হিন্দুস্থানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বিপুল ভান্ডারের পরমতম শ্রী হয়ে রয়েছে রাগ “শ্রী”।
উত্তর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে বিপুল ভাবে ব্যাবহৃত এই রাগের প্রধানতম আকর্ষণ এর সরলতার মধ্যে লুকিয়ে থাকা এক গাম্ভীর্য ।
এই রাগ “শ্রী” পরিবেশনের সময় সন্ধ্যার প্রথম পর্ব অর্থাৎ সূর্য অস্ত যাওয়ার ঠিক পরের মুহূর্ত ।
রাগ শ্রী এর আরোহে ‘গা’ এবং ‘ধা’ বর্জিত এবং অবরোহে সাতটি কটি সুরকেই স্পর্শ করে।
খুব সহজ অথচ অত্যন্ত মাধুর্য পূর্ণ । ‘ শ্রী’ রাগটি কোন ঋতুর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এমনটি জিজ্ঞাসা করলে বলতেই হয় এটি শীত ঋতুর রাগ।
রাগটির ঠাট পূরবী এবং এরফলেই এই রাগের চারপাশে অদ্ভুত এক সুষমা মিশ্রিত গাম্ভীর্যতা ফুটে উঠেছে ।
উত্তর ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে এই রাগ কে প্রধানত একটি প্রার্থনার রাগ বলা হয়েছে । এরসাথে spirituality -র এক অতিলৌকিক মিশ্রণ ঘটেছে ।
প্রধানত এই রাগটির সাথে মহাদেব শিব কে মিলিয়ে দেওয়া হলেও, এবং শিব বন্দনার বন্দিশ লেখা হলেও এই রাগ শিখ্ ধর্মে দীক্ষিত মানুষদের প্রার্থনা সঙ্গীত এর ক্ষেত্রেও ব্যবহার হয়ে থাকে ।
গুরু নানক, গুরু অমর দাস, গুরু রাম দাস বিভিন্ন ধর্মগুরুরা এই রাগে রচনা করেছেন প্রার্থনা সঙ্গীত । এবং এই ধর্মগুরুদের জন্যও এই রাগে রচিত হয়েছে, বলা যায় হয়ে চলেছে বহু সাধনা সঙ্গীত ।
রবীন্দ্রনাথ বহু গান রচনা করেছেন বিভিন্ন রাগ কে ভিত্তি করে । রাগ ‘শ্রী’ ও কোনোভাবেই বাদ পড়েনি।
এই রাগ এর ব্যবহার তাঁর সুরবিতানে অন্যতম শোভা হয়ে রয়েছে ।