রামের সাথে খেলবে বলে রহিম আসে গুটি গুটি
নাক দিয়ে তার সর্দি ঝরে মুক্তো সাদা দাঁতের পাটি
রামের আদুল শরীরখানা হাফপ্যান্টটা পড়ছে খসে
ডাকছে রহিম খেলবে বলে কোমর-দড়ি বাঁধলে কষে।
ছুটল দুজন নদীর পাড়ে আলের ধারে চাষের জমি
রহিমের বাপ চষছে মাটি রামের বাপে জাত ঘরামি
ওদের কাছে একটা আকাশ পায়ের নীচে মখমলি ঘাস
এক মাটিতে জন্ম ওদের শ্বাস নেবারও একই বাতাস
ওরা কি আর বিভেদ জানে জানে কি জাতপাতের মানে
শৈশব ওদের অভাব ঠাসা তবুও জুড়ে মনের টানে
পূর্বপুরুষ কোথায় ছিল কি হবে তার খবর দিয়ে
পেটের ভেতর খিদের আগুন চোখের জলে দেয় নিভিয়ে
হঠাৎ কারা ছুটটে আসে চিনতে ওদের পারল না কেউ
শস্যক্ষেতে পড়ল ঝরে আব্বাজানের রক্তের ঢেউ
রহিমের বাপ একা তো নয় তারাও ছিল দলেবলে
চেনা মানুষ শত্তুর হয় শিরায় যদি আগুন জ্বলে
লাগলে আগুন নেভাবে কে ঘরগুলো তো পাশাপাশি
কার যে ভালো হয় কে জানে হয় তো সবার সর্বনাশই
রাম আর রহিম ছুটছে শুধু ছাড়বে না কেউ কারো হাতই
আকাশ ওদের বাপজান আর মা যে ওদের গাঁয়ের মাটি ।