সাপ্তাহিক ধারাবাহিকা -তে সৌরভ বর্ধন (পর্ব – ১২)
কবিতায় আমি কলার তুলতে চাই (পর্ব – ১২)
মুঠোতে পাখি ধরার সুযোগ যে পেয়েছে সে আর স্তন ছুঁতে চাইবে না। এক টুকরো রোদ্দুর পড়লে যে জল রুমালের থেকে দূরে সরে যায়, তাকে জয়ের গন্ধ দিলে আর ফিরে আসবে না। অ্যামেজিং ফ্যাক্টস্ বলতে যা বোঝায় তা ডিমের থেকে শুরু করা উচিত, তারপর স্তন ও পাখি। জানলার আঁচিল খুলে যে শুঁয়োপোকা ওড়ার স্বপ্ন দ্যাখে, স্বপ্ন দ্যাখে আমার মুঠোতে তার প্রচলিত স্তন খুব মানাবে, তাদেরকে বলে রাখি – কবিতাকে বা কবিতার বইকে আমি নিজের সন্তান মনে করি না, কখনও করিনি। প্রিয় বই যাদেরকে উপহার দিয়ে ভুল করেছি, জানি তাদের সাথে কখনও কথা বন্ধ হবে না। আমরা উদ্ভিদ ও আগুনের মতো দীপ্যমান থাকি। এই শুভচিন্তামূলক বাক্যগুলো আলমারির খুউব প্রিয়জন, তাই ন্যাপথলিন দিয়ে মুখ বন্ধ রাখে; আমি চাইলেও টুঁ শব্দটি করতে পারি না। শুনতে চাইলেও আমি আর বলতে পারি না, তখন বুকের শব্দ গুনতে বললেও ভুল করি, কারণ শুধু মাংস নয়, বুকের মধ্যে ব্যক্তিগত ঘরবাড়ি, আদালত আর বুক শেল্ফ। অথচ চৌকির নীচে সন্ধ্যা নামলে কেউ খেয়াল রাখে না, পরম প্রত্যয়ে ধুয়ে যায় আলো আর সন্ধ্যাতারা। অনেক কাছে গিয়েও কোনো প্রকৃত সারসকে আমি উড়ে যেতে দেখি না, অথচ বসন্তের কোকিল দেখেছি নির্দ্বিধায় উড়ে গ্যাছে গ্রীষ্মের চৌচির দিয়ে দলবদ্ধ কুহুচারণসমেত। লতাপাতা গাছের ছায়ায় বেজে বেজে হারিয়ে গেছে ঘুম ; তবু কোনো উজ্জ্বল, তবু কোনো সশ্রম আলোর কাছে হাঁটু গেড়ে শান্ত হয় উদ্দাম নাভি, ঘাসবন, অস্থির ফুল। যদিও কান উল্টে গেছে, লালার রং হয়ে গেছে লাল, পেটের হাপর আর উঠছে না, সুস্থির ঘৃণার মতো শুয়ে রাস্তা পেরচ্ছে সদ্ভাবসেতু এক মিত্রদ্রোহী রাজার অনুচর। এই ঘনঘোর রোদে প্রাচীন পিচের ওপর পাঁচপা মেলে নির্মম আতিথেয়তায় নবীন ধুলোর ওপর একলা তরল কীসব হাতড়ায়। দ্যাখা যায় পুরুষ লোমের মৃত্যু তলানিতে ঠেকে আছে। ঝাঁকে ঝাঁকে স্নায়ুজাল ডেকে ওঠে মাথার ভেতর, চুল, চুল উড়ে যায় কালের গহ্বর থেকে, নদীর কুহর থেকে, জিলেটিন মাখা ঠান্ডা রক্তের সংবাদ ভেসে ওঠে, ভুস!…
কোনো এক নাতিশীতোষ্ণ নারীর দুটো মুগ্ধ হাতে এই ছবিটা তুলে দেবো আমি, সশ্রম ডানার গান আর গাইতে দেবো না তাকে। আমি জানি, আমাদের তিনভাগ মাছ আর বাকি একভাগে যত গাছ ও পাখি হবার প্রচেষ্টা। এজন্যই পুকুরকে আমরা সবুজ দেখি, নদীকে ভাবি নীল। এই সত্য কথনে যারা সম্মতি জানায়, জিভ চাপড়ে বলে ঠিক ঠিক ঠিক, সেই মূর্ত মুহূর্তটি আমরা কেউই দেখি না, দেখতে পাওয়াও যায় না বোধহয়। যদিও দ্যাখবার বিষয় আরও আছে, এই যে আমার বাঘনখ, এই শজারু রঙের দামামা, ইস্তেহারিক প্যাগোডা ভেঙে জেগে ওঠা কালভার্ট, পানীয় জলের জন্য হাহাকার করা প্রেমিক, অবিকল জলীয়বাষ্পের মতো খেতে প্রেমিকার দীর্ঘশ্বাস : এমন কত কত দৃশ্য, দ্রোণফুল ভেবে আমি এদের চুষে খাই। এসব দৃশ্যের প্রতি কামুক আমি। যেকোন হর্ণি দৃশ্যের সাথে এমন হার্ডকোর সঙ্গম আমাকে তৃপ্তি দ্যায়। আমি আকাশ হাতে হেঁটে যাই ধুলোগ্রামে…