সাপ্তাহিক ধারাবাহিকে সুদীপ ঘোষাল (পর্ব – ২৮)

সীমানা ছাড়িয়ে

আর কিছু বলব না। আপনারা সকলেই বুদ্ধিমান। সবাই আমার প্রণাম নেবেন-এই বলে অংশুমান সভা থেকে নিচে নামল। চা-বিস্কৃত খেলাে তারপর সভা শেষ হলে বাড়ি ফিরল। তখন প্রায় দশটা বাজে। পরের দিন স্কুল আছে। তাড়াতাড়ি খেয়ে শােয় অংশুনান। মা ও ছেলে তখনও টি.তি, দেখছে। দু-দিন পরে ডঃ স্বপনকুমার ঠাকুর, আদিত্য ও অংশুমান একটি গ্রামে যাবে ঠিক করল। ডঃ ঠাকুর প্রত্নগবেষক। তিনি বললেন, “ভারতবর্ষ নদীমাতৃ দেশ। বড় বড় নদীর ধারে বড় বড় বসতি তৈরি হয়েছে। আমরা যেখালে যাব সেই গ্রামটিতে গঙ্গা নদীর নিকটবর্তী গ্রাম। আদিত্য বলল, “শুনেছি ওই গ্রামে একটা পুরােনাে বাড়ি আছে। ও বাতে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন আছে। আমরা তার ছবি তুলে নিয়ে বললাম, “তাই হবে। এই পুরােনাে বাড়িতে রাজরাজেশ্বরীর মূর্তি আছে। আবার ওখানে একটি পরিবার বাস করেন। তারা বলেন, এইটি পাঁচশাে বছর আগেকার বাড়ি।”
শঙ্কর বললেন, “তথ্য থাকলে তবেই এসব কথা বিশ্বাস করা যাবে। | ঠাকুর বললেন , কথা দিয়ে উপন্যাসের মতাে এইসব কথা বলা যায় না। তার জন্য উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণাদি প্রয়োজন।”
ওরা সবাই গিয়ে একবার গ্রামে ঘুরে আসার মনস্থির করল। অংশুমান আবার আদিত্যর কাছে গেল। আদিত্য খুব ভালাে গান করে। “নির্মল বাংলা’ নিয়ে একটি গান লিখেছে খুব সুন্দর। অংশুমান গান গাইতে জানে। তবু একবার গানটি গাইবার চেষ্টা করল। অংশুমানকে উৎসাহ দেয় সবাই খুব। গান, কবিতা, গল্প, উপন্যাস লিখতে বলে। অংশুমান উৎসাহ পেয়ে বাড়ি এসে অনেক পড়াশােনাও করে। বর্তমানে দেশে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে তার বর্ণনা করতে গেলে খুন, ধর্ষণ লেগেই আছে। সংবাদপত্র খুললেই শুধু রক্তারক্তির খবর। মানুষে মানুষে হানাহানির খবর। অংশুমানের ভালাে লাগে না। দেশে শান্তি আসবে। সবাই সুস্থভাবে খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকবে। বাঁচো এবং অন্যকে বাচতে দাও’—এই আদর্শ নিয়ে সবাই চলবে। তবে হবে সুস্থ। দেশের সুস্থ নাগরিক। অংশুমান জানে সেই দিন নিশ্চয়ই আসবে। এখনও শাসকদলে অনেক ভালাে লোক আছেন। তারাই একদিন ছাত্র-যুব সবাইকে এক ছাতার তলায় এনে একতার গান গাইবেন। আজ অংশুমান পুরুলেতে এসেছে। বড়দা দিলীপ বলল, “সৈকত আর বৌমাকে একদিন পাঠিয়ে দিস। অনেকদিন আসেনি ওরা।” অংশুমান বলল,ঠিক আছে।”রিলিফ লিলুয়া থেকে স্ত্রী-পুত্র-কন্যাসহ পুরুলে এসেছে। অংশুমানের স্কুল। বর। ভাবল বড়দা মাঝে মাঝেই সৈকতকে যেতে বলে। এইসময় পাঠালে বর সঙ্গেই দেখা হয়ে যাবে। অংশুমান দেবীকে বলল, “যাও তুমি আর সৈকত একবার পুরুলে থেকে ঘুরে এসে।”সে বলল, “তাহলে তুমি চলে যেও না ঘর ফাকা রেখে। যা চোরের ম” অংশুমান বলল, “না না, আমি বাড়ি থেকে বেরােব না। দু-দিন সবাই যাও তােমরা ঘুরে এসো। পর আর সৈকত সকালবেলা বেরিয়ে পড়ল। অংশুমান নিশ্চিন্ত হল,আর নয় এখন বেড়াতে যেতে পারে না। যখন মায়াপুর গেছি তখন মনে আছে, নজনেই গেছিল। তখন একটা ঘরে ছিল তিনজন । এখন যা হােক দুটো-একটা জিনিস হয়েছে। চোর। এসে নিয়ে তাহলে আর বােধহয় অংশুমান ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। পুুরুলেতে গিয়ে সৈকত আর ইন্দ্র দু-দিন খুব ঘুরে বেড়ালাে। সেই নতুনপুকুর , হাড়ি পাড়া, পুজো বাড়ি, হাইস্কুল আর দক্ষিণের খােলা মাঠ। সেখানে। গিয়ে কি করে যে সময় কেটে যায় পাখির গান শুনে, বাতাসের শিহরনে। তা ওরা বুকতেই পারল না। সৈকত আর ইন্দ্র যেন অংশুমান আর বিডি ছােটবেলার ছবি। তারা যেভাবে যীতলায় বেলগাছের ডালে উঠে খদের গায়ে লাফ মারত। সৈকত আর ইন্দ্র আরও অন্যান্য বন্ধুদের সঙ্গে একইরকমভাবে খেলে বেড়াচ্ছে। সেই ছোটবেলা, ছোলামুড়ি আর লুকোচুরি খেলার দিন ফিরে এসেছে। ঘেঁটুফুল, ঘাসফড়িং সবকিছুই নতুন করে চেনা এক ধারাবাহিক পদ্ধতি। এত শিশু আসে আর এক শিশু বড় হয়ে যায়। আবার তার জায়গায় আর এত শিশু এসে ফনি ধরে, লুকোচুরি খেলে, ডিগবাজি খায়, হাওয়াতে দোলে। এ-এক চিরন্তন প্রবাহ জেগে ছিল, জেগে আছে, জেগে থাকবে। এক অসীম নিরবছিন্ন খেলা। দু-দিন পরে আবার ওরা কাটোয়াতে ফিরে এল। কাটোয়াতে এসে প্রায় দু-দিন ধরে সৈকত বলছে, “বাবা, ঠাকুমার জন্যে মন খারাপ করছে, ইন্দ্র জন্যে, বাড়ির সবার জন্যে, ষষ্ঠীতলার জন্যে, নতুন পুকুরের জন্যে মন খারাপ করছে?”অংশুমান বললাে, “মন খারাপ কোরাে না। আবার সুযােগ পেলে ওখানে চলে যাবে। অংশুমান বাবার চাকরিসূত্রে বিভিন্ন জায়গায় কাটিয়েছে। অংশুমান ও তার বন্ধুরা অনেক জায়গায় ঘােরাঘুরি করেছে। পুরী, দার্জিলিং, দিঘার সব জায়গায় গেছে। এখন ঘরে বসে অবসর সময়ে এইসব কথা লেখে। একটা জীবন একটা উপন্যাসের মতাে। অনিলদার বাড়ি। অনিলদা বলেন “চলো অংশুমান, আজ আয়ের সাহিত্য আসর। চলো ঘুরে আসি। অংশুমান বলল, “চলুন ভালােই হবে, একটা কবিতা পাঠ করব। আজয়ের আসরে গিয়ে ওরা দু-জনে কবিতা পাঠ করল। তারকেশ্বর বাবু বললেন ,, “পরবর্তী মাসের আসর কাটোয়া মহুকুমা মন্দিরে অনুষ্ঠিত হবে। সাহিত্য আসরেই পরবর্তী মাসের আসরের দিন ঘোষণা করা হয়। আবার মাসের প্রথম শনিবার বিজ্ঞান পরিষদে অনিল ঠাকুর সাহিত্য আসরে গিয়ে অনুগল্প পাঠ করল। অনিল ঠাকুর বললেন, আমরা একসঙ্গে বাড়ি যাবাে। তুমি চলে যেও না।” অনুষ্ঠান শেষে ওরা বাড়ি এল, কবি ও গবেষক অনিল ঠাকুর সতিই খুব গুণী মানুষ।
অংশুমান কথা বলে মোবাইল রেখে দিল। তারপর দেবীকে বল,পুরুলেতে জেঠুমা মারা গেছেন। এই দশ মিনিট আগে।” তখনও খিচুড়ি, ডিমভাজা, আলুভাজা খাওয়া হয়নি। সব কুকুরকে খাওয়ানো হল। সঙ্গে সঙ্গে তিনজনেই রওনা হল পুরুলে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে। প্রায় ধু-ঘন্টা পরে ওরা পুরুলে পৌছে গেল। পাশের বাড়িতে জেুমা থাকতেন। সুই ছেলে বুড়ো আর ভােম্বল। ভবদেব মারা গেছে আগে। ওরা মোট তিত এক বোন। বড়দা, বাবু, অংশুমান সবাই কাটোয়ার শানে যাওয়ার নিল। বিলিফদাকে ফোন করে দেওয়া হয়েছে। রিলিফদা বলল, “আ বোলপুর এসেছি। রাস্তায় ঠিক দেখা করে নেব। তারপর তোমাদের স ববাে।” বাবা মারা যাওয়ার সময় সব ভাইরা একত্রে শাক পালন করেছেন। আবার জ্যাঠাইমা মারা যাওয়াতে সবাই এক হল। কাটোয়ার শ দাহকার্য সমাপ্ত করে সবাই গঙ্গান্নান করার পর সাদা কাপড় পড়শীরা যারা এসেছিলেন সবাই গঙ্গন্নান করে নিলেন। গ্রমের বাবু বাবন , মলয়, নিতাইদা, গোপালদা, , প্রশান্ত, ও আরও অনেকে এসেছেন।এইভাবে কথাবার্তা চলছে। এদিকে দেবী, বড় বোন মামণি, ছােটো বােন পপন ও তাদের ছেলেমেয়েরা, জমাইরা সবাই এসেছে। ঘর মানেই তো মানুষের সমাহার। যে ঘরের মানুষ যত ভালো, সেই ঘর ততটাই সুন্দর। বাই একসাথে এখন থাকবে দু-চারদিন। কারণ চলে গেলে আবার যে লেগে যাবে। আবার কবে দেখা হবে কেউ নিয়ে খুব তাড়াতাডল বাণুর বন্ধু মলয মণল মলয় ও অংশুমানের ভাই-এর ম।। প গাশানে গিয়ে অনেকক্ষণ হরিনাম হয়েছিল। হরিনামের মল যে ছিল ভইা। কাটোয়া শশান গঙ্গার প্রায় কাছাকাছি। তখন ইংলফটিক In tv না। কাঠের আগুনে বা কয়লার আগুনে দাহকার্য সমাপ্ত এ। । ভবা পাগলার সেই বিখ্যাত গান মাইকেে বাজছে। ” ও আমার ব্যথা এভাবে চলে গেলেন তা নয়, যেতে হবে আমাদের আমরা শুধু আমার আমার করেই কাটিয়ে দিই সময়। বৈরাগ্য হলেই তো হবে না।এমন আবেগ আমাদের, মানুষদের করা হল হিংসা,, লোভ পাপ করে সতিকারে মানুষ এখন। আর কিছু হতে না পারি এক এ কারও মাথা নেই। ফলে থেকে সবাই যে যার চলে গেল। পুরুলেতে থাকল বাকি সংসার পরিজন। অংশুমান নিজের পরিবার। । শহরে চলে এল। দেবী তাে ঘরে এসেই বুল ঝাড়া, ঝটি দেওয়া করতে লাগল। সৈকত একটা গল্পের বই নিয়ে বিজ্ানায় পড়তে । অংওমান বাজারে গেল কিছু বাজার করে আনার জন্য। ঠিকঠাক করে রবাি হতে প্রায় বেলা দুটো বোঝা গেল। দেবী কল, “সৈকত আয় খাবি আয়।সৈকত ডাকল বাবাকে। খওয়া-াওয়া হয়ে গেল। দুপুরে একটু শুয়ে সকলে বিশ্রাম করে নিল। বিলকেলায় দেখি ও অংশুমান হাঁটতে বেরােয় আর সৈকত খেলতে যায়। নাড়ের প্রতিবেশীরা সকলে খুব ভালােবাসে। তারা বলে, “আপনারা সকলে বেড়িয়ে যাবেন না। একজন ঘরে থাকবেন।”
ঘরে মানুষ থাকলে চোর সাধারণত ঢুকতে সাহস পায় না। | প্রায় মাস হয়ে গেল জেঠাইমা মারা গেছেন। সবই ঠিকঠাক চলছে। একদিন সকালে উঠে দেবী বলল, “ওঠো, দেখাে আমাদের জলের কল চুল নিয়ে গেছে। রাত্রে চোর এসেছিল।”আমি রাতে কোনাে শব্দ পাই নি। কিন্তু কি করে যে চোরে কল তুলে নিল কোনাে শব্দ না করে তা আজও রহস্য থেকে গেল ওদের কাছে। সংসারে। আলো-মন্দ লোক আছে। সবাই তাে আর দয়ালু মানুষ হয় না। জল দেওয়ার জন্য একটা লােক রাখল অংশুমান। সে দু-বেলা রােজ খাবার জল দিয়ে যায়। আসনপন্ন যে, কাপড় কাচা প্রভৃতি কাজের জন্য একটা কুয়াে আছে। দেবী। এখানেই মায়। আ রাত্রে অংসুমান একবার ছাদে এল। আকাশে অসংখ্য তারা। শ কে তাকিয়ে অংশুমানের মনটা ভালাে হয়ে গেল। কোনাে ব, কোনো সমস্যা এখন আর নেই। তার অন্তরে এখন আকাশের সুর। গছে। সে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নক্ষত্রের দিকে। তার মন সে টিনিন আকাশের নক্ষত্র ছুঁতে চায়। তখন আরও স্বল্প দেখে। সে নক্ষত্র রয়েছে। সারা বিশ্বের ভালো মন্দ র আর তার উপর ন্যস্ত হয়েছে। সেই অবস্থায় অংশুমান পৃথিবীর। নর মানচিত্র মুছে ফেলে একটা গ্লোবে পরিণত করতে চায়। পৃথিবীর ওয়েব থেকে আর মােবাইলে গান পাঠানাে যায় ঠিক সেইরকম মানুষের হৃদয়ের মিলনের সুর সারা দুনিয়ার মানুষের মন সেনানে যাবে না কোনাে হন্দ, ইবা কিভাবে জাতের নামে বতি। ভারতবর্ষের সনাতন ধর্ম, ঐতিহ্য, সংস্কার পৃথিবীতে , ভারতবর্ষের আদর্শে অনুপ্রাণিত সারা পৃথিবী, সেখানে সবাই কে ক, মহিলার সম্মান আর শিশু-যুবকের অধিকার। অংশুমান আয় নিচে শুয়ে ভাবছে তার অতিক্রম করে আসা জীবনের কথা।কতউল জীবন-মৃত্যুকে উপেক্ষা করে আজও এই বয়সে নবীন সবুজ মনে পৃথিবীর আজ তার কোনো দুঃখ নেই, শােক নেই। সারা জীবনের অভিজ্ঞতাই তার আজ পাবো। এক দুর্নিবার আকর্ষণে তার মন ছুটে চলেছে অজানা অসীম আনন্দের সরােবরে। সেখানে সে রাজহংসের মতাে শুধু দুধের বুকে, জীবনের সার বস্তুর কথা ভাবে।ও মন সওদাগর / কেন মিছে লত র / দেশের মানুষ দেশে ফিরে চল”। সারা পৃথিবীর মানুষ আহ তার সুরে সুর মিলিয়ে বলে চলুক এক মন্ত্র, আমরা এখানে এসেছি দু-দিনে অতিথি হিসাবে। এখানে হিংসা, মুগার কোনাে জায়গা নেই। চলে যেতে হবে আমাদের সকলকে। পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবার আগে এসাে আমরা সবাই মানুষের কল্যাণের জন্য পৃথিবীকে আরও সুন্দর করে তুলি। সারা পৃথিবী জুড়ে মানব-মনের ভাব প্রকাশের জন্য একটা ভাবা হােক, যে ভাষা ভৌত জগতের মর্ম সীমা অতিক্রম করে যাবে। মরমে প্রবেশ করে নামী মনের গভীরে সুর তুলবে। স্বপ্ন দেখার তাে কোনাে বিধিনিষেধ নেই। বু আগমনের মনে হয় এই স্বপ্ন একদিন সত্য হবে। রাষ্ট্রবিরােধী, সন্ত্রাসবাদী শব্দগুলি অবলুপ্ত হয়ে রাষ্ট্রকল্যাণকারী, আশাবাদী মানবিক পৃথিবী এক হয়ে যাত্রা শুরু করুক। অংশুমান যখন ছোট ছিল তখন দেখেছিল মানুষের মনে হিংসা, ঘৃণা কম ছিল। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে আলট্রা ভায়ােলেট রে যেন সমগ্র বিশ্বকে গ্রাস কর শেষ করে দিতে চাইছে। আমিন সহজে পৃথিবীকে ধ্বংস হতে দেবে না। তার জন্য সে তার সমস্ত দিতে প্রস্তত, ধবধবে সাদা পােশাকে আজ অংশুমান মন্দিরে বলে প্রার্থনা করছে পৃথিবীবাসী শাস্তির জন্য। তক্তিপনূত সামাজিক এবং নান্দনিক জন আন্দোলনের মাধ্যমে পৃথিবীতে শুভ হবে। স্বেচ্ছা পরিশ্রমের ফসল পাবে পৃথিবী। দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অবলুপ্তি ঘটবে। স্বেচ্ছা পরিশ্রমের অতীন্দ্রিয়তার স্পর্শ পেতে বেঁচে থাকার সমস্ত সামাজিক এবং সঙ্গে সঙ্গে অতীন্দ্রিয়তার স্পন গুণাবলির প্রকাশ ঘটবে। গােলােকায়নের এই সুন্দর সাবলীল স্বপ্ন সাংস্কৃতিক গুণাবলির প্র অংশুমানকে আচ্ছন্ন করে তুলেছে। আজ সে রাত্রিতে স্বপ্নে দেখেছে একদিকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর থার উপর শ্রীকৃষ্ণ ভগবান অংশুমানকে সাহস দিচ্ছেন, অভয়বাণী শােনাচ্ছেন এগিয়ে যাওয়ার মন্ত্রে। অংশুমান বুঝে গেছে আর বেশিদিন নয়। সমগ্র পৃথিবী সংঘবদ্ধ হবে। পৃথিবীজোড়া মানবজাতি ধীরে ধীরে একত্র হবে। বিশ্ব মানবতার এক ধর্মে, এক ভাবনায়। এই আত্মিক শক্তির আড়ালেই রয়েছে মানুষের প্রাণের স্পন্দন, শাশ্বত সুন্দরের বীজমন্ত্র।আমাদর ছোটবেলার বন্ধু বিশু একবার জাপান দেশ ভ্রমণ করার আবেদন করল বন্ধু কমিটিকে। রমেন বললো, খরচ অনেক। আদৃজা বললো, এক একজনের বিমানে আসা যাওয়া আশি হাজার টাকা ভাড়া লাগবে। বিশু বললো, আমাদের বন্ধু কোঅপরাটিভে অনেক টাকা জমেছে। পাঁচবছর কোথাও যায় নি। এবার টাকাগুলো ভ্রমণে খরচ হবে আর বাকিটা দান করা হবে, গরীবদের, ফিরে এসে।বিশুর মুখের উপর আমরা কেউ কথা বলি না। তার কথাই ফাইনাল হলো। আদৃজা, রমেন, বিরাজুল, বিশু ও আমি দমদমে পৌঁছে গেলাম এক শুভদিন দেখে সকালবেলা। অবশ্য আগে থেকে ভ্রমণ সংক্রান্ত ভিসা সমস্যা ও আনুষঙ্গিক আইনি কাজ মিটিয়ে নিয়েছে বিশু। বিশু লাগেজগুলো একসঙ্গে বিমানবন্দরে ট্রলারে চাপিয়ে পৌঁছে গেল ওয়েটিং রুমে। চেকিং পর্ব সেরে আমরা নিশ্রাম নিচ্ছি। হঠাৎ গোপাল ভিন্ডার সঙ্গে দেখা। আমাদের রাজস্থানী বন্ধু। একসাথে আমরা মেসে ভাড়া থাকতাম কলকাতার আমহার্ষ্ট স্ট্রীটে। গলির ভেতরে ভাঙ্গাচোরা, স্যাঁতসেতে এক ভুতুড়ে বাড়িতে আমরা থাকতাম কয়েকজন বন্ধু। গোপাল বললো, ক্যায়সা হো তুমলোগ?
বিশু বললো, বাড়িয়া ভাইয়া। আপলোগ ঠিক হো তো।
গোপাল আমাদের সকলকে কফি খাওয়ালো। কফি পানের পরে বিদায়পর্ব।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।