Thu 18 September 2025
Cluster Coding Blog

কবিতায় বিপ্লব গোস্বামী

maro news
কবিতায় বিপ্লব গোস্বামী

আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস

আজ ২ অক্টোবর, আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস। ভারত সহ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই আজ এই দিনটি আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসাবে পালন করা হচ্ছে। আজকের দিনে অর্থাৎ ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দের ২ রা অক্টোবর গুজরাট প্রদেশের অন্তর্গত পোরবন্দর নামক স্থানে অহিংস আন্দোলনের প্রবক্তা ও ভারতের জাতীর জনক মহাত্মা গান্ধীর জন্ম হয়। তাঁর আসল নাম মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। তাঁর পিতার নাম কাবা গান্ধী ও মাতার নাম পুতলিবাঈ। উনিশ বছর বয়সে তিনি উচ্ছ শিক্ষার জন্য বিলেত যান এবং ব্যারিস্টারি পাশ করে ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন। এই সময় তাঁর দাদাভাই নৌরজি ও গোপালকৃষ্ণ গোখলের সঙ্গে পরিচয় ঘটে এবং তিনি জাতীয়তার মন্ত্রে দীক্ষিত হন। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি এক জটিল মোকদ্দমার ভার নিয়ে আফ্রিকায় যান। সে সময় দক্ষিণ আফ্রিকার ভারতীয়রা শ্বেতাঙ্গ সম্প্রদায়ের হাতে উৎপীড়ীত ও লাঞ্ছিত হচ্ছিল। ভারতীয়দের প্রতি এইরূপ আচরণে তাঁর মনে আত্মসম্মানবোধ ও দেশাত্মবোধ জেগে ওঠে। দেশবাসীকে স্ব-মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সেখানে তিনি সত্যাগ্ৰহ আন্দোলন আরম্ভ করেন। এই আন্দোলনই ছিল প্রথম অহিংস সত্যাগ্ৰহ আন্দোলন। তাঁর অহিংস আন্দোলনে হিংসা নেই, শক্রতার স্থান নেই, আছে শত দুঃখ, কষ্ট নির্যাতন ভোগ করে অন্যায়কারীর মন থেকে হিংসা দূর করে অহিংসা প্রতিষ্ঠা করা। দক্ষিণ আফ্রিকায় ২১ বছর কাটানোর পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে চম্পারণে তিনি ভারতে প্রথম অহিংস সত্যাগ্ৰহ আন্দোলন আরম্ভ করেন। তারপর শুরু করেন একের পর এক অহিংস আন্দোলন। তাঁর এই অহিংস আন্দোলনগুলোই ছিল ভারতের স্বাধীনতা সংগ্ৰামের মূল চালিকা শক্তি। তাঁর এই অহিংস আন্দোলন এখন সারা বিশ্বে মানুষের স্বাধীনতা ও অধিকার পাওয়ার আন্দোলনের মূল অনুপ্রেরণায় পরিণত হয়েছে। তিনি ছিলেন প্রেম, সত্য ও অহিংসার পূজারী। তিনি অহিংসার মতবাদ ও সত্যাগ্ৰহ আন্দলনের প্রবক্তা। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন অহিংসার মাধ্যমে জয় করা যায় সারা বিশ্ব। তিনি শুধু ভারতে নয় , বিশ্ব ব্যাপি নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অন্যতম পদ প্রদর্শক। ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে প্যারিসের ইরানী নোবেল বিজয়ী শিরিন এবাদী তার একজন হিন্দী শিক্ষকের কাছ থেকে মহাত্মা গান্ধীর জন্ম দিনটির ব্যাপারে একটি প্রস্তাবনা গ্ৰহণ করেন। সিদ্ধান্তটি ধীরে ধীরে ভারতের জাতীয় কংগ্ৰেসের কিছু নেতাদের আকর্ষণ করতে থাকে। পরে ২০০৭ সালে সোনিয়া গান্ধী এবং ডেসমন্ড টিটু সিদ্ধান্তটি জাতি সংঘে পেশ করেন। ২০০৭ সালের ১৫ জুন জাতি সংঘের সদস্যবৃন্দ ২ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক অহিংস করার ব্যাপারে ভোট দেন। এর পর সাধারণ পরিষদ তার সদস্যদের কাছে অহিংসার বার্তা দিয়ে ২ অক্টোবর দিনটি আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসাবে ঘোষণা দেয়। বিশ্ব থেকে হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি, মারামারি, অসহিষ্ণুতা, ও রক্তপাত বন্ধে বিশ্ববাসীকে সচেতন করতে প্রতি বছর ২ অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর জন্ম দিনটি বিশ্ব অহিংস দিবস হিসাবে সারা বিশ্বে পালন করা হয়। এক কথায় বলতে গেলে হিংসা থেকে দূরে থাকাই এই দিবসের পালনের মূল উদ্দেশ্য।

Admin

Admin

 

0 Comments.

leave a comment

You must login to post a comment. Already Member Login | New Register