• Uncategorized
  • 0

অণুগল্প ১ বৈশাখের বিশেষ সংখ্যায় জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়

রুমাল 

হেমন্ত বিকেল তবু রুমালে মুখ মোছে রাজু।নীল বলে,আরে রুমালটা তো দারুণ! আর আমি যদি ভুল না করি,এটা তোকে যে দিয়েছে তার নাম মিত্রা।শুনে রাজু জাস্ট হাঁ। হতভম্ব মুখে বলে,ওঃ!জানি তুই শার্লক হোমস কিন্তু তুই…….. তাকে থামিয়ে দিয়ে
বলে নীল,তুই এখন বাইক বাহনে বেশ দূর থেকে ফিরেছিস,সেটা লালমাটির দেশ যেখানে একটা নদী না না নদ আছে।তার তীরে তুই হেঁটেছিলি,বসেওছিলি।আর থাকতে পারে না রাজু চেপে ধরে নীলের হাত বলে,এত কথা তুই জানলি কী করে?!
এবার আবেগে রাজু তোতলায়,তু-তুই যেমন শা-শার্লক হো-ওমস আ-আমিও ডা-ডাক্তার  ওয়াটসন।আমাকেও ঘোল খাওয়াচ্ছিস!বল কীভাবে বলছিস ?
নীল বলে,বন্ধু ওয়াটসন,আমি রহস্য ভেঙে দিলেই তুই বলবি,ওঃ! এই ব্যাপার এ-তো খুব সহজ।সেটি হচ্ছে না।
— কক্ষনো তা বলব না।আমি দিব্যি করছি।তুই বল।এই ম্যাজিক তুই ছাড়া কেউ পারবে না। এবার নীল হাসে আর উদারকণ্ঠে উত্তর দেয়,আরে ভাই এটা খুব সহজ একটা অনুমান। তুই ঘামছিলি অর্থাৎ অনেক দূর থেকে বাইকে ফিরছিস।পকেট থেকে নতুন নীল রুমাল বের করে মুখ মুছলি যার কোনায় ‘S’ লেখা।যেহেতু কেবল বান্ধবীরাই রুমাল দিয়ে থাকে আর সবচেয়ে বেশি বাঙালি নাম ‘S’ দিয়ে শুরু হলেও এখানে ‘S’ আদ্যক্ষরযুক্ত কোনো বান্ধবী তোর নেই।তাহলে কে হতে পারে?সে হোলো মিত্রা।
— মিত্রা নামটা কি ‘S’ দিয়ে শুরু নাকি? — তার গলায় উকিল হাসি।
— মিত্রার পুরো নাম সুমিত্রা,সে বাঁকুড়ার একটি গ্রামের মেয়ে যেখানে তোর দিদির বাড়ি, লালমাটির দেশ,পাশে বইছে দ্বারকেশ্বর নদ।
— কিন্তু……  রাজু কিছু বলতে যায়,থামিয়ে বলে নীল, আরও শোন,তোর জুতো ও বাইকের টায়ারে মোরাম আর বালি দেখ জ্বলজ্বল করছে।
— ওঃ!আমি কী…… বলতে গিয়েও থেমে যায় রাজু জোড় হাতে ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গি করে হাসে।তারপর ওয়াটসনের মতো বলে ওঠে, তোর দাদার শ্বশুরবাড়িও তো ওখানেই।অর্থাৎ মিত্রাকে তুই ভালোই চিনিস?
— তা চিনি।তোর পছন্দের তারিফ করি ভাই,সত্যিই ও খুব ভালো মেয়ে।নীলের কণ্ঠস্বর ম্লান। আনন্দে চিকচিক করে ওঠে ওয়াটসনের চোখ অথচ হোমসের উদাস মুখের অন্ধকার তার চোখে পড়ে না।
ফেসবুক দিয়ে আপনার মন্তব্য করুন
Spread the love

You may also like...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

কপি করার অনুমতি নেই।