কথা সাগরে মৎসাপুরুষ গোবিন্দ ব্যানার্জী (ধারাবাহিক ভ্রমণ কাহিনী) – চতুর্থ পর্ব

রূপকথার গাঁয়ে পাঁচদিনর
চড়াই পথটা থেকে আশ্রয়গৃহের উঠোন শুরু হয়ে গেছে। আর মূল পথ উঠে গেছে আরো উপরে। সেখানে এ গাঁওয়ের শেষ বাড়িটা চুপ ক’রে ব’সে আছে। তারও উপরে ঘন পাইন বনের সারি, সেই পাহাড়ের চূড়ায়। তাকিয়ে আছি, অনেকটা চড়াই ভেঙে উঠে এসেছি, তাই একটু বিশ্রাম নিতেও তো চাইছে পা জোড়া। পাশ দিয়ে উঠোনে গিয়ে দু’হাত বাতাসে ভাসিয়ে দিল সুন্দরী প্রিয়া। দূরে…যে দিকে তাকিয়ে ছিলাম… সেদিকে ইঙ্গিত ক’রে বলল… “উপ্পর মে লামেধুরা জানে কা রোড হ্যায়, আপ চাহে তো যানে সকতা। ইধার সে টুংলু দূরী নেহি।” আবার তাকালাম উপরে। পাইনের ফাঁকে ফাঁকে নীল আকাশের ছিটে লেগে আছে। আর টুংলুর
হাতছানি। প্রিয়া বলছে… “প্যাহলে তো আইয়ে হামারী প্যালেস পর। ইয়ে হ্যায় মেরী স্বপ্ন কা ঘর।” বিস্তৃত উঠোনে পা ছোঁয়ালাম আলতো ক’রে। যেন ধ্যানমগ্নতা ছিন্ন না হয়ে যায়।
ডান দিকের ঘরটার দেয়াল কাঠের লম্বা পাটাতন দিয়ে তৈরী। আর তাতে নানা রঙের নক্সা। এত যে সুন্দর ছোট্ট ঘরখানা… দৃষ্টিমুগ্ধতায় ভ’রে উঠছি। পিঠের ব্যাগপত্র নামিয়ে ফেলেছি, ঘরের দেয়ালে ঠেস দিয়ে রাখলাম। প্রিয়া সেই ছোট্ট ঘরটায়… একটা আরামদায়ক কাঠের ভারী চেয়ার অত্যন্ত সাবলীল ভাবে বয়ে নিয়ে এসে রাখলো উঠোনে। “প্যাহলে আরাম কিজিয়ে…” বলতে বলতে দ্বিতীয় চেয়ারটাও নিয়ে এলো। চেয়ারে বসতে ইচ্ছে করছে না। মনে হচ্ছে ধূলো ভরা উঠোনে একটু শুয়ে পড়ি। সমস্ত বাড়িটা মুড়ে আছে রূপের আলোয়ানে… তাকিয়ে দেখি দে খি… দ্রুত সরে যায় চোখের ঘন চঞ্চলতা। ওপাশে মূল বাড়িটা দোতলা। চের ঘর অসমাপ্ত, উপরটা রঙের বাহারে হাততালি দিয়ে কেবলি ডাকছে। তারও পিছনে সবুজ গাছের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে আমাদের মায়ামুগ্ধতাকে ছাপিয়ে।
রূপসী রঞ্জিতা ছোট ঘরের দরোজার মুখে ঠেস দিয়ে চেয়ে আছে আমাদের দিকে। বছর কুড়ির অসামান্য যুবতী বধু। নেপালী ধরনের মুখশ্রী… সে বলছে… “আপ কাঁহাসে আয়া? ইধারকা পাতা ক্যায়সে মিলা…?” প্রিয়া উত্তর দেয় ঘরের ভিতর থেকে…”ম্যায় লে কে আয়ে…সুখিয়াসে তো ধোত্রে যানে কা গাড়ি নেহি হ্যায়, তো ক্যা কঁরু… লে কে আয়ে…” রঞ্জিতা সারা শরীর দুলিয়ে হাসছে, আর বলছে…”আচ্ছা হি কিয়া।” উঠোনের সামনেটায় অনেক চেনা অচেনা ফুলগাছ ভ’রে আছে ফুলগুচ্ছে। সোমনাথ প্রান্ত বিকেলের আভা আলোর ভিতর ফুলেদের ছবি তুলছে এক মনে। ক্যামেলিয়া ফুটে আছে আর গাঢ় আবেশে যেন কাছে ডেকে নিচ্ছে বারবার। যেন নম্র শৈশব এসে উন্মুখ হয়ে আছে প্রতিটা পাপড়ির নিঃশব্দ রূপকথার ভিতরে। অপরূপ ফুলের রংবেরঙের ছটায় মাতিয়ে তুলছে আমাদের মুগ্ধ বিস্ময়বোধ। প্রিয়া ইতিমধ্যে চা তৈরী ক’রে ফেলেছে। বড় বড় রঙিন কাপ দু’টো থেকে ধোঁয়া উঠছে। বাতাসে নিবিড় হয়ে মিশে যাচ্ছে চা পানের তীব্র আকর্ষণ। চায়ের কাপে হাত ছোঁয়ালাম আর ঠিক এই সময়েই মনে হ’ল প্রবল একটা ঠান্ডা এসে ঝাঁপিয়ে পড়ল আমাদের শরীরে। জ্যাকেটের চেনটা টেনে দিলাম গলার কাছ বরাবর…
কাপের কানাচে ঠোঁট ছোঁয়াতেই আসলি গন্ধে যেন দার্জিলিং tea বুঝিয়ে দিল আমেজ কাকে বলে। জিবের স্বাদকোষগুলোকে ভিজিয়ে দিচ্ছে সুগন্ধ। নাকের নীচে টলটল করছে সোনালী গাঢ় রং, আর চোখের সামনে প্রিয়ার ভরপুর হাসিমুখ। বলছে… “হামারি আঙ্কল কো চায়ে কা বাগিচা হ্যায়। ম্যায় তো আঙ্কল কো ঘর পর হি গয়ি থি। তিন রোজ কি বাদ আজ হি আনে কা টাইম মে আপ লোগকে সাথ উধার ঘুম পর মিলি থি। ব্যস্…আ গয়ি ঘর, আপ লোগ ভি আ গয়ে। ইয়ে যো পি রহা… এ তো আঙ্কলকো গার্ডেন কা খুদ্ বনায়া হুয়া চায়ে। তাজা অর অসলি চায়ে…” সোমনাথ ক্যামেলিয়ার ছবি তুলছিল মোবাইলে। আর প্রিয়ার কথা শুনছিল আড়কানে। থাকতে পারল না। ছবি তোলা স্থগিত রেখে চায়ের কাপ তুলে নিল ঠোঁটের কাছে।
আর আমি মন দিলাম ক্যামেলিয়ায়। তাও মনে পড়ছে রবীন্দ্রনাথকে। তিনি তখন কোথায় ছিলেন, পাহাড়ে… শিলং… না মংপু…? আর সেই মেয়েটা, কালো মেয়েটা… যার চুল আলো ক’রে বিস্মিত কবিকে আলোময় করেছিল ক্যামেলিয়া…! চেয়ে দেখি অদ্ভুত আবেশে। নামটা তো জানতাম, রূপের সাথে প্রথম পরিচয় হ’চ্ছে এই গাঁওয়ে। রূপকথার গাঁয়ে। পাশাপাশি আরো কত ফুলেল গাছ। ফুলে ফুলে রঙিন উঠোনকে ঘিরে রেখেছে তারা। কিছু তার চেনা, বেশীটাই অচেনা… পাহাড়ী অঞ্চলের ফুল। আঞ্জেলিয়া… নামটাও জানিনা। ধরনটা ঐ রডোডেনড্রনের, কিন্তু ছোট ছোট গাছ, ফুলের গুচ্ছে ভরা শোভা বেশ অহংকারী।
প্রিয়া আর রঞ্জিতা ঘুরছে আমাদের পিছু পিছু। আর অবাক হ’য়ে চেয়ে আছি… দেখলেই সেই ফুলগাছের নামটা ব’লে হাসির হিল্লোল তুলছে শরীরময়। দুই বিস্মিত শিশুকে ফুলগাছের পাঠ দিচ্ছে দুই পাহাড়ী রূপসী। তাদের শরীর থেকে অদ্ভুত আলো ছড়িয়ে পড়ছে ফুলের পাপড়িতে। ওদের পিছনের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে আছে গাঢ় সবুজ জঙ্গল। ওপাশের পাহাড় থেকে একটা ঘন কালো আস্তরণ কুয়াশার মত ছড়িয়ে পড়ছে আরো ঘন সবুজকে আচ্ছন্ন ক’রে। ঠিক এই রকম একটা আবছায়ার ভিতরে যেন ডানা মেলে উড়ে বেড়াচ্ছে পাহাড়ী তন্বী দুই রূপকুমারী। ওদের চোখের মণিতে গাছেদের প্রতিচ্ছবি চকচক করছে। আর সেই গাঢ় ঘোরের অপরূপ অন্তস্থল থেকে প্রিয়ার ঠোঁট দু’টো নড়ছে… “কুছ তো খানা চাহিয়ে… বলিয়ে ক্যায়া বানাউঙ্গী…” এত আলতো স্বরক্ষেপন… সোমনাথ আমার দিকে তাকিয়ে, আমি হাসছি হাল্কা আবেশে আর খুব সন্তর্পণে আলো কমিয়ে নিচ্ছে একটা বিমূর্ত পাহাড়ী বিকেল।
খুব দ্রুত আলো গুটিয়ে নিচ্ছে দূর পাহাড়ের অদৃশ্য সম্মোহন। পাইনের ভারি ঘন পাতার ভিতর লুকিয়ে পড়ছে দিনের শরীরী উজ্জ্বলতা। ফিরে আসছে দূর থেকে দৃষ্টি কাছের মানুষগুলোর ঘনিষ্টতায়। চায়ের কাপ দু’টো হাঁ ক’রে তাকিয়ে আছে উঠোনের প্রান্তে ব’সে। মুখের পাশে, মাথার ভিতর, বুকের উপান্তে… গাঢ় হ’য়ে উড়ছে চা পাতার ঝিমঝিমে গন্ধ। এই যে একটা ক্যানভাস…তার ভিতর এসে পড়েছে প্রিয়ার বর… বছর ত্রিশের যুবক সাগর। দু’হাতের ব্যাগে ভরা অতিথি আপ্যায়নের খাদ্য সরঞ্জাম। একমুখ হাসি। রান্নাঘরের দরোজায় প্রিয়া, দরোজার বাইরে রঞ্জিতা… তাদের হাত ঘুরে ব্যাগ চ’লে গেল ঘরের ভিতরে। প্রিয়া দু’টো কমলালেবু নিয়ে বাইরে এসে আমাদের হাতে দিচ্ছে। সোমনাথ নাকের খুব কাছে নিয়ে গন্ধ নিচ্ছে চোখ বুজে। প্রিয়া বলছে…” ইয়ে নিবু মেরী আঙ্কলকা পেঁড়মে হুয়া। খাকে দেখিয়ে বহোত মিঠা হ্যায়, টেস্ট ভি আচ্ছা হ্যায়।”
ঠান্ডা বাড়ছে। আমাদের জন্যে নির্দিষ্ট ঘরে যাওয়া দরকার। ঠান্ডা নিরোধক পোশাক পরতে হবে। তা ছাড়া টয়লেটে যাওয়াটাও জরুরী। একটু পরিচ্ছন্ন হতে হবে এবার। সোমনাথ শেষ মুহূর্তের আলোয় ক্যামেলিয়া আঞ্জেলিয়ার ছবি তুলছে তাদের তেজী রূপের পাশে ব’সে। আর একটা গোলাকার লৌহ পাত্রে কাঠকয়লার আগুন সাজিয়ে তুলছে সাগর… আমাদের উষ্ণতা দেবার আয়োজন। সেই পাত্রের উষ্ণতার কাছে এসে হাত মেলে দিচ্ছি… চারিপাশে উন্মুক্ত উঠোন। উপরে ধুসর নীল আকাশ। দূরে গাছেদের কালো কালো ছায়া। আরো দূরে মেঘেরা নেমে এসেছে পাহাড়ের কঠিন শরীর মাখতে। আর নিস্তব্ধতা। কানের উপর টেনে নামিয়ে দিচ্ছি টুপির শেষ প্রান্ত। দু’হাতের উত্তাপ মুখের উপর বুলিয়ে নিচ্ছি বারবার। সোমনাথ বলছে… “চলিয়ে সাগর, রুম দিখাইয়ে…থোরা চেঞ্জ করনা হোগা।”
রঞ্জিতা আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছে… “আচ্ছে, তো হাম চলতি হ্যায়। ঘরপে যানা হোগা।” প্রিয়া খানিকটা এগিয়ে দিতে যাচ্ছে। সাগর সেই অগ্নিকুন্ডটা দু’হাতে তুলে নিল। বলছে… “থোরা রুকিয়ে ইধার, আ যাউঙ্গা…” অসমাপ্ত ঘরের মেঝে পার হ’য়ে উন্মুক্ত সিঁড়ি দিয়ে উঠে গেল উপরে। উষ্ণতা মাখা আমাদের শরীর দু’টো আবার শীতল হয়ে উঠছে। মোবাইলের স্ক্রীনে তাকিয়ে সোমনাথ বলছে…” মাশাই… এখন টেম্পারেচার ৭ ডিগ্রী… গুগল দেখাচ্ছে…” শরীরের ভিতরটা গুরগুর ক’রে উঠল তৎক্ষণাৎ। পা দু’টো ঠকঠক ক’রে কাঁপছে।
চারিপাশের পাহাড়ে, চড়াই উৎরাই শরীরের খাঁজে, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছবির মত ছোটছোট বাড়িতে দূরের পাইনগাছের নিস্তব্ধতার ভিতর নেমে আসছে সন্ধ্যার আমেজ। তার সাথে গাঢ় শীতের জমাট একটা উপভোগ আরো জড়িয়ে ধরছে ভালোলাগা বোধের সবটা জুড়ে। ব’সে আছি কাঠের আরাম- চেয়ারটায়। সোমনাথ ক্যামেলিয়ার আকর্ষণে ব’সে আছে পাথুরে উঠোনে… তার মুখোমুখি। মোবাইল ক্যামেরায় যতটা ধ’রে রাখা যায় তার আলোকিত রঙের সাথে সন্ধ্যার গড়িয়ে পড়ার উচ্ছলতা। ঠিক এমনি একটা দৃশ্যপটের মধ্যে রূপসী রঞ্জিতা রাই রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে আসছে। আমার চেয়ারের কাছে এসে বিদায় চাইছে। ঘরে ফিরে যাবার কথা ব’লছে… আভি তো ঘর যানা হ্যায়। কাল সুবেমে ফির মিলুঙ্গী… আপকো লে যায়েঙ্গে মেরী ঘরমে। সুন্দরী প্রিয়া উঠোনের প্রান্তে যেখান থেকে পথটা নেমে গেছে নীচে… সেখানে গিয়ে রঞ্জিতাকে গাঢ় আদরে ভালোবাসা জানিয়ে বিদায় জানাচ্ছে। সোমনাথ ছবি তোলা ভুলে ঘাঢ় ঘুরিয়ে দেখছে সেই গহন আন্তরিকতামাখা বিদায় দৃশ্য। অথচ এই তো মাত্র রাত্রিটুকু। আবার আগামীকাল সকালেই দেখা হবে। এই তো মাত্র খানিকটা নীচেই তার ঘর… তবুও কী নিবিড় ভালোবাসার রং।
রঞ্জিতা নেমে গেল উৎরাই ধ’রে। ঠিক সেই মুহূর্তেই উঠোনে পা রাখলো একটি বছর চব্বিশের যুবক। প্রিয়ার সাথে কথা বলছে। এগিয়ে আসছে ধীরে। প্রিয়া পরিচয় করাচ্ছে… এ লেড়কা কলকাতাসে এক ট্যুরিস্ট লেড়কি লেকে কাল আয়া । উধার… থোড়া নীচে উনকো রহেনে কে ঘর। ছেলেটির নাম সৌরভ। খুব মিশুকে প্রকৃতির আর হাসিখুশী, উচ্ছল। এই গ্রামে ট্যুরিস্ট, পর্যটক বা ট্রেকার খুব কম আসে। তাও যারা অপরিচিত পাহাড়ীগ্রামে ঘুরে বেড়ানোর জন্যে খুঁজে বের করে লুকোনো ঠিকানা… তারা দু’চারজন এদিকে এসে যায়। সৌরভও সেই দলের ছেলে। ওর কাজ নিজে ঘুরে বাড়ানো আর কাউকে পেয়ে গেলে তাকেও নতুন জায়গায় ঘুরিয়ে দেয়া… কিছু অর্থ উপার্জন আর কিছুটা যৌবনের অদ্ভুত উল্লাস। ওর সাথে কথা বলতেই জানা গেলো… কাছাকাছি একটা দারুণ ঝর্ণা আছে এখানে। ওরা আজ সেখান থেকে ঘুরে এসেছে। এখান থেকে মাত্র পাঁচ ছয় কিলোমিটার দূরে। পায়ে হাঁটা পথ। কিন্তু জঙ্গলের ভিতরে উৎরাই দু’কিলোমিটার খুবই বিপদজনক। সোমনাথের দিকে তাকালাম। ওর চোখ চকচক করছে। চোখের ভিতরে ঝর্ণার ছায়া ভেসে উঠেছে। সৌরভ ঠান্ডায় বেশ জড়সড় হয়ে আছে। ছুট দিয়ে রান্নাঘরে ঢুকে গেল। সোমনাথ বলল… মাশাই… চলুন, চুলার ধারে ব’সে একটু তাপ পোহাই।
রান্নাঘরে ইতিমধ্যেই মোমো প্রস্তুতির আয়োজন শুরু হয়ে গেছে। বড় বড় গোটা ছয়েক স্কোয়াস্, প্রিয়া একটা বেশ বড় গামলায় মুঠো ভ’রে নিচ্ছে স্থানীয় হাতে তৈরী আটা। একমুখ হাসি ভরিয়ে বলছে… বৈঠিয়ে আঙ্কল। ফির চায়ে বনাউঙ্গী। হামারী দোস্ত বন গ্যয়ে সৌরভভাই। দো সাল পিছলে ও লেড়কা ইধার প্যহেলাবার আয়া। আভি দুসরাবার আ গ্যয়ে এক লেড়কি লেকে। বলেই হো হো ক’রে হেসে উঠল সে। সে কী প্রাণতরঙ্গ! সৌরভ একটু লজ্জা পেল নিশ্চই, তাড়িতাড়ি বলে উঠল… আরে ছোড়্ তো ইয়ার। দু’টো পয়সার ধান্দায় এনেছি। মাটির অপূর্ব দর্শণ উনুনের ভিতর কাঠে আগুন জ্বলছে… সাগর আর প্রিয়া মিলিত চেষ্টায় নিমগ্ন হ’য়ে আছে মোমো তৈরীর প্রাথমিক পর্বে। আগুনের শিখা সরু সরু হলদে সুতোর মত.. উনুনের উপর নেচে নেচে উঠছে। দূর থেকেই দু’হাত মেলে দিলাম উষ্ণ আরামের আভাসের দিকে…
…… ক্রমশঃ