• Uncategorized
  • 0

গদ্যে আলোক মণ্ডল

কবিতা মগ্ন প্রাণ।অবসরপ্রাপ্ত বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক । দশাধিক কাব্যগ্রন্থের স্রষ্টা।"কবিকর্ণিকা" -কবিতাপত্রের সম্পাদক। কবিতা

কথাআঙুলকথা

আঙুলের টোকাগুলি দরজায় আটকে দিল ভোরবেলা। ঘুম ছিল  দু’চোখে তখনও।
চারভাঁজে লুকোনো আড়মোড়া ভেঙে চুরচুর, কোয়ান্টম বলবিদ্যায় তরতাজা শাব্দিক পরিধি।
শব্দধ্বনি ঢেউের মতো, তর্জনি তুলে দিল মধ্যমাকে। মধ্যমা অনামিকার কোলে কোল ঠেলে দিল টেনিসকোর্টের বল। ফোর্স বলো, মহাবল বলো,  কোন কিছু  আছে কি কনিষ্ঠার শীর্ষবিন্দুতে? সে তো কুসমছোঁয়ায় ভালোবাসা তুলে দেয়, তুলে দেয় যেমন বয়োজৈষ্ঠ্যা সীমন্তিনীর বিভাজিত শম্পাবনে,রাঙারোদ। এসো মহামহিম, নোখ রোদের গায়ে এঁকে দাও মেঘবলয়। ঝরে ঝরুক কান্না অথবা মায়াজল।লুকোনো আঙুল দু’চোখে চাঁদমারি দিয়ে বলো,বাতাস ডাকছে তোমায়, ঐ প্রান্তরের হাতছানি দেখা যায় দিগন্তরেখায় ! ধ্রুপদী আগল ঠেলে এসো ছোটছোট হাসি, ঘেটুফুল হয়ে ফুটুক ভাদ্রের শিমূলবনে, যেখানে বুড়োবট এখনও ধরে আছে স্নেহমেদুর মাটি। আঙুলের নীরবতা এক ফুয়ে উড়ে যাক, নীরব প্রশান্ত পুকুরে,যেখানে পাতিহাঁস চৈচৈ গুগলির খোঁজে। নোখ কি জানে সেই সব হলুদঠোঁট অথবা সারনাথ প্রশস্তির দেউলরেখা? অন্তর্বস্তু মিহির উত্তাপ? কি কথা ছড়িয়েছিল  ঘামরক্ত প্রাকমানবিক সেই ভোরবেলা,শিশির লেখায় ! আঙুল ও নোখের মধ্যে যে ছায়াটুকু পড়ে আছে সেখানেই গাথা আছে চিরায়ত অভিজ্ঞানমালা! ভাবো,ভাবো নোখ,ভাবতে থাকো, আজন্মলালিত নাভিমূলে জমে থাকা বরফ ততক্ষণে গলে গলে যাক!যে আঙুল নদীরবুকে নৌকোর মতো বয়ে চলে তোমাকে কুড়িটি প্রতিজ্ঞা নিয়ে আজীবনকাল, তার কাছে নতজানু, শিখে নাও, চাষীর বুক কী ভাবে অপেক্ষায় থাকে ধানগর্ভে দুধ আসার। দরোজা সে সব বোঝে কি বোঝে না জানি না,শুধু দু’অধর লগ্ন করে থাকে মিলনসম্ভোগে! জড়িয়ে থাকে  আপতিক চাওয়া-পাওয়ার হিসেবী চতুর্ভুজে।
তালু থেকে গড়িয়ে আসা স্থবিরতা পাথরের মতো শুধু মেখে নেয় দশ দশটি আঙুল।
তারপর তো সবই ইতিহাস, তিন আঙুলের ক্রিয়াপদ জানি তুলে রাখবে সেই সব স্বরলিপি সফেদপাতায়,প্রতিদিন যেমন ভোর লেখে রোদকথা আকাশের গায়,কিংবা বিকেল!
প্রজন্মের জিনকোড জানি তুলে রাখবে সে সব মহাফেজখানায়।

ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।