বিজয় হস্টেলে ফিরে গেলো আজ তার কাছে ফোন নেই , মন মেজাজও ভালো নেই কি ভাবে যে এমন ঘটনাটা ঘটলো , এখন ওই হস্টেলের ছেলেরা সব ভয়ে ভীত , কি হচ্ছে কেউ বুঝতে পারছে না । হস্টেলের অনেক ছেলে বিজয় কে দোষী সাব্যস্ত করছে দুজন বন্ধু মারা গেলো অথচ এক ঘরে থেকে কেন বিজয় কিছু বুঝলোনা এটা কি করে সম্ভব! বিজয়ের আজ তার রুমে শুতে যেতে ভয় করছে , কিন্তুু অন্য রুমে শুতে যাবে বা কি করে কেউ তো তার সাথে ভালো করে কথা বলে না । একটা চেয়ার নিয়ে বিজয় বারান্দায় বসলো বাইরের হাল্কা হওয়া তার গায়ে লাগছে , সারা দিন সে থানাতে ছিলো মাথাটা তার খুব ধরেছে ক্লান্ত শরীরে যখন ঘুমের দেশে পাড়ি দেবে ঠিক তখনি একটা নরম হাত যেন তার মাথাতে স্পর্শ করলো । বিজয় আলতো করে চোখ খুলে দেখলো মিম তার পাশে দাড়িয়ে । মিম তার চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে সে এক গভীর আরাম অনুভব করছে তারপর ঘুমিয়ে পড়লো ।
তখন সকাল ৭টা বাজে, বিজয় ঘুম থেকে উঠে পড়ে দেখে সে বিছানাতে, সে তো বাইরে চেয়ারে বসে ছিল এইখানে এলো কি করে? কিছু মনে করতে পারছে না সে আর । বাইরে থেকে খুব চিৎকারের আওয়াজ আসছে বিজয় তাড়াতাড়ি করে বাইরে আসে , বিজয়কে দেখে কিছু লোকজন তেড়ে আসে ” মার ! মার ! এই সেই ছেলে ” বিজয় কে উদ্দেশ্যে করে সবাই ইট পাথর ছুঁড়তে থাকে , পিছন থেকে কেউ একজন বিজয় এর মাথায় ভারী কিছু দিয়ে মারে বিজয় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । হস্টেলের কিছু ছেলে বিজয়কে ওদের হাত থেকে রক্ষা করতে গেলে ও পারলো না । ঘটনা ঘটার পর পুুুুলিশ আসে। তখনও অমিত আর রাহুলের বাড়ির লোকজন সুপারকে ঘিরে রেখেছে । বিজয় রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছে তখনও , পুলিশ তাড়াতাড়ি তাকে তুলে নিয়ে হস্পিটালে যায় অ্যাডমিট করে । রাহুল আর অমিতের মৃতদেহ দুটো পরিবারের হাতে তুলে দেয়। আর যারা বিজয়কে মেরেছে তাদের মধ্যে দুজনকে পুলিশ এরেস্ট করে । হস্পিটালে দুচারজন বন্ধু থাকলো যতই রাগ থাক এক সঙ্গে তো আছে অনেক দিন ধরে এমন ভাবে কাউ কে কষ্ট পেতে দেখতে পারবে কি কোরে। বিজয়ের বাড়িতে খবর গেলো বিজয় খুব গরিব ঘরের ছেলে ওর বাবা নেই , ওর মা কাঁদতে কাঁদতে ছেলের দেখতে আসার জন্য বের হলো । বিজয়ের অবস্থা খুব একটা ভালো নয় আইসিইউ তে রাখা হয়েছে , বিজয়ের রুমে একজন নার্স কে রাখা হয়েছে রাতের ডিউটিতে। রাত তখন ১২টা ৩০ মিনিট নার্স বিজয়কে একটা ইঞ্জেকশন দেবে বলে রুমে যায় , গিয়ে দেখে বিজয়ের রুম অন্ধকার পুরো , “এটা কি করে সম্ভব পুরো হস্পিটালে তো আলো আছে তাহলে এইখানে অন্ধকার হলো কি করে “? নার্স রুমের মধ্য একটা সবুজ আলোর আভা দেখতে পেলো তাই সে রুমের মধ্যে প্রবেশ করে । রূমে প্রবেশ করতে তো তার চোখ দাড়িয়ে যায় , বিজয়ের রুমের পাশে যেন কেউ আছে, কিন্তু সে তো কোনো সাধারণ মানুষ নয় চোখ থেকে নীল আলোর রশ্মি বের হয়ে আসছে, আর রক্তের ফোঁটা চোখের পাশ দিয়ে বয়ে পড়ছে। নার্স কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো তারপর তার চোখে সব অন্ধকার আর ধোঁয়া হয়ে গেলো আস্তে আস্তে।