এখানে এমনি করেই রাত্রি নামে। এক এক তারা জমায়েত হয় অন্ধকারে। অপেক্ষা করে আরেকটির, কোরাসে ফিসফিস করে গাইবে বলে। একটু আগেই আকাশের শেষপ্রান্তে আলোটুকু ঝুলছিল। অন্ধকার তার আঁচলের প্রান্তটুকু দিয়ে সযত্নে মুছে দিল মুখ। অমনি ঝপাং করে রাত্রি নেমে এলো দ্রুত। তার নূপুর, তার মানটিকলি সবসুদ্ধু কালো। দু:খের বর্ণমালাগুলি এক এক করে ঝরে পড়ছে কবিতার খাতায় এক-দুই-তিন-চার, বুকের ভেতর থেকে উঠে আসছে অস্থিরতার বুদবুদ, তখনি পাশ থেকে কেউ বলে উঠলো ‘ভিক্ষাং দেহি’। তারপরেই নামলো বৃষ্টি। তুমুল বর্ষণে খাট-বিছানা একাকার। রাত্রি দেখে আর হাসে। তার অদৃশ্য ঈশারায় ঘরময় ইতিহাসের কর্তৃত্বে বেদম অহংকার। গাছ-আকাশ-মাটি-গন্ধ-বৃষ্টি সব নিস্তব্ধ। চুপচাপ রাত্রিকে সঙ্গত করে। একমাত্র সু-কবি নিরন্তর বর্ণমালা সাজায়। তার স্পর্ধিত নাক, চিবুক রাত্রির কাছে অবাধ্য। সে সাজায় এক এক অক্ষর। অক্ষরগুলি অন্ধকারেও জ্বলে উঠে রাত্রিকে পুড়িয়ে দেয়। বহুক্ষণ পর রাত্রি শুদ্ধ হয়।