হৈচৈ ছোটদের প্রবন্ধে অভিজিৎ দত্ত

ইতিহাস ও তাৎপর্য

এবছর ক্যালেন্ডারে বৃহস্পতিবার (১০/০৭/২৫) গুরুপূর্ণিমার দিন পড়েছে। ভারতীয় সংস্কৃতিতে গুরুপূর্ণিমার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে।ভারত,নেপাল, ভুটানের হিন্দু, জৈন ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা একটি বিশেষ উৎসব হিসাবে গুরুপূর্ণিমাকে পালন করে। হিন্দুধর্মে অনেকে দেবাদিদেব মহাদেবকে প্রথম গুরু হিসাবেই মানেন। হিন্দু সনাতন ধর্মের সম্প্রদায় শৈব মতে এই তিথিতে শিব দক্ষিণামূর্তি রূপ ধারণ করে ব্রহ্মার চারজন মানসপুত্রকে বেদের গুহ্য পরম জ্ঞান প্রদান করেছিলেন। দক্ষিণামূর্তি সকলের আদিগুরু। শৈব বিশ্বাস অনুযায়ী এই দিনটি দেবাদিদেব শিবের প্রতি সমর্পিত। এটি সাধারণত পূর্ণিমার দিন উদযাপিত হয়। অনেকে একে ব্যাস পূর্ণিমাও বলে। যেহেতু মহাভারতের রচয়িতা ব্যাসদেব এই দিন জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বেদের সংকলন ও তিনি এই দিন করেছিলেন। এইজন্য একে ব্যাস পূর্ণিমাও বলাহয়।গুরু শব্দটি গু এবং রু এই দুটি সংস্কৃত শব্দ দ্বারা গঠিত। গু শব্দের অর্থ অন্ধকার এবং রু শব্দের অর্থ আলো অর্থাৎ যা অন্ধকারকে দূরীভূত করে। কাজেই গুরু শব্দটির দ্বারা এমন একজন ব্যক্তিকে নির্দেশ করে যিনি অন্ধকারকে দূরীভূত করেন।গুরুপূর্ণিমার মূল কথা হল এইদিন গুরু-শিষ্যের আত্মীক সংযোগ হয়।শিষ্য যেমন গুরুকে প্রণাম করে তাকে শ্রদ্ধা ও ভক্তি নিবেদন করে, গুরুও তেমনি শিষ্যকে আর্শীবাদ করে তার সাফল্য ও সুখ কামনা করে।বর্তমানে গুরু-শিষ্যের পারস্পরিক সুসম্পর্কে মনে হয় ফাটল ধরেছে।তাই বোধহয় সমাজের এত অধোগতি বা অবনমন দেখা দিচ্ছে।অন্ধকার থেকে আলোর দিকে যাওয়ার পরিবর্তে আমরা যেন আরো অন্ধকারের দিকে চলে যাচ্ছি। এরজন্য কী দায়ী পাশ্চাত্যের অপসংস্কৃতি , ভোগবাদ ও আত্মকেন্দ্রিকতা?এইজন্যই আমাদের দরকার ভারতীয় সভ‍্যতা ও সংস্কৃতিকে সঠিকভাবে জানা ও তাকে মানা।তবেই গুরুপূর্ণিমা পালন সার্থক হবে।এইজন্যই স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন জড়ের শক্তিতে নয় আমাদের জাগতে হবে চেতনার শক্তিতে। আর রামকৃষ্ণদেব বলেছিলেন, তোমাদের চৈতন্য হোক। গুরুপূর্ণিমার দিন সকল গুরুদের প্রণাম ও শ্রদ্ধা জানিয়ে বলি-গুরু ব্রহ্মা, গুরু বিষ্ণু,গুরুদেব ও মহেশ্বর/গুরুদেব ও পরম ব্রহ্ম /তস্ময় শ্রীগুরু নম, নম।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *