- 46
- 0
প্রচলিত কথায়, দেয়ালের নাকি কান আছে। আমি নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীনটির মতো তাকিয়ে থাকি নিজের বুকের দিকে, একটা তিল ক্রমশ বড় হতে হতে মিলিয়ে যায় দুই স্তনের মাঝের সরু গলিপথে। কান পাতলে আজও সেখান থেকে ভেসে আসে হরিণের শোক, রূপোর মাদুলির ঝনঝন শব্দ। কে যেন 'তিনমাথার মোড়ে অপেক্ষায় থাকব ' বলেও ঘুরিয়ে নেয় মুখ। ফিরতিপথে বৃষ্টি পড়ে, ঝিরিঝিরি। ঝিনুকের ভেতর সন্ধ্যা নামে, বটতলায় শিব পুজো হয়। একটু একটু করে মিটিয়ে ফেলি তোমার কাছে গচ্ছিত ঋণ। যারা বলে 'বাড়ি ছেড়ে বেরোনোর সময় পেছন ফিরে তাকাতে নেই ' তাদের জন্য তুলে রাখি একটা পরিপুষ্ট দেয়াল, নিজেকে বলি,'দেয়ালের শুধু কান না,একটা চওড়া বুকও আছে'
ক্রমাগত বড় হতে হয়। বড় হবার এই অসুখ অনিচ্ছাকৃত। কলঘরে স্নান করি প্রকাশ্যে, স্নানঘরে জমিয়ে রাখি হিসেবপত্র। 'ইঁদুর ডুবন্ত জাহাজ ছেড়ে পালায়' কিনা জানি না তাই ওসব জটিল অঙ্ক মেলানোর আগেই ডুবিয়ে দিই নিজেকে, অথৈজলে। গায়ে বালি জমে , নোনতা হয়ে আসে ভেতরঘর। থামি না, নুইয়ে পড়ি না। হয়ত সামান্য মিইয়ে যাই, ঘুম জড়িয়ে যায় লাউডগার মতো আর সেই সুযোগেই 'ইঁদুর গর্ত খুঁড়ে মরে, সাপ এসে দখল করে' আধভাঙ্গা সাম্রাজ্য
প্রবাদের পথে হাঁটি, কিছুটা পিছল কিছুটা শুকনো হলুদ পাতা বিছানো। "গামছা সেলাই করো ক্যান বউ?" বলে চেঁচিয়ে বাড়ি মাথায় করেছিল যে বুড়ি ঠাকুমা, আজ সে নেই নেই সেই বউও। তবু স্নান করে আসার পর গামছার সহজ সরল ফুটোগুলো মনে করিয়ে দেয় আর কিছু থাকুক বা না থাকুক আমাদের চাঁদের আয়তন একই রয়ে গেছে। সাম্রাজ্য বদলেছে, পোশাকের ভেতর জন্মেছে আগাছা।
তবু, সূর্য অস্ত যাবার পর এই অভাবটুকুই চিরহরিৎ বৃক্ষের মত,আমার তোমার শেষ সম্বল...
0 Comments.