গারো পাহাড়ের গদ্যে অমিতাভ সরকার

শ্রদ্ধার এস জি স্যারকে 

 

শব্দের ব্যস্ত গতিপথের ভ্রাম্যমাণ রাস্তায় শীতের মেঘজমা দুপুরের মেঠো ট্রেনে আপনার সাথে আমার দেখা। আজকে, কিছুটা অকস্মাৎই। এবং সেটা স্তব্ধতার পর্দা জড়ানো। কিছুটা বিষণ্ণতা, আবার আনন্দ সৌভাগ্যেরও।

আপনি বা আমি কেউই খুব বেশি কিছু বলিনি।

বলার তেমন যে কিছু ছিল, তাও নয়।

আপনি কাজে যাচ্ছিলেন। আমিও হয়তো তাই।আমরা কাজের পিছনে ছুটি, না কাজ আপনার পিছনে ছোটে সেটা বোধকরি আজও ঠিকঠাক  বুঝে উঠতে পারলাম না, সেদিনও পারিনি।

 

এক সময় স্যার, আপনি আমার, আমাদের জন্য অনেক করেছেন, সবই স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে আছে, ছিল, থাকবেও।

আজ আপনি আমি, একই ট্রেনে পাশাপাশি, আলাদা পথের যাত্রী। মনের চিন্তার প্রেম অভিমুখ সময়ের নিগূঢ় বাস্তব বেলার ছটফটানি গন্তব্যের খোলা জানালায় সত্য জারিত আলোর ঈষৎ শান্তি আভার খোঁজে পাড়ি দিয়েছে  ভিন্নতার দূর পরদেশে।

ট্রেনটা ক্যান্টর্মেন্টের আগে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল, মনে হচ্ছে আরও একটু সিগনালে দাঁড়িয়ে থাকতেই পারত।

 

আমাদের এতটা পথ দেখিয়ে চললেন, অথচ আমরা আপনার জন্য কিছুই করতে পারলাম না।

দিনের শেষে আপনি আমার স্যারই ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন।

এই পথও আপনারই দেখানো।

আপনার বিজ্ঞান সাধন পথে আমার আর যাওয়া হল না (ক্ষমা করে দেবেন),

কিন্তু ভবিতব্যের এই সাহিত্য রথচলায় অন্তরের অব্যক্ত কষ্টের ফুল ফোটানো সন্ধানী খুশি মরু তৃষ্ণা আপনার সাথে আমাকে আজ দেখা করালো।

আপনি মানুষ ভালো, আর ভালো বলেই এত কষ্ট পান, বা পেয়ে চলছেনও। আমরা তো এমন হতে পারি না।

 

আপনার সাথে দেখা হওয়ায় এখন মনে হচ্ছে যাওয়াটা সত্যিই সার্থক হল।

ভালো থাকবেন।

সবার সামনেই না-হয় প্রণাম করতাম, আপনি আর সেটা করতে দিলেন না, যদিও এতদিন পরে এসে সবটা মুখে বলা বা লোক দেখিয়ে খুশি বোঝানোর প্রচারের প্রয়োজন পড়ে না।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।