথের মাঝে আদিবাসী রমণীর হাড়ি মাথায় জল নিয়ে যেতে যেতে চকিত চাহনি আর বুনো ফুলের মতো খিলখিল হাসি আমার এই নির্মল হৃদয়ে একটা অন্য অনুভূতি এনে দিলো। হেঁটে চলেছি জামুয়ানির আঁকাবাঁকা কাঁকুড়ে পথ ধরে। থেকে থেকে সকালের এলোমেলো হাওয়া সিমলিপালের হৃদয় ছুঁয়ে চলে যাচ্ছে দূর থেকে বহু দূরে।
মাতাল করা মন নিয়ে ঘুরে ফেললাম বেশ কিছু পথ।অবশেষে কিছু প্রয়োজনীয় বাজার করার জন্য গাড়ি নিয়ে ছুটলাম জোশিপুরের বাজারের দিকে। সকালে বনপথ ধরে গাড়ি নিয়ে যেতে যেতে চোখে পড়লো বেশ কয়েকটা পাহাড়ি ময়না। শাল সেগুনের ডালে বসে ওদের শিষ ছাড়া আর ধরা শুনতে শুনতে প্রাণ জুড়িয়ে গেলো। অবশেষে মাছ মাংস ও কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে ফিরে এলাম জামুয়ানি গ্রামে। আজ সকালের জল খাবার খেয়ে আমাদের গন্তব্য অরণ্যের ভেতরে এক অপরূপ ঝর্নার কাছে।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।