সুভানের গুচ্ছ কবিতা

নিঃস্বগমক

একটাই ছায়া হেঁটে যায়, শীত ও ক্রিসমাসের মাঝে।
ঘরকালো নিমতিতা সাধন আমার, তবু তার পিছুটানে মরি;
বিষাদ আসলে ঈষৎ খয়েরি বালক, লাল আর সাদা টুপি মাথায়
হাঁটু গেঁড়ে বসে থাকা মায়া। খিদের কিনার, খাদের গভীর,
পাতাকীট ও পঞ্চসুরের নিঃস্বগমক…
যেন প্রেম, তার হায়-হায় বুক ভাঙা মাটি
হরবোলা পুতুলের ঠোঁট ফাটা শীত, ফিকে হয়ে আসো যেন তুমি।
যেন, হারিয়ে ফেলার পর একা, শুধু তোমাকেই খুঁজি ঘনকুয়াশায়।
শীতগ্রাম পার করে ছায়া, বহুদূর বাঁকে হেঁটে যায়।
যেন, দেহ তার কবেকার সম্পর্ক হারায়…

জ্বর

নিচুস্বরে কথা বলা বিকেলের কাছে থাকে মেয়েটি।
ধানিজমি আর ভেজামাটির কাছে বসে থাকে।
আমি হীনহাতে এগিয়ে যেতেই নদী খুলে যায় একে একে।
তার পাহাড়চূড়ায় বরফের রুহানিবাগান,
তবু অভিমানে তার বুকে ভৈরবীআলো ফোটে না।
চোখের পারদ ফুরিয়ে আসা আমারও কাচের মিনারে
আজকাল হুহু জ্বর আসে, শুধু উত্তাপ ওঠে না…

কবি ও বকুল

প্রতিটি কবিতা সভা থেকে বিষন্ন হেঁটে বেরিয়ে আসি আমি
পাথর টুকরো করি, রুমালে লুকিয়ে রাখি কলিজা আমার।
ফলক কুড়িয়ে করে রাখি একএকটি মৃতকবিতার।
এই নির্জনতার শেষে নেশাপাঠ ও এপিটাফ লিখে রাখি।
যে কবিতার জানাজা খুব ধির পায়ে দূরে চলে যায়,
তার খোঁপায় বকুলবাহার,
আঙুলে কাঁপাকাঁপা রাতের লিপি ও পাহাড়…
বুকে বাংলারপাখি…

ইচ্ছেতারা

আমার দেহরাত, স্বপ্ন খাদের কিনারায়
একটি স্থির সমাধিমাত্র; গালিবের ছায়া হেঁটে যায়
আমার বিষণ্ণ কবিতাকলোনী জুড়ে। যেখানে আজ
চাঁদ থাকলেও থাকেনা জ্যোৎস্নার ঢেউ…
ইচ্ছেপূরণ হলে,
ভেঙে যাওয়া তারাটির খোঁজ রাখেনা কেউ।

গাছ ও মানুষ দুজনেই একা

অক্ষর ভেঙে যাওয়া একটা ইমারত
তার দালান জুড়ে শীতের চন্দ্রমল্লিকা।
এদিকে কি অস্থির এক হাওয়া, কাঁপে ক্রমশ।
গাছেরও তো আর পূনর্জন্ম বলে কিছু হয়না।
তবু মনপোড়া উষ্ণতা দিয়ে যায়,  মাঝে মাঝে
গাছেরাও মানুষের মতো একা হয়ে যায়…
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।