গারো পাহাড়ের গদ্যে আবু আফজাল সালেহ

দার্জিলিংয়ের মনীষা

দার্জিলিংয়ের যাওয়ার অসামাপ্ত গল্পটা বলি আজ।
এনজেপি থেকে শিলিগুড়ি পেরিয়েই
একদিকে মেঘ-বরফের রাজ্যে গ্যাংটক
সোজা যাচ্ছি– শৈলশহর দার্জিলিং।
সুকনা পেরিয়েই মূল রোমাঞ্চটাই শুরু
চোখঝলসানো ও মনকাড়া সবুজ-ঢেউ, পাখির ডাক
পাইন আর ঝাউবন চিরে
কালোস্রোতের আঁকাবাঁকা পথ
ডানদিকের পাহাড়গায়ে হঠাৎ-হঠাৎ ঝরনাস্রোত
নেমে আসছে আমাদের দিকে
দম-বন্ধ-করা সৌন্দর্য বিছানো
দুই চোখ সৌন্দর্য গিলে খাচ্ছে
এই বৃষ্টি এই মেঘ, এই সোনারোদ
‘হিলকাট রোড’ যেন কালো সিঁড়ি।
ভারতের উচ্চতম রেলস্টেশন ঘুম পেরিয়ে
কার্শিয়ং পেরিয়ে
ভারী বাতাসে শান্ত-কোলাহল।
সুকনায় রোদ, ঘুমে বৃষ্টি, কার্শিয়ং-এ মেঘ
ওই যে দূরের সোনারঙা কাঞ্চনজঙ্ঘা
সোনা ঝরছে, এদিকে মেঘবিন্দু
আবাসিকের কার্নিশ বেয়ে জলফোঁটা,
মেঘের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি হঠাৎই
হুড়হুড় করে নামছে ঠান্ডা।
মেঘবিন্দু– গাছের পাতায়, কার্নিশে, পাইনগাছে
পাশ দিয়েই ‘হিমালয়ান রেলপথ’
স্থাপনাগুলো যেন সবুজসাগরে ভাসমান বস্তু
কী রোমাঞ্চ! আহা, কী মজা!
যাচ্ছি তো যাচ্ছিই…
এভাবেই দার্জিলিংয়ের কাছাকাছি
মেঘঝড়, অস্পষ্ট কোলাহল, পর্যটকের ভিড়
পাহাড়ভাঁজে বসত, বাজার
মধ্যপথেই হল্ট, চোখে ‘মিরাকল’
চোখ আটকিয়ে দিল কে যেন!
ছিপছিপে অষ্টাদশী,
একি আফ্রোদিতি? নাকি ভেনাস?
দার্জিলিংয়ের যাত্রা থেমে এল এখানেই
শরীর চলছে ঠিকই, মন থেকে গেল সেখানেই।
হঠাৎ মায়াবী এক ডাক, হয়তো তার বাবার,
মনীষা, ও মনীষা
রাজহংসী ফিরে যাচ্ছে পথ ভেঙে ভেঙে।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।