সম্পাদকীয়

কাজের চেয়ে অকাজ বেশি করতাম বলেই ছোটবেলা থেকেই ডুব দিতাম খেয়ালের ভেতর। সেসব খামখেয়ালি স্বপ্নগুলো পেখম মেলত প্রজাপতির মতো। কোনও এক প্রজাপতির স্বপ্নে নিজেকেই একদিন এরকম ফিরে পেলাম। বাবার হাত ধরে ভূগোল বইয়ের পাতায় নানা দেশের ছবি। আকাশের একটা দিক দেখিয়ে যখন বলত, ওই ওই দিকে তোর দাদীর বাড়ি। সেই ওইদিকটা আবিষ্কার করতে অনেকদিনই লেগেছিল। বাড়িতে আসত সোভিয়েত রাশিয়া, জাপানের কোনও এক পত্রিকার বাংলা সংস্করণ, বাংলাদেশের গল্প। চোখের সামনে ফুটে উঠত সব লাল নীল সবুজ রঙের দেশ। হ্যাঁ প্রত্যেকটা দেশের রঙ তখন এরকমই ভাবনায় আসত। বাংলাদেশের কথা ভাবলেই শুধু সবুজ আর সবুজ। দাদীর শরীর ছুঁয়ে থাকলে মনে হতো বাংলাদেশের মাটির ঘ্রাণ। একটা ছোট্ট শরীরে দেড়তলা বাড়ির সমান স্বপ্ন। রূপকথার জগৎটা এরকমই ছিল। প্রিয় স্বপ্নের মতো একদিন বুঝে গেলাম পায়ের তলায় সর্ষে জন্ম থেকেই রয়ে গেছে। ভাষা- সাহিত্য-সংস্কৃতি সব কিছুর মধ্যে আপনজনের অনুভব। জাতীয় সংগীতের সময় দুই বাংলাই খুঁজে পায় একজনকে। প্রাণের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
যে ভাষায় কথা বলি সে ভাষাও তো এক। যে ভাষায় লিখি সে ভাষাও প্রাণের ভাষা। সাহিত্যের কোনও দেশ হয় না, হয় না এপার বাংলা ওপার বাংলা। সব এক। মিলেমিশে আছে রক্তে এক ভাষা। ছোট্ট আয়োজনে তাই থাকছে কবিতা, গল্প, ছবি, আলাপ পর্ব। সাহিত্য মেহফিল জমে উঠুক। সমস্ত কাঁটাতার ভেদ করে শান্তি ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বের প্রতিটা কোণে। সবুজ হয়ে উঠি স্বপ্নে এবং পরিবেশের প্রতিও। আবেদন সবার কাছে, নিজের মধ্যের ছোট্ট ‘আমি’র মতো একটি গাছ লাগিয়ে দিন বাগানে। লালন করুন শিশুর মতো। কবিতার মতো বাতাসে মোলায়েম ছন্দ ছড়িয়ে পড়ুক। আমাজনের আগুন আর নয় আর নয়।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।