রম্যরচনা-তে সুমন গোস্বামী

জন্ম বর্ধমানের গুসকরায়।বেড়ে ওঠা গ্রাম্য পরিবেশে। বোলপুর কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এম এ। বাবা ছিলেন শিক্ষক ও সাংবাদিক ফলে রক্তস্রোতে মিশেছে অক্ষরলীপ্সা, ভালোবাসেন রম্যরচনা, ছোটগল্প ও ফিচারে বিচরণ করতে। জলবৎ তরলং তাঁর প্রথম গ্রন্থ। তাঁর ছোটগল্প ঠাঁই পেয়েছে নানা গল্প সংকলনে। "এখন শান্তিনিকেতন" "মাসিক কৃত্তিবাস" ও "বিচিত্র পত্রে" লেখালিখি করেছেন।এখন কর্মরত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রাণী সম্পদ উন্নয়নে

রয়্যাল স্ট্যাগ, রামায়ণ,আর হাম্বা

তারপর রয়্যাল স্ট্যাগ থুরি মায়াবী হরিণের পিছনে বৃথা অন্বেষণে গিয়ে রাঘব ফিরলেন নিজের কুটিরে, কিন্তু ততক্ষনে দুষ্ট লোক ভ্যানিশ। সীতাদেবীকে নিয়ে মার কাট, রথ উড়ে গেছে কলোম্বোর দিকে, জটায়ুর শেষ চেষ্টাও জলে গেল, পড়ে রইল ডানা। এদিকে যন্ত্রণা কাতর রাম অনুজের কাছে বৌ হারিয়ে কেঁদে কেটে একসা।”কী করিব কোথা যাব অনুজ লক্ষন কোথা গেলে সীতা পাব করো নিরুপন” অমনি হ্যালো ব্রাদার বিহ্বলতা কাটিয়ে মাসল নাচিয়ে প্রবোধ দিল। ব্যস রাম চললেন সীতার খোঁজে, পথে পেলেন এক গোয়ালাকে । সে বেচারা দুধ দোয়াচ্ছিল তো তাঁকে রাম শুধালেন সে সীতাকে দেখেছে কিনা, সে তো এই অরণ্যচারী রামকে চিনতে পারেনি ফলে পাত্তাও দিল না । এদিকে ক্রোধে অগ্নিশর্মা হয়ে রাম বললেন “শোন তবে কলিতে তোকে আমার শরন নিতে হবে আর গরুর সেবা করে তোর দিন যাবে, আবার খেতে হবে সেই গরুর লাথ,তোকে ধরা ধামে ডাকবে ভক্ত বলে। বহু প্রার্থনাতেও অভিশাপ উইথড্র করা গেল না। এরপর তাঁর চোখে পড়ল এক কৃষক, তাকেও একই প্রশ্ন, এবং সেও না চিনে রামকে অবজ্ঞা করল। রামতো রেগেমেগে দেগে দিলেন ” রে পামর এত অহংকার শোন তবে, কলিতে তুই ফসল ফলাবি অথচ সে ফসল কখনোই পুরোটা ঘরে নিয়ে যেতে পারবি না। লাল পতাকা 🚩 হাতে নিয়ে তোকে ন্যায্য দামের জন্য মিছিলে হাঁটতে হবে। অনেক দূরে তিনি দেখলেন এক মনে এক পণ্ডিত, বুদ্ধিজীবীর মতো, একে তাঁর চেনা মনে হল, একবার রামরাজ্যে রথের স্ক্রুর দাম বেড়ে যাওয়ায় এ বিরোধিতা করেছিল, মানুষটির ডান হাত নেই। রাম ওসব কথা ধরে না-রেখে কাতর চিত্তে শুধালেন সীতার কথা। পণ্ডিত অবজ্ঞার সাথে বাম হাত নেড়ে রামকে তফাত যেতে বলে । ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে রাম বলে ওঠেন- ওরে পাপিষ্ঠ কলিতে লোকে তোকে বাম বলে ডাকবে, বাম হাত দিয়ে বিষ্ঠা মুছবে, আর বাম থেকে কমতে কমতে একদিন তুই বামন হয়ে যাবি। তবু বামন হয়ে তোর  চাঁদ ছোঁবার চেষ্টা জারি থাকবে। একাকী রাম যেতে যেতে দেখলেন বনের শেষ প্রান্তে এক শুঁড়ি বসেছে পেল্লাই  ডাবা নিয়ে, সে আউটকাস্ট , রামের তার প্রতি অসূয়াও আছে,  তো রাম তাকেও শুধালেন। শুঁড়ি তখন যা দেখেছে বলল। রামের মন প্রীত হল, তিনি তখন সাহায্যে বললেন – কলিতে তুই ঘ্যামে ব্যবসা করবি। রণে বনে জলে জঙ্গলে যেখানেই তুই ব্যবসা করবি, লোক তোর কাছে ছুটে আসবে। Rum এর গুণকীর্তন তোর চেয়ে বেশী কেউ করতে পারবে না। এই বলে এগিয়ে গেলেন বন যেখানে পাতলা সেই দিকে।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।