- 42
- 0
ছেলেবেলার বিয়ে বাড়ি নেমতন্ন করার প্রয়োজন নেইকতো বিয়ে বাড়ি বিনা নেমতন্নে, খেয়েছি ছোট সেদিনে পেট ভরে। যখন মনে পড়ে। হাসিতে এ মন ভরে। শৈবাল আমার বন্ধু পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি । ওর বড়ো দিদির বিয়ে । শুধু মাত্র বাবার নেমতন্ন, আমার নয়। মনে মনে জেঠুর ওপর খুব রাগ । কট কট করে তাকিয়ে রইলাম মনে মনে ভাবলাম দেখবে সন্ধ্যা পরে ঠিক খেতে বসে যাব করলাম ও তাই । মাকে বললাম ভালো জামাকাপড় পরিয়ে দাও। বিয়ে বাড়ি যাবো । মা বললেন,তোর বাবার শুধু নেমতন্ন,তোর নয়। আমি বললাম, শৈবাল আমার বন্ধু, ও বলেছে। শুনে মা খুব হাসলেন। আবার জামাকাপড় ও পরিয়ে দেন , চুল আঁচড়িয়ে দেন। হ্যাঁ রে তোকে বলেছে তো ? আমি চুপ করে রইলাম। গিয়ে দেখি কলাপাতা পড়েছে সবেমাত্র। জেঠু ছুটে এসে বলে, বড়ো খোকা বসে পড় । এর পরে ই বড়ো দের খাওয়ানো হবে হাসতে হাসতে কাঠের চেয়ারে বসে পড়লাম। কাঠের লঙ টেবিলে সাদা কাপড়ে ঢাকা। এক পাশে দেওয়া হলো লম্বা বেগুন ভাজা। সামনে কলমী শাক ভাজা বাদাম আর পোস্ত দিয়ে। সঙ্গে গরম গরম ফুলকো লুচি। সেদিন সেই বেগুন ভাজা দিয়ে ফুলকো লুচি আজ ও ঠোঁটে লেগে আছে। দুটো লুচি খেয়ে আর খেলাম না।অনেক কিছু যে খেতে বাকি আছে। নারিকেলের কুচি দিয়ে ছোলার ডাল খেলাম এমনি এমনি। তার পর কাতলা মাছ, মাত্র একটি।যার আশায় ছিলাম সেই খাসির মাংস! দুই তিন পিস মাত্র, শৈবাল বলল, কিরে আর দু পিস নে । আমি শুধু হেসে দিলাম। চাটনি পাঁপড় একটু খেয়ে ই মিস্টি খেতে শুরু। মিহিদানা,দই ,পান্তোয়া আর রসগোল্লা একটি করে ই খাওয়া গেল। পাড়ার কাকুরা ধুতি আর পাঞ্জাবি পরে পরিবেশন করছিল। কত সাধাসাধি করেছিল। যে জেঠু নেমতন্ন করতে ভুলে গিয়েছিলেন, তিনি ও বললেন, কিরে পেট ভরে খেয়েছিস তো ? আমি এক গাল হাসতে হাসতে বললাম, তুমি নেমতন্ন করতে ভুলে গেলেও আমি খেতে ভুলিনি।জেঠু হাসি দেখে খুশি হয়ে মায়ের কাছে ছুটে চলে আসি । বিনা নেমতন্নে বিয়ে বাড়ি খাওয়ার মজাই আলাদা।
0 Comments.