কবিতায় শামসুল হক আজাদ

হৃদপিন্ডে ঝড়-ঝাপটা

নখ উপড়িয়ে নরুণ বানিয়ে রেখেছেন মহামহিম।

প্রতিটি পায়ের পাতায় গেঁথে আছে দৃষ্টি-ফলক।
কে কোথায় পা ফেলবে সেটাই দ‍্যখার।
কোথাও দেশ ভেঙে পড়ছে মাথার উপর,
ঘনঘোর রক্তবৃষ্টি,
মানুষ হেঁটে যাচ্ছে বজ্রাঘাতের পুটুলি মাথায় নিয়ে।
আমাদের চোখে ক‍্যটারাক্ট
স্পষ্ট সবকিছু দেখতে নেই।
পায়ের নিচে সিক্ত মাটি পা জড়িয়ে কাঁদছে।
সামনের হেঁটে যাওয়া এক ফুলকি জীবনের অনুসন্ধান নিভে গেছে।
কে যেন কোথায় কোনো কবরের আয়তন নিয়ে খুব চিন্তান্বিত।

পোষমানা পাখির গলায় ভালবাসার ছুরি।
মাংস সিদ্ধ হচ্ছে,
বেহিসেবি আগুন
মাংস পোড়া কটু গন্ধে বাতাসের বমি পাচ্ছে।
আমার চোখের ঘর ছাদহীন।
আকাশ থেকে ঝরে পড়ছে পরিবার পরিজনহীন
শিশুর কান্না,বৃদ্ধ বৃদ্ধার কাতর সংলাপ।
দরজার কপাট ধরে দাঁড়িয়ে আছে ধর্ষিত মেয়ে।
আমি কোন্ দিকে যাবো?
আমার কোনো পা নেই অথবা
পা রাখার অধিকার নেই।এখন,
পাঁজর থেকে ছিটকে বেরিয়ে গেছে হৃদপিণ্ড
লাফালাফি খেলছে কাদামাটি আর রক্ত
গলা কাটা মুরগির মতো পাখা ঝাপটাচ্ছে
মানুষের অস্তিত্ব।
এসবের নিচে আমার চোখ উপড়িয়ে রেখেছি
অশ্রু-ভেজা চিতার কাঠে,
শীতল আমন্ত্রণলিপি নিয়ে
কবরের অন্ধকার থেকে
বরফের ভাস্কর্যহাত আমার দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে ওরা,
এ মৃত্যুর ডাক আমি ফিরিয়ে দিতে চাই
কেউ কী জেগে আছো?
ঘড়িতে এখন এগারোটা উনষাট।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।