আমি স্বপ্নের বাগান করেছি। যেখানে আছে চন্দ্রমল্লিকা,জুঁই,গোলাপ, বগনভেলিয়া,রজনীগন্ধা। আসে মৌমাছি। মুনিয়া বুলবুল পাখিরা দোল খায়। আমি মুগ্ধ। লেজঝোলা কালো পাখি আসে। ওরা তাড়া করে। ছোটদের সম্মিলিত জোট আমাকে অন্তিম ভালোবাসায় ভুলিয়ে দেয়। বাসা বাধে। ডিম পাড়ে আর
বাচ্চা হলেই ফুড়ুৎ। নাম রাখতে পারি না মানুষের মতো। বড় হয়ে যদি ওরা আসতো? আমার কোলে পিঠে দোল খেত? আদর করে বলতো – বাগানরাজা আমরা আছি গো, সঙ্গে আছি। ভ্রান্ত চিন্তা। ওরা যে পাখি। আকাশে উড়ে আর গান গায়। চারিদিকে বেড়ার বন্ধন। মাঝে মাঝে ভাবি আমি কি নির্মম যেখানে উন্মুক্ত রাখিনি যৌবনের খোলা দ্বীপ। ভয় একটাই এ বাগানে যদি কেও ঢুকে পরে ? এ বাগান হয় ধূসর মরুভূমি? লুটপাটে মৃত্যুভূমি তৈরী হয়? নির্মম সত্যে আজ।
এ বাগানে সুখ নেই। পাখিরা আসে না। মাটি রুক্ষ হচ্ছে। ফুল শুকিয়ে রূপ বদলাচ্ছে নিজস্ব নিয়ম থেকে। বিরত হচ্ছে সবকিছু। ভেঙে পড়ছে বেড়া। আমি রূপহীন এক আবহে এখন। শুয়ে আছি বুক পেতে উপুড় হয়ে
আর……….
হঠাৎ এক সুন্দর সুবাস অসময়ে আমাকে আকৃষ্ট করছে। আকাশে আজ পূর্ণ চাঁদের আলো। দেখি দুরন্ত গতিতে ডানামেলা পরী তার উজ্জ্বল কাপড় উড়িয়ে ছুটে আসছে আমার দিকে। হাতে বেগুনি রঙের ফুলগোছ। আমার চাহনি অপলক। হাঁটু মুড়ে সে বলে – ওঠো, আমি এনেছি ল্যাভেন্ডার। যার সুবাসে তুমি …….
নামটা কেমন যেন নতুন কিন্তু এই সুবাস আকৃষ্টে আটকে গেছি। চোখ চাহনি গাল ভরা হাসি আর ল্যাভেন্ডারের সুগন্ধ আমাকে ন্যুব্জ থেকে এক সরলরেখায়। গ্লানি মুক্ত।
ধরো এগুলো……….
আমার কাঁপা হাত এগিয়ে এখন।
তোমার বাগান দ্যাখো চেয়ে।
আমি ভুল দেখছি না তো? চোখ রোগড়ে চেয়ে দেখি শুকনো বাগান ভরে উঠেছে ল্যাভেন্ডার ফুল সমারোহে। উড়ছে গন্ধ বাতাসে। সে যে কখন কাঁধে মাথা রেখেছে বুঝতেও পারিনি।
রাতের অন্ধকার মুছে সোনাঝড়া আলো চতুর্দিকে। পাখিরা এসে তাদের ডাক শোনাচ্ছে।
আমি আর্তনাদে আর সে আওয়াজ প্রতিধ্বনিত হলো – কে আছো তোমরা চেয়ে দ্যাখো এ বাগানে রাত নেই আর।