• Uncategorized
  • 0

অণুগল্প ১ বৈশাখের বিশেষ সংখ্যায় সৌরাংশু সিংহ

চকোলেট

রণিত ছেলেবেলায় চকোলেট খেতে পেত না! ওর বাবার বোধহয় চকোলেট বা ওই সব জাতীয় বস্তুর উপর কোন কারণযুক্ত আক্রোশ থেকে থাকবে। কিন্তু সেটা রণিত জানে না। 
রণিতের এক বন্ধু ছিল দেবু! স্কুলে সে একদিন রণিতকে একটা চকোলেট দিয়েছিল। আস্ত একটা ডেয়ারী মিল্ক। সেটা স্কুলের মাঠের জালের ধারে বসে সবে কামড় বসিয়েছে কি বসায় নি, ওর ক্লাসেরই এক দুষ্টু ছেলে পিছন থেকে ধাক্কা দেয় আর হাত থেকে চকোলেটটা পড়ে যায়। ধুলোমাখা চকোলেটটা  থেকে একটুও বাঁচাতে পারে নি রণিত। ঠোঁটের পাসে লেগে থাকা চকোলেটের স্বাদটাই সে তারিয়ে তারিয়ে নেবার চেষ্টা করছিল। চোখ ফেটে জল আসছিল বটে। কিন্তু কাঁদতে পারে নি। কেন ছেলেটা ফেলে দিয়েছিল রণিত জানে না। 
একটু বড় হয়ে যখন হাত খরচের টাকায় চকোলেট খাবার কথা চিন্তা হল, তখনই ঈশিতার সঙ্গে প্রেম হল। ঈশিতা চকোলেট খেতে খুব ভালবাসত। কিন্তু কোন অজ্ঞাত কারণে রণিতকে দিত না। রণিতের সব হাত খরচ হয়ে যেত ঈশিতার চকোলেট কিনতে। কিন্তু একদিন যখন রণিত জোর করে একটুকরো খেতে চাইল ঈশিতা সব চকোলেটটাই দিয়ে চলে গেল। রণিত খেতে পারল না। কিন্তু ঈশিতা কেন চলে গেছিল রণিত জানে না।
তারপর হঠাৎ বাবা মারা গেলে চকোলেট খাবার কথাই মনে পড়ে নি রণিতের, কেন সেটা রণিত জানে না।
কিন্তু আজ যখন ওর তিন বছরের ছেলে ওর মুখে একটা বিটার চকোলেট জোর করে ঢুকিয়ে দিয়ে ঐশ্বরিক হাসিতে ঘর আলো করে দিল তখন যে কেন ও ঝাপসা দেখতে শুরু করল সেটাও রণিত জানে না। জানতেও চায় না।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।