ক্যাফে কাব্যে দেবযানী রায় ঘটক (কথাকলি)

স্মৃতির একঝলক(মনের কথা)

আকাশের টানে

আরেকটু জোরে পা না চালালে চারটে কুড়ির বারুইপুর লোকালটা পাওয়া যাবে না। এরপর আছে ক্যানিং লোকাল অসম্ভব ভীড় হয়। তারপর ডায়মন্ড হয়ে সাড়ে পাঁচটায় একটা সোনারপুর লোকাল আছে। সেটাতে যাওয়াই যায় বালিগঞ্জ থেকে একেবারে বসে,তবে বাড়ি ফিরতে অনেক দেরি সেই সন্ধ্যে হয়ে যাবে। গিয়ে আবার হাতমুখ ধুয়ে, খেয়ে নিয়ে পড়তে বসা। অনেক ঝক্কি। হাল্কা ভীড় ঠেলে লেডিস কম্পার্টমেন্টে উঠে মিতুল জায়গাও পেয়ে গেলো সেদিন। একজন যাদবপুরে নেমে গেলো। বসার সিটের উল্টো দিক থেকে প্রবল বেগে হাওয়া আসছে। খুব দ্রুত গাছপালা, ঘর বাড়ি, লাইটপোস্ট, পুকুর, লোকজন সব ছিটকে সরে সরে যাচ্ছে। কামরার ভিতর আজ অপেক্ষাকৃত কম ভীড়।
আজ শনিবার অনেকের হাফছুটি। ট্রেনের ঝমা ঝম্ আওয়াজের সাথে তাল মিলিয়ে বসে আর দাঁড়িয়ে যাত্রিরা সব দুলছে। কেউ আবার সিটের ওপর বসে পা তুলে হাল্কা ঝিমুনি দিচ্ছে। একটা ঝালমুড়িওয়ালা রোজ এই ট্রেনে এই লেডিস কামরাতে থাকে। মুখচেনা হয়ে গেছে। মিতুলের খুব লোভ হয়। কমলা রঙের ঘুঘনি,পেঁয়াজ,শশা,কাঁচালঙ্কা দিয়ে আর চাট মশলা,বিটনুন দিয়ে একটা টিনের কৌটোতে হাতা দিয়ে নেড়ে নেড়ে কেমন জম্পেশ করে বানিয়ে দেয় মুড়িটা। অনেকেই বেশ তাড়িয়ে তাড়িয়ে খায়। মিতুল দূর থেকে দেখে খুব উপভোগ করে,কিন্তু ঠিক লোভ নয়,ক্ষীণ একটা ইচ্ছে জাগে মনের মধ্যে। কিন্তু ওদের মতো এভাবে ট্রেনে কিছু কিনে খাওয়া নিষেধ আছে বাড়ি থেকে তাছাড়া হাতে গোনাগুনতি পয়সা। কানের সামনে ফটাস্ করে আচমকা একটা আওয়াজ হলো। খুব পরিচিত এই শব্দটা তবু একটু চমকে উঠলো মিতুল। এরা সব ফটাস্ জল খায় মুড়ি খাওয়া হয়ে গেলে। কিছুই না খুব কম দামি কাচের বোতলে হাল্কা মিষ্টি দেওয়া সোডা জল,মানে বিজলী গ্রীলের যেমন সোডা ওয়াটার ওইরকমই কিন্তু খুব নিম্নমানের কমদামী। মিতুল কাঁধে ঝুলিয়ে রাখা জলের বোতল থেকে এক ঢোক জল খেয়ে নিলো। তেষ্টা মিটলো কিনা কে জানে কিন্তু মন ভরলো না। ওর চোখ সামনের সব্জিবিক্রেতা মহিলার দিকে। কি তৃপ্তি করে ফটাস জলটা খাচ্ছে। এমনসময় জানলার বাইরে দিয়ে কারশেডের পাঁচিল চোখে পরলো,আরে এই তো কি তাড়াতাড়ি সোনারপুর স্টেশন চলে এলো। ভীড় ধাক্কা ঠেলাঠেলি কিছুই নেই। নিশ্চিন্তে দু নাম্বার প্ল্যাটফর্মে নেমে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ওভারব্রীজ এর দিকে এগিয়ে গেলো মিতুল। হ্যাঁ স্টেশনের ওই পারে যেতে হবে। একটু সামনে এগিয়ে রেললাইন পেরিয়েই যাওয়া যায় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনটার সামনে দিয়ে যেমন অনেকেই যাচ্ছে। কিন্তু ও বাবার কথা মতো লক্ষী মেয়ে হয়ে ওভারব্রীজ এর সিঁড়ি ভেঙে নেমে আসে প্ল্যাটফর্মের ওপারে। গোল থালার মতো লাল সূর্যটা তখন ডুববে ডুববে করছে। গরমকাল তাই এখনো পরন্ত রোদের আলো অনেক্ষণ থাকবে।
রেললাইনের পাশ দিয়ে বেশ সুন্দর চওড়া পরিস্কার একটা পায়ে হাঁটার রাস্তা চলে গেছে সমান্তরাল ভাবে। অনেকেই সাইকেল নিয়ে সেই হাঁটা পথে চলাচল করছে। মিতুল মন্থর পায়ে হেঁটে চলেছে। হাতে টক্ টকে গোলাপি রঙের বোগনভেলিয়া ফুল। লেভেল ক্রসিং এর গেটের ধারে থোকা থোকা ফুটে রয়েছে, মনে হয় রেল কোম্পানির সম্পত্তি। ও প্রায় রোজদিনই নিয়ে যায়। ঘরে গিয়ে ফুলদানিতে রেখে দেয়। আরও কতো নাম না জানা গাছ আছে এখানে রাস্তার দুই ধারে। নানারঙের বুনোফুল ফোটে পথের ধারে,পাতাগুলো খস্ খসে। তারপর ধুতরা আছে। এতোবড়ো ধপধপে সাদা ধুতরাফুল খুব কমই দেখা যায়। জংলী জবা আছে। আর কুল গাছ তো ভর্তি চারিদিকে। সরস্বতী পুজোর পরের দিকে মিতুল একেবারে ব্যাগ ভর্তি করে কুল পেরে নিয়ে যায়। নোনা ফল জীবনে দেখেনি, এখানে এসে চিনলো। বিরাট মোটা বড়সড় গাব গাছ আছে। দু একটা আম গাছও আছে, তবে তেমন ফল ধরে না, ছোটো গাছ। সারা রাস্তা পথের পাশের বনবাদাড় থেকে এটা ওটা টেনে ছিঁড়ে সংগ্রহ করে ব্যাগ বোঝাই করে মিতুল। এসব ওর কাছে একেবারেই নতুন। এই ট্রেনে করে বাড়ি ফেরা, সকাল হলেই নানারকম পাখির ডাকে ঘুম ভাঙা, অনেক গাছপালার মধ্যে বাগানে খেলা করা, ফাঁকা ধানক্ষেত, মাঠ পেরিয়ে অজানা নিশ্চিন্দিপুরের ভীড়ে হারিয়ে যাওয়া…..সব নতুন ওর কাছে।
রোজ সকালে পড়াশোনা শেষ করে গরম গরম ডাল ভাত মাছ ভাজা খেয়ে হেঁটে সোনারপুর স্টেশনের দিকে রওনা দিতে হয় ন’টা কুড়ির সোনারপুর লোকাল ধরার জন্য। স্কুল কলেজের ছেলেমেয়ে বোঝাই করা এক ট্রেন। ওর সমবয়সী স্কুলের সহপাঠীরা এসব ভাবতেই পারবে না। ওর প্রিয় একেবারে ছোট্ট বেলার বন্ধু অদিতির বাড়ি বালিগঞ্জে। কনফিল্ড রোডের কাছে ফার্ণ রোডে,জগবন্ধু স্কুলের পাশেই। ও তো এসব গাছপালা জীবনেও দেখেনি, নামই শোনেনি কখনো। তারপর ফার্স্ট গার্ল জয়িতা থাকে কসবাতে ওদের ভাড়া বাড়ি সামনে একটা পুকুর আছে এই যা। অন্যান্য বন্ধুরাও সব শহুরে কোলকাতার বুকেই বাস করে। সবাই তো প্রথমে খুবই অবাক হয়ে যেতো, যখন শুনতো মিতুল একা ট্রেনে করে রোজ সোনারপুর থেকে আসে। কিন্তু ওরা তো জানেনা রোজ রোজ কতো মজা করার সুযোগ হয় মিতুলের।
ছুটির দিনে দুপুরে খাওয়াদাওয়া হয়ে গেলেই চুপি চুপি বেড়িয়ে পরে। কোনোদিন সাথে থাকে ওর মেজদি। বাড়ির দক্ষিণদিকে সেই শিয়ালডাঙ্গার মাঠ পেরিয়ে মঙ্গলচন্ডীতলা। বহু দূর থেকে দেখা যায় আবছা ধোঁয়াটে আলোয় সুভাষগ্রাম স্টেশন, উঁচু উঁচু লাইটপোস্ট। অনেক দূরে মিলিয়ে যাওয়া রেললাইনের লোহার পাটাতন। ওখান থেকে ট্রেন ছাড়লে ট্রেনের তীক্ষ্ণ হর্ণ শোনা যায় হাল্কা আর জোরালো আলোটা দেখা যায়। বাতাস এতোটাই পরিস্কার সেখানে। চন্ডীতলা মায়ের থান। মাটির ফাটা চাতালে একটা বিরাট মোটা অশ্বত্থ গাছ। তার পাশেই আরেকটা বট গাছ। কোন প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে যেনো জেগে উঠে পাহারা দিচ্ছে এরা৷ মায়ের থানে পাথরের গায়ে একগাদা সিঁদূর লেপা রয়েছে, মানত করা লাল ডোর বাঁধা গাছের নীচু ডালে…..কতো শাঁখা-পলা, মাটির পুতুল ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরে আছে গাছের মোটা কালো গুঁড়ির কাছে। প্রতি মঙ্গলবার আশেপাশের মেয়ে বৌয়েরা সব এখানে আসে পুজো দিতে। এবার অশ্বত্থের ছায়ায় একটু জিড়িয়ে নিতে হবে। ধানক্ষেতের ওপর দিয়ে অনেকটা পথ হেঁটে এসেছে ওরা। এইসব অভিযানে কোনোদিন সাথে মিতুলের মেজদিও থাকতো, নাহলে ছোটন তো আছেই ওদের পথপ্রদর্শক। বসে বসে ওরা তাকিয়ে দেখে পাশে বটের ঝুরি ধরে কি অবলীলায় দোল খাচ্ছে কিছু উলঙ্গ বাচ্চা। ধূলোর মধ্যে পরে গিয়ে গড়াগড়ি যাচ্ছে তবু আনন্দের শেষ নেই। অপূর্ব এক অকৃত্রিম, মুক্ত, উদার উচ্ছ্বাসে লুটোপুটি খাচ্ছে এরা, কি অনাবিল এদের আবেগ! পলিমাটির ধূসরতাও যেনো সজীবতার ছোঁয়া পেয়ে মেতে উঠেছে এদের আনন্দ কলতানে।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে থাকে। ধানক্ষেত পেরিয়ে ফিরতে হবে বাড়ি। ফেরার পথে অনেক দূর থেকে দেখা যেতো মিতুলদের বাড়ির সাদা নীচু পাঁচিল। পাঁচিলের গা ঘেঁষে নারকেল গাছের সাড়ি। কোণায় একটা কাঁচামিঠা আমগাছ,তার পাশেই সপেদা আর বাতাবি লেবুর গাছ। পূবদিকে গেটের সামনে পাঁচিলের গায়ে দুটো বেলগাছ। লাল সিমেন্ট বাঁধানো রাস্তা গোল হয়ে ঘুরে চলে গেছে সামনে বারান্দার দিকে। সেই লাল রাস্তার দুপাশে ইঁটের সাড়ি আর তার ফাঁকে ফাঁকে নাইনও ক্লক ফুলের গাছ। রোজ সকালে গোলাপি,বেগুনী,হলুদ, লাল নানা রঙের বাহারি ফুলে চোখ ধাঁধিয়ে যেতো।বাগানের রাস্তাটা গিয়ে শেষ হয়েছে ছোটো একটা ঝুল বারান্দার সামনে। বাড়ির সামনে ঝুঁকে এসে মুখ বার করা সেই বারান্দাটা অনেকটা বাংলো বাড়ির মতো। সিঁড়ির শেষ ধাপের কাছেই একটা মাঝারি কাঁঠালীচাঁপা ফুলের গাছ। ফুল ফুটলে গন্ধে সারা বাগান মাতোয়ারা হয়ে উঠতো। চন্ডীতলা থেকে বাড়ি ফেরার পথে দূর থেকে মনে হতো এই তো এসে গেছে, কিন্তু রাস্তা যেনো আর ফুরায় না। ওদের সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে আকাশপথ পাড়ি দিয়ে মাঠের পশ্চিমপ্রান্তে সূর্যিটা ডুব দেওয়ার তোরজোর করেতে থাকে। মিতুল ফিরে তাকিয়ে দেখে মাঠের ওইপারে কি সুন্দর লাল টকটকে গোল থালার মতো সূর্য ধীরে ধীরে… অতি ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে। মাথার ওপর বেগুনী,
গোলাপি,হলদে,কমলা নানা রঙের মেঘের সাথে হেঁটে চলেছে ওরা তিনজন। সাথে সাথে সাতরঙা রামধনুর মতো আকাশ রাঙিয়ে দাপিয়ে ছুটে চলেছে মেঘের দল। মেঘ যে এতোরকম রঙের হয় সেটা জীবনে এই প্রথম নিজের চোখে দেখলো মিতুল। অদৃশ্য কোনো শিল্পীর তুলির রঙের ছোঁয়া লেগেছে মেঘের পালকে। এ স্বর্গীয় দৃশ্য কখনোই ভোলার নয়। সময়ের সাথে রাস্তাও ফুরালো। তারপর একছুটে বাড়ির কাছে। পাঁচিল পার হয়ে লাফিয়ে বাগানের ভিতর। নীল ফ্রকের বাহারি লেসটা পাঁচিলে আটকে ছিঁড়ে গেলো। ছোটন ততক্ষণে দৌড় দিয়েছে ওর নিজের বাড়ির দিকে….কাছেই। এ পাড়ার ছেলে। ওদের বাড়ির গাছের ফলসা এনে দেয় মিতুলকে কোঁচড় ভর্তি করে। ছোটো ছোটো কালো হজমি গুলির মতো দেখতে, খেতেও তেমনই টক মিষ্টি। মিতুল আগে কোনোদিন খায়নি এই ফলটা। এরকম কোনো ফল থাকতে পারে সেটা কি কেউ জানতো! বন্ধু পাতিয়েছে মিতুল ওর সাথে। ছোটন ওদের পথ চিনিয়ে সব জায়গাতে নিয়ে যায়।
বাড়ি ফিরে ভালো করে হাতমুখ ধুয়ে এবার লক্ষীটি হয়ে পড়তে বসা। ইতিহাসে বইয়ের পাতায় ‘মুমতাজ বেগম’ আর ‘আলাউদ্দীন খিলজী’ একলা জেগে বসে রয়েছে। বিজ্ঞান বইয়ের ‘সালোকসংশ্লেষ’ এর মনে শান্তি নেই। বাংলা বইয়ের অক্ষয়কুমার বড়ালের ‘মধ্যাহ্ন’ সন্ধ্যের আঁধারে বইয়ের বন্ধ পাতায় চুপটি করে একলা বসে। কিন্তু মিতুলের চোখে তখন স্বপ্নের ঘোর। বইয়ের পাতা ছেড়ে মন উড়ে চলেছে সেই ধানক্ষেত পেরিয়ে, পানের বড়োজ পেরিয়ে মঙ্গল চন্ডীর থানে। চলেছে সেই কোন সুদূরে অশ্বত্থ-বটের ছায়ায় ঘেরা আধো অন্ধকার মায়ের মন্দিরের উঠোনে। এখনো কানে ভেসে আসছে কচি বাচ্চাদের হাসির আওয়াজ। মাথার ওপর চারিদিকে আকাশ জুড়ে সেই রঙবেরঙের উড়ন্ত মেঘ। ফাঁকা ধানক্ষেতের শুকনো খড়-বিচালির খোঁচায় পা কেটে ছড়ে গেছে। ভাবতে ভাবতে একসময় দুচোখ জুড়িয়ে তন্দ্রা এলো। আধোঘুমে দেখতে পেলো ও যেনো অনেক লম্বা লম্বা বটের ঝুড়ি ধরে হাওয়ায় ভাসছে। কিন্তু ঝুড়ি এলো কোথা থেকে! এখানে তো গাছই নেই! মাথার উপরে এক তাল কালো মিশমিশে ঘন জমাট অন্ধকার। সেখান থেকে নেমে এসেছে বটের ঝুড়ি। সে দুলছে, চারিদিকে অনেক বাচ্চার কল্ কল্ হাসি কিন্তু কাউকে চোখে দেখা যাচ্ছে না। এমনসময় চোখে পরলো অদূরেই মায়ের থানে অন্ধকারে গুঁড়ি মেরে বসে আছে একটা লোক। মুখ ফেরাতেই দেখে ঝড়ু! মিতুলদের বাগান পরিস্কার করে। ওকে সবাই খুব ভয় পায়। সামনের দিকে হামাগুঁড়ি দিয়ে এগিয়ে আসছে ঝড়ু। মুখের সামনের পাটির দুটো দাঁত ভাঙা। গুড়াকু খাওয়া খয়াটে দাঁত দুটো বার করে কেমন হাসছে। হাত ছাড়িয়ে নেমে পালানোর চেষ্টা করে মিতুল, কিন্তু পারে না। বটের ঝুড়িতে আটকে গেছে হাত, কিছুতেই ছাড়ানো যাচ্ছে না। চেঁচিয়ে উঠে থেমে গেলো মিতুল, গলা দিয়ে যে কোনো আওয়াজ বেরোচ্ছে না। অবশেষে লাফ দিয়ে ধুপ্ করে পরলো নীচে। পরেই মাথা ঠুকে গেলো মেঝেতে। ইতিহাস বইয়ের পাতা ছিঁড়ে জাহানারার মুখ বেঁকে গেলো। রাতে খেতে বসে পিঠে গুম্ করে এক কিল বসিয়ে দিলো দাদা। এটা ওদের রোজকার ব্যাপার।খেতে খেতে বাবা মাকে বললো— “কাল থেকে এদের সাথে নয় আলাদা খেতে দিও আমায়।” ফিরে এসে বইপত্তর গুছিয়ে রাখতে গিয়ে দেখলো মিতুল বাংলা বইয়ের পাতায় অতি যত্নে ভাঁজ করে রাখা আছে সেই কুড়িয়ে আনা বট-অশ্বত্থের পাতা।
“মনে হয় প্রাণ এক দূর স্বচ্ছ সাগরের কূলে
জন্ম নিয়েছিলো কবে;
পিছে মৃত্যুহীন জন্মহীন চিহ্নহীন
কুয়াশার যে ইঙ্গিত ছিলো —
সেই সব ধীরে ধীরে ভুলে গিয়ে অন্য এক মানে
পেয়েছিলো এখানে ভূমিষ্ঠ হয়ে —
আলো জল আকাশের টানে;
কেন যেন কাকে ভালোবেসে!”
(কবি জীবনানন্দ দাশ)
ছেলেবেলার কিছু অমলিন স্মৃতি কথায় কথায় খানিক গল্পের রঙ পেলো…..
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।