Cafe কলামে – আত্মজ উপাধ্যায় (পর্ব – ২৭)

বিবাহঃ নারী পুরুষের যৌনমিলনের অনুমতি?-১৯

ব্রহ্মচর্য জীবন বা ব্রহ্মচারী হয়ে থাকা সবার পক্ষে সম্ভব হয়না। যারা বনে জংগলে চলে যায় সেখানে নারীর মুখ দেখা যায়না, সেখানে সম্ভব। বা এমন এক এলাকা সৃষ্টি করল যেখানে মহিলারা যাবেনা, নিষিদ্ধ, তেমন জায়গায় সম্ভব। কিন্তু নারীর মুখ স্তন কোমর দেখে ব্রহ্মচর্য পালন করা রীতিমত কঠিন।
ফলে ইতিহাসে আমরা দেখেছি বা বর্তমানেও দেখা যাচ্ছে নানা ধর্মীয় শিবিরে, যারা নারী সংগম বা সংসার বর্জন করে চলবেন মনস্থ করেছিলেন তারা নারীর প্রণয় নিয়ে কালিমা লিপ্ত হয়েছেন। সে খ্রীষ্টান বা হিন্দু শিবির।
তেমনি মহিলারা যারা ইশ্বরের নামে নিজেকে উৎসর্গ করবেন ভেবেছিলেন, জীবনে বিয়ে থা করেননি, ধর্মীয়মঠে বা আশ্রমে ছিলেন আছেন তারাও পুরুষ সংসর্গে পাতকিনী হয়েছেন।
বিয়ে সেই দিক থেকে যৌন সংগম ও সংসর্গকে বিপরীত দুই লিংগের মানুষকে আমন্ত্রণ জানায়, মিলিত হবার।
মুশকিল হল, বিয়ে না করে যৌন সংসর্গে মহিলারা গর্ভবতী হয়ে পরে, সন্তান প্রসব হলে সে সন্তানের পিতৃপরিচয় ছাড়া সমাজ মেনে নিতে পারেনা। তাকে জারজ সন্তান চিহ্নিত করে। এবং সেই সন্তানের ভবিষ্যৎ জীবন নানা সমস্যা ঘিরে থাকে।
রাশিয়া সহ বহু দেশে বিবাহ বহির্ভূত সন্তান সম্পর্কে রাস্ট্র নিয়ম/ গীর্জার অনুশাসন খুব কড়া ছিল। অবৈধ সন্তান যাতে না হয় তার জন্য বিবাহের বাইরে প্রণয় নিষিদ্ধ ছিল ও শাস্তি বা দন্ডনীয় ছিল।
রাশিয়াতে ১৭ শতাব্দীর আগে সাহিত্যে অবৈধ প্রণয় দেখা যায়না। তবু কিছু কিছু প্রমপত্র মহিলাদের পাওয়া গেছে যেখানে ১৪ শতাব্দীর এক মহিলা তার প্রেমিকে উদ্দেশ্যে লিখেছেন, “How my heart burns, as does my body, and my soul burns for you and your body and your look!” (মানে আমার হৃদয় আর শরীর পুড়ছে, আমার আত্মা পুড়ছে আপনার জন্য এবং আপনার শরীর ও আপনাকে দেখার জন্য)। ১৭ শতাব্দীতে হিব্রু ভাষার একটা গল্প পোলিশ তর্জমায় রাশিয়াতে জনপ্রিয় ছিল। সেই গল্পে একটা জায়গায় এক মহিলা বলছে, “প্রিয়তম, তোমার কি পছন্দ, কাকে তুমি লজ্জা পাচ্ছো?” এই বলে সে তার বুকের কাপড় খুলে স্তন মেলে ধরে আপ্যায়ন করল, “ দেখ, এই আমার সুন্দর শরীর, একে ভালবাস”।
সন্তান বিয়ের মাধ্যমেই হবে এই বিষয়ে গীর্জা খুব কঠোর ছিল রাশিয়ায়। শুধু রাশিয়ায় কেন প্রায় অনেক দেশেই বিয়ে বাইরে কোন প্রণয়কে ভাল চোখে দেখতনা। যথেষ্ট শাস্তির বিধান ছিল।
অত্যন্ত ধার্মিক জার আলেক্সি মিখাইলোভিচের (highly pious Tsar Alexey Mikhailovich (1629-1676) রাজত্ব কালে, যৌনজীবন সম্পর্কে সাহিত্যও নিষিদ্ধ ছিল।কোন প্রকার নগ্নতা ছিলনা। ইয়ারোস্লাভেল গির্জার ফ্রেস্কোতে আঁকা এক মহিলাকে নরকে অনাচারের জন্য শাস্তি দেওয়া হচ্ছে: একটা সাপ মহিলার স্তনবৃন্তে কামড়াচ্ছে। A Yaroslavl church fresco of the 17th century মানে এটা একটা সতর্কী করণের ছবি।
ছবিটা হঠাত পালটে গেল ১৯২৪ সাল নাগাদ। ভ্লাদিমীর লেনিন যৌন স্বাধীনতার প্রবক্তা হন। দেখা গেল, সমুদ্র সৈকতে নগ্ন মহিলারা পুরুষের সাথে হুল্লুরবাজি করছে।পুরুষরা মহিলাদের মতো সাজছে। ট্রামে নগ্ন লোকেরা উঠছে। মিখাইল (Mikhail Bulgakov) বিশিষ্ট রাশিয়ান লেখক লিখছেন, এ এক নৈরাজ্যতা, নগ্ন লোকেরা হাতে একটা স্মারক পরে চলছে স্মারকটাতে লেখা আছে, ‘লজ্জা নিপাত যাক’।
একজন সেইসময়কার সৈনিক লিখছেন লেনিনের সময় যৌন স্বাধীনতার অরাজকতা “at 10, I had already been exposed to all kinds Cross-dressing, travesti and gay parties were popular in artistic circles, with even a certain few noblemen having been known for being gay. Party life, often involving multiple partners, was a regular pastime for some. However, male homosexuality was a criminal offense… until Bolsheviks came onto the scene. Ideologically, sexual liberation was one of the key weapons in fighting Orthodoxy, and the old order in general.
মানে এমন চরম যৌনতা এসেছিল, যে এক গ্লস জল যেমন অতি সহজে পাওয়া যায়, তেমনি যৌন স্বাধীনতার জন্য যৌনসংগম অনায়াসে মিলত। এবং বলশেভিকদের মধ্যে প্রথম দিকে পরিবারের নতুন রূপের প্রবক্তা ছিলেন Alexandra Kollontai। Russian revolutionary and later, a diplomat কলোন্টাই (Alexandra Kollontai) ‘নতুন মহিলা’ ​​ধারণার প্রচার করেছিলেন – একজন মহিলা, বিয়ের দাসত্ব থেকে, শোষণের থেকে, গৃহস্থালীর কাজ এবং সন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব থেকে মুক্ত; এই সমস্ত কাজ অবশ্যই সমাজ এবং রাষ্ট্র দ্বারা নেওয়া উচিত। তারা বাচ্চাদের পড়াশোনা (যৌনতা সহ) গ্রহণ করবে, দেশব্যাপী ক্যাটারিং শিল্প, সমষ্টিগত আবাসন, পালনের যত্ন এবং এমন কিছুর দিকে এগিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করবে।
কলোনটাইয়ের কাছে প্রেম মুক্ত ছিল- বিবাহের স্থান হবে নাগরিক অংশীদারিত্বের । অর্থাৎ যে কেউ যার তার সাথে সেক্স করতে পারবে। “৮ ই মার্চ যেদিন মহিলা শ্রমিকরা রান্নাঘরের দাসত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। চিরাচরিত প্রথা রহিত করে মহিলারা নতুন কিছু রান্নাঘরের বিকল্প ভাবতে চেয়েছিল। বলশেভিকরা এমন কিছু ভাবতে পেরেছিল যা আমেরিকার লোকেরাও তা ভাবতে বহু বছর নিয়েছিল। নীচে একটা পোস্টার রান্নাঘরের দাসত্বের বিরুদ্ধে।

চলবে

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।