গঙ্গার আঁশটে জলে নাক ডুবিয়ে সে বলে…গঙ্গা, তুমি কেন তোমার ছেলে ভীষ্মকে ত্যাগ করলে? বাবা কখন পাশে এসে দাঁড়ায়, খেয়ালই করেনা সে। সেই তো দূরে সুইম করছিল…
জলের ভেতর মুখ ডুবিয়ে কি দুষ্টুমি হচ্ছিল…হুম?
এ সময়টা বাবা মেয়ের সাঁতার কাটা এবং সাঁতার শেখার সময়।আর তখন-ই জলের ভেতর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মেয়ে যে কত কিছু করে! কখন সে মারমেড…রাজপুত্রের অপেক্ষা করে। না না, সে বরং প্রিন্স হয়ে পক্ষীরাজ ঘোড়া উড়িয়ে… জলের ওপর দিয়ে ভেসে বেড়াবে? যদিও সে একটা ফুটফুটে ছোট্ট মেয়ে। তবুও প্রিন্সেস হতে তার ভাল লাগেনা।ওরা যেন কেমন দুর্বল হয়। তাই সে রাজপুত্র! জলের রাজকুমারী নীল ঢেউয়ের মাথায় চড়ে তার জন্য হাত ভর্তি প্রবাল নিয়ে আসে তখন…
তোমার কিন্তু একটুও হাত-পা নড়েনি দিয়া!এমন করলে সাঁতার শিখবে কি করে?চল দেখাও আমায়…কেমন ভাসতে পারছো?
একটু বেশি জলে বাবা তাকে ছেড়ে দেয়। সে প্রাণপণে হাত-পা ছোড়ে। এবার সে বিদ্যাসাগর। মায়ের ডাকে বর্ষার ভরা নদী সাঁতরে পেরচ্ছে। …বাবা, এখ্নও তো বর্ষাকাল, তাই না?
হ্যাঁ তো… দেখছনা কেমন লাল জল? এই জলেই ইলিশ আসে। ভাল করে হাত-পা নাড়ো।
গঙ্গাদেবী কি এই জলের তলায় আছে?
হুম, আছে তো। যারা খায়না, দুষ্টু – তাদের তিনি ভালবাসেন না।
ভীষ্মও কি খেতনা আর দুষ্টু ছিল?
বাবার ভ্রু কুঁচকে ওঠে… হাসিও পেয়ে যায়। সারাদিন দাদুর কাছে গল্প শোনে আর সেই নিয়ে কল্পনার জগতে ভেসে বেড়ায়!
মেয়ে হাঁফাতে হাঁফাতে চেঁচিয়ে বলে…বাবা, ভীষ্মর জন্য আমার দুঃখ হয়! কাঁদলে তুমি রাগ কর…কিন্তু তবু আমার কান্না আসে।… ভীষ্মর জন্য, কর্ণের জন্য আর রাবণের জন্য! কেউ কি এদের ভালবাসবে না?